Connect with us

জাতীয়

আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে – সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

Published

on

‘জনগণ যদি বাংলাদেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে না চায় তাহলে নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে, আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে। ‘, বলেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা । গতকাল বুধবার বিকালে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে অবশ্যই সবসময় নির্বাচনে জয়ী হবো এটা আমরা আশা করি। এতো উন্নয়ন করার পরও দেশের জনগণ যদি ভোট না দেয়, ক্ষমতায় যদি আসতে না পারি- এটা জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে…তবে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন করবে কি না সেটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। একজনের দলীয় সিদ্ধান্ত তো আমরা চাপিয়ে দিতে পারি না। বলতে পারি না নির্বাচন করতেই হবে, না করলে জেলে ধরে নিয়ে যাব।

প্রধানমন্ত্রী এই সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্নের জবাব দেন।

সাম্প্রতিক সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রশ্নোত্তর পর্বে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচনের বিষয়টি ঘুরে ফিরেই উঠে আসে।আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বলছে তাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া) মুক্ত না হলে তারা নির্বাচন করবে না। তাদের নেত্রীকে তো আমি জেলে পাঠাইনি। রাজনৈতিক কারণে যদি আমি তাকে জেলে পাঠাতাম তাহলে ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যখন তারা পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছিল, গুলশানের নিজ অফিসে ৬৮ জন লোক নিয়ে অবস্থান করে হুকুম দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছিল, তখনই তো খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করতে পারতাম; কিন্তু রাজনৈতিকভাবে আমি তা করতে চাইনি। তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ হচ্ছে গণতন্ত্রের অংশ। কোন পার্টি নির্বাচন করবে, কোন পার্টি করবে না- এটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত।

আগামী নির্বাচন নিয়ে একাধিক প্রশ্নের জবাবে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে আমরা না আসলে দেশের উন্নয়নের যে ধারাবাহিকতা তা যে নষ্ট হয়ে যায়, সেটা তো আপনারা নিজেরাই প্রত্যক্ষ করেছেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আমরা যে উন্নয়ন করেছিলাম, সেটা নষ্ট করে দিয়েছিল। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তার সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুইটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আমরা বৃটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি।

কোটা পদ্ধতি বাতিল প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে কোটা পদ্ধতি প্রবর্তন করেছিলেন। এই কোটা পদ্ধতি থাকবে কি থাকবে না তা ছাত্রদের বিষয় নয়। এটা সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের বিষয়। হঠাত্ কোনো কথাবার্তা নেই, কোটা চাই না বলে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনেকেই ছিল তারা কারা? কিন্তু আমরা বসে থাকিনি, চেষ্টা করেছি তাদের বোঝাতে। কোটা পদ্ধতির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, কোটা পদ্ধতি নিয়ে যারা আন্দোলন করেছে, তারা তো কোটা চায় না। তাই তাদের দাবি মেনে নিয়েছি। আর কোটার দরকার নেই, বাতিল করে দিয়েছি। এখন আর আলোচনার কী আছে? তিনি বলেন, এখন জেলা কোটা না থাকলে আন্দোলনকারীদের কেউ পরে যদি চাকরি না পায়, তবে চাইলেও পাবে না। আন্দোলনে যারা ছিল তাদের ছবি সংরক্ষণ করা আছে। পরে যদি কান্নাকাটি করে তখন দেখা যাবে।

খালেদা জিয়ার কারাগারে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে আমি একটি অন্যায় কাজ করেছি। একজন নিরপরাধ মানুষ, ফাতেমা বেগম। খালেদা জিয়ার এখন মেইড সারভেন্ট লাগবে। আপনারাই বলেন, সাজাপ্রাপ্ত কোনো আসামিকে কবে, কে কোনো দেশে মেইড সারভেন্ট সাল্পাই দিয়েছে? তার (খালেদা জিয়া) সেই দাবিও আমরা মেনে নিয়ে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দয়াবশত হয়ে তার মেইড সারভেন্ট পর্যন্ত সঙ্গে দিয়ে দিয়েছে। এ সময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, মানবাধিকার সংস্থাগুলো এতো সোচ্চার, তবে তারা কেন সোচ্চার হননি যে, একজন নিরপরাধ মানুষ কেন খামোখা জেল খাটবে? তারপরও যদি একটা ভালো বেতন দিত? তাও না। কত বেতন দেয় সেটা জিজ্ঞেস করে দেখেন, আমি আর বলতে চাই না। তিনি বলেন, একটা নিরপরাধ মানুষকেও কিন্তু জেল খাটতে হচ্ছে খালেদা জিয়ার কারণে। যদিও আমাদের কোনো মানবাধিকার সংস্থা এটা নিয়ে একটা টু শব্দও করে না। বিনা বিচারে বিনা সাজায় বিনা কারণে কেন একজন মহিলা জেল খাটবেন, এটা আমাকে বলেন। তাও খাটছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার ওষুধ রাখার জন্য ফ্রিজ লাগবে। সেই ফ্রিজের ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। তারা নির্বাচন ঠেকাতে চেষ্টা করেছে। আর কে নির্বাচনে আসবে, কে আসবে না এটা সম্পূর্ণ সেই দলটির ওপর নির্ভর করে। আর নির্বাচনে জেতাটা আমি জনগণের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনার জন্য শুধু গাড়ি চালকদের দোষ না দিয়ে পথচারীদেরও সড়কের নিয়মগুলো মানার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পথচারীরা যেন নিয়ম জানে ও মানে সেজন্য জনসচেতনতা তৈরিতে গণমাধ্যমের সহায়তা চাওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনার পরপরই গাড়ি চালককে না পিটিয়ে আইনের হাতে সোপর্দ করারও অনুরোধ জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ সময় মঞ্চে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচএম মাহমুদ আলী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে সরকারের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিদেশে নালিশ করে লাভ হবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিক নেতা সেজে যারা বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নালিশ করেন তাদের উদ্দেশে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘কিছু ব্যক্তি নেতা সেজে বসে আছেন, শ্রমিকদের ওপর খবরদারি করেন। একটি টিকিটের জন্য কোনো কিছু হলেই তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করেন। দেশের বদনামটা তুলে ধরেন। আর এই বদনাম করতে গিয়ে হয়তো একখানা টিকিট বিনা পয়সায় পান। বিদেশে থাকার একটু সুযোগ পান। একটু যেতে পারেন। সামান্য সুযোগের জন্য দেশের বদনামটা বাইরে গিয়ে করাটা নিজের দেশের জন্য যে কত ক্ষতিকর, সেটা তাদের অনেকেই বুঝতে পারেন না। এটাই হচ্ছে আমাদের সব থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয়। তবে তাদের বলছি, আমি যতদিন ক্ষমতায় আছি, বাইরে নালিশ করে বেশি সুবিধা হবে না। তাই কারো উস্কানিতে কারখানায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন না।’

মহান মে দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শ্রমিক নেতাদের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এই দেশটা আমাদের। আমাদেরই দেশকে গড়ে তুলতে হবে। দেশটি যতই উন্নয়ন হবে, ততই আমাদের কল্যাণ হবে। এই কথাটি বুঝতে হবে। দেশপ্রেম থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশকে গড়ে তুলতে চাই। দেশের মেহনতি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা আমাদের সরকারের লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধু দেশের সব শিল্পকারখানা জাতীয়করণ করেছিলেন।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার রাজনীতি হলো, এদেশের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের জন্য।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিহত শ্রমিকদের পরিবার, আহত শ্রমিকদের মেধাবী সন্তানদের মাঝে চেক বিতরণ করেন। শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানও বক্তব্য রাখেন।

Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

হামলা ও লুটপাট, হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তার দাবি

Published

on

By

নোয়াখালীতে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, গাইবান্ধা, শেরপুর, জয়পুরহাট, পঞ্চগড়, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ ৮টি কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শনিবার (১০ আগস্ট ২০২৪) আন্দোলনটির মুখপাত্র মো. মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার পোড়করা গ্রামে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের ৩০ একর জমি থেকে সংগ্রহকৃত আটটি খড়ের গাদা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। এর আগে গত ৫ আগস্ট আইনশৃঙ্খলার অবনতির সুযোগে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাটের ঘটনা উল্লেখ করে সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন প্রকল্পে হামলার পাঁয়তারা হচ্ছে জানিয়ে এর বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে মশিউর রহমান বলেন, আন্দোলন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ধর্মের অপব্যবহারকারী উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে। ফলে আমাদের কর্মীদেরকে অবর্ণনীয় নির্যাতন নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। উগ্রবাদী গোষ্ঠী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতার পিতৃনিবাস করটিয়া জমিদার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, পাবনায় হমালা চালিয়ে নৃশংসভাবে সদস্যদের হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের উপর সহস্রাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। আইন হাতে তুলে না নিয়ে আমরা আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। কিন্তু হামলাকারীরা ধর্মের মুখোশ পরে পার পেয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে হেযবুত তওহীদের বর্তমান এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে অবস্থিত তাঁর নিজ বাড়ির আঙিনায় একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থানীয় উগ্রগোষ্ঠী ‘মসজিদ নয়- গির্জা বানাচ্ছে’ গুজব তুলে দিয়ে তারা ধর্মান্ধ মানুষকে উস্কে দিয়ে সেদিন তাঁর বাড়িঘরসহ অন্যান্য সদস্যদের বাড়িঘরও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। মসজিটি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এরপর মসজিদের নির্মাণকাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে আগত দুই তরুণ সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোক জবাই করে হত্যা করে। তাদের হাত পায়ের রগ কাটে, চোখ তুলে ফেলে এবং দেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের হামলার পর হাল ছেড়ে না দিয়ে হেযবুত তওহীদের এমাম তাঁর গ্রামের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য অন্তত ৫০টির মতো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি গরুর খামার, মাছের ঘের, একটি বিদ্যালয়, চার তলা মসজিদ কমপ্লেক্স, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ইত্যাদি। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিক কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় এক হাজারের মতো সদস্য তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ওই গ্রামেই বসবাস করছেন। বর্তমানের অস্থিতিশীল পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে আবারো উগ্রবাদীরা ২০১৬ সালের মত একটি তাণ্ডব চালিয়ে গণহত্যার ষড়যন্ত্র করছে। হেযবুত তওহীদের এমামের গ্রাম চাষীরহাট থেকে এক বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বিশেষ করে লাকসাম উপজেলার অন্তর্গত বিপুলাসার বাজারের নিকটে আমাদের গার্মেন্টস কারখানা, খামার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত লোকজন বাসা ভাড়া করে থাকেন। অনেকে সেখানে মুদির দোকান করেন, রিকশা গ্যারেজ ইত্যাদিতে কাজ করেন। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের দিন দুর্বৃত্তরা তাদের প্রত্যেকটি বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে, গ্যারেজ লুট করেছে, দোকান লুট করেছে, বাড়িতে আগুন দিয়েছে। পঞ্চাশটি পরিবারের প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ তারা লুট করে পরিবারগুলোকে সর্বস্বান্ত করেছে।

এদিন হেযবুত তওহীদের শেরপুর, জয়পুরহাট, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ মোট ৮টি কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতির সাথে কোন সম্পৃক্ততা অতীতেও ছিল না, এখনও নেই। আমাদের আইন ভঙ্গ করার কোন রেকর্ড নেই। আমরা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কাজ করি তাই এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি মাননীয় এমামের বাড়িসহ হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালাতে ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলো লুণ্ঠন করার জন্য উসকানি দিয়ে যাচ্ছে। অনলাইনে তারা শত শত পোস্ট করেছে এ জাতীয় হুমকি দিয়ে। আমরা সেখানে ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে দিনানিপাত করছি।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট সোনাইমুড়ি থানায় হামলা করা হয়েছে এবং সেখানে চারজন পুলিশসহ সাত জন মানুষ নিহত হয়েছে। সেদিন বাজারে বাজারে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। সেদিন এবং তার পরেরদিন এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি বারবার চাষীরহাট বাজারে এসে হেযবুত তওহীদকে এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিয়ে গেছে। তবে এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। কিন্তু অনলাইনে ও অফলাইনে ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে। আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের এমামের বাসগৃহকে কেন্দ্র করে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। সোনাইমুড়ীসহ সারাদেশে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

এমতাবস্থায় সরকারের নিকট হেযবুত তওহীদের পক্ষ থেকে ৪টি দাবি জানান মশিউর রহমান। দাবিগুলো হলো- ১. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হোক। ২. স্থানীয় বাজারে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হোক। ৩. বিপুলাসারে ৫ তারিখে সংঘটিত লুটপাটে আমাদের অর্ধশত পরিবারের সদস্যরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বিনা কারণে যারা তাদের এই ক্ষতিসাধন করল তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। ৪. এখনও প্রতিমুহূর্তে গুজব সৃষ্টি করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে সে বিষয়ে সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উল্লেখ্য অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করে যাবতীয় উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, নারী নির্যাতন ইত্যাদির বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত আদর্শ প্রচারের কাজ করছে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত পন্নী পরিবারের সন্তান এমামমুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী ১৯৯৫ সালে হেযবুত তওহীদ প্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মীয় সংস্কারপন্থী আন্দোলন হেযবুত তওহীদ একাগ্রভাবে ইসলামের সুমহান আদর্শকে জনগণের মধ্যে প্রচারের কাজ করে আসছে। আদর্শ প্রচারের লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্তত দুই লক্ষাধিক জনসভা, সেমিনার, র‌্যালি, মানববন্ধন করে আন্দোলনটি।

Continue Reading

Highlights

রাজনীতি করতে না চাওয়া সাকিব কিনলেন আ.লীগের মনোনয়ন!

Published

on

খেলা ডেস্ক: আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী ডামাডোল শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তিনটি আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নির্বাচনে অংশগ্রহণে তার আগ্রহের বিষয়টি অনেকটাই ওপেন সিক্রেট। যা মনোনয়ন ফরম নেওয়ার মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পেয়েছে। এরপরই একটি ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে সাকিবের। ২০১৩ সালে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘জীবনেও রাজনীতি করব না।’

গতকাল (শনিবার) সন্ধ্যায় এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের মনোনয়ন ফরম নেওয়ার খবর প্রকাশ হতেই সেই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই শেয়ার করছেন। কেউবা সে পোস্টের কমেন্টবক্সে সাকিবের সমালোচনায় মেতেছেন। এর আগে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সাকিবের পক্ষে ফরমগুলো সংগ্রহ করা হয়। আসনগুলো হলো— ঢাকা-১০, মাগুরা-১ ও ২।

মূলত মনোনয়ন ফরম নেওয়ার মাধ্যমে সরাসরি রাজনীতিতে অংশগ্রহণের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন সাকিব। যা তার আগের দেওয়া বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেই অনেকেই বিষয়টি নতুন করে সামনে নিয়ে আসছেন। ২০১৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০.১৪ মিনিটে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে সাকিব লিখেন, ‘আমি রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছি না এবং আমার জীবনে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কোনো ইচ্ছাও নেই।’

ওই সময় সাকিব বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের অনুরোধে একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এরপরই তার রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে আলোচনার ডালপালা মেলে। তখন নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে সাকিব ওই স্ট্যাটাস দেন। তবে এক দশকের বেশি সময় পর নিজের অবস্থান বদলাতে দেখা গেলো তাকে।

ফেসবুক পোস্টে সাকিব আরও লিখেন, ‘আমাকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে দিন। আমি রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছি না এবং আমার জীবনে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কোনো ইচ্ছাও নেই। আমাকে বোর্ড সভাপতি (পাপন) অনুরোধ করায় আমি ক্রিকেট দলের পক্ষ থেকে ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম এবং সেখানে রাজনীতি নিয়ে একটি শব্দও বলিনি। তাই সবাইকে বলব যে– আমাদের মিডিয়াকে বিশ্বাস করবেন না। আশা করি নিজের বিষয়টা পরিষ্কার করতে পেরেছি।’

এর আগে গত একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সাকিব নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন বলে গুঞ্জন শোনা যায়। ওই সময় সাকিব না পারলেও, নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হন আরেক সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। এরপর থেকে সাকিবও নির্বাচনে যাবেন বলে অনেকদিন ধরেই জোর শোরগোল চলছিল। এশিয়া কাপ চলাকালে অনেকটা হুট করে সাকিব দল রেখে দেশে চলে আসেন। ওই সময় নির্বাচনী কাজেই সাকিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন বলে আলোচনা রয়েছে!

Continue Reading

Highlights

উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের মানুষকে অভিশাপমুক্ত করেছি : প্রধানমন্ত্রী

Published

on

এক্সপ্রেস ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করেছি। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। সেইসঙ্গে মানুষের গড় আয়ুও বেড়েছে আমাদের সরকারের আমলে। আমরা উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের মানুষকে অভিশাপমুক্ত করেছি।

আজ রোববার (২৯ আগস্ট) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নেওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়গুলো আমি সম্মেলনে তুলে ধরেছি।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসার আমন্ত্রণে ২২ থেকে ২৪ আগস্ট জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সম্মেলনে শেষে গত রোববার তিনি দেশে ফিরেছেন।

Continue Reading