শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সাফ ফুটবলে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার মালদ্বীপের রাজধানী মালির ন্যাশনাল ফুটবল স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে বাংলাদেশের হয়ে জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাওয়া তপু বর্মন।
বাংলাদেশি সমর্থকের উপস্থিতিতে মালির স্টেডিয়ামটিই যেন এক খণ্ড বাংলাদেশে পরিণত হয়েছিল আজ। লাল সবুজের সমর্থনে এ সময় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে রাখে মালদ্বীপের স্টেডিয়াম। দর্শকদের ওই সমর্থন ব্যর্থ হতে দেয়নি জামাল ভুঁইয়ার দল। জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে তারা।
ম্যাচের ৯ম মিনিটেই গোলের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। বক্সের মাঝামাঝি থেকে তপু বর্মনের বাঁ পায়ের শটের বলটি বাঁ দিকে ড্রাইভ দিয়ে আটকে দেন শ্রীলঙ্কান গোলরক্ষক পেরেরা। ম্যাচের ২০ মিনিটে গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে শ্রীলঙ্কা। বক্সের বাইরে থেকে নিকোলাস হর্ষ ফার্নান্দোর ডান পায়ের শটের বল বারের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
বাংলাদেশ ফের গোলের সুযোগ হারায় ২৯ মিনিটে। বিপলু আহমেদের পাশ থেকে রাকিব হোসেনের ডান পায়ের শটের বলটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের মিনিটে ফের গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে লাল সবুজ শিবির। বিশ্বনাথ ঘোষের পাশ থেকে বল পেয়ে মোহাম্মদ জুয়েলের শট বারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। বিরিতর অতিরিক্ত সময়ে ইয়াসিন আরাফাতের ক্রসের বলে তপু বর্মন হেড নিলেও সেটি জাল স্পর্শ না করেই বারের উপর দিয়ে বাইরে চলে গেলে ফের সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। ফলে সফলতা ছাড়াই বিরতিতে যেতে হয় বাংলাদেশকে।
বিরতি থেকে ফিরেও আক্রমণ অব্যাহত রাখে বাংলাদেশ। এরই সুফল হিসেবে গোল খরা দূর হয় ৫৬তম মিনিটে। বাংলাদেশ দলের একটি আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে বক্সের মধ্যেই হ্যান্ডবল করেন লঙ্কান ডিফেন্ডার যোগেন্দ্র ডাকসন পুসলাস। ফলে পেনাল্টির নির্দেশ দেন কর্তব্যরত সিরিয়ান রেফারি ফেরাস তাওয়েল। স্পট কিক থেকে ডান পায়ের দারুণ শটে গোল করতে ভুল করেননি তপু বর্মন (১-০)।
৬১ মিনিটে বিপলু আহমেদের কাছ থেকে বল পেয়ে অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া বক্সের বাইরে জোড়ালো শট নিলে সেটি অল্পের জন্য গোলবারকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
৭৫ মিনিটে গোল পরিশোধের ভাল একটা সুযোগ পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। বক্সের বাইরে থেকে ডিলন ডি সিলভার ফ্রি কিকের বল অল্পের জন্য জালে জড়ায়নি। এই সময় গোল পরিশোধের জন্য মরিয়া লঙ্কান দল প্রাণপন চেষ্টা করেছিল সমতায় ফেরার। তবে ফিনিশারের অভাবে সফল হতে পারেনি দেশটি। শেষ ভাগে এসে বাংলাদেশও পরপর কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করেছে।
টুর্নামেন্টে পরের ম্যাচ শক্তিশালী ভারতের মোকাবিলা করবে লাল সবুজের দল। ৪ অক্টোবর সোমবার একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। এরপর ৭ অক্টোবর স্বাগতিক মালদ্বীপের মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। লীগ পর্বের শেষ ম্যাচে ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেপাল। লিগের শীর্ষ পয়েন্টধারী দুটি দল ফাইনালে খেলার সুযোগ পাবে। আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল ম্যাচ।
বাংলাদেশ দল:
শহিদুল আলম, আনিসুর রহমান, আশরাফুল ইসলাম রানা, রহমত মিয়া, বিশ্বনাথ ঘোষ, তপু বর্মন, রিয়াদুল হাসান, ইয়াসিন আরাফাত, রেজাউল করিম, সোহেল রানা, সাদ উদ্দিন, বিপলু আহমেদ, জামাল ভুঁইয়া, রাকিব হোসেন, সুমন রেজা, তারিক রায়হান কাজী, মাহবুবুর রহমান, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মতিন মিয়া, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ফাহাদ, জুয়েল রানা, টুটুল হোসেন বাদশাহ ও মোহাম্মদ হৃদয়।