Connect with us

Highlights

ইয়েতি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৬৯১ দুর্ঘটনা: বিধ্বস্ত হওয়ার আগে আর যা যা ঘটেছিল

Published

on

নেপালের পোখারায় বিধ্বস্ত ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমানটি অবতরণের আগ মুহূর্তে ল্যান্ডিং প্যাড পরিবর্তনের অনুমতি চেয়েছিল। অনুমতি দেয়া হলেও শেষমেশ আর অবতরণ করতে পারেনি বিমানটি। তবে শেষ মুহূর্তে ল্যান্ডিং প্যাড বদলের দরকার কেন হয়েছিল তা নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।

নেপালের স্থানীয় পত্রিকা ইকান্তিপুর তাদের এক প্রতিবেদনে বলছে যে, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির রানওয়ে-৩০এ অবতরণের কথা ছিল। একই পাইলট ও ক্রু সমেত বিমানটি একই রানওয়েতে ওই দিন সকালবেলাতেও একবার অবতরণ করেছিল। তবে, শেষ মুহূর্তে বিমানটি রানওয়ে-১২তে অবতরণের অনুমতি চায়।

রোববার ৭২ জন আরোহী নিয়ে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান পোখারায় বিধস্ত হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৬৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিমানটিতে আরোহী সবাই নিহত হয়েছে বলে দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

নেপালের সেনাবাহিনী জানায়, রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে জীবিত উদ্ধার করা হয়নি। রোববার সন্ধ্যার পর উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়। বিমান দুর্ঘটনার পর সোমবার জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

কাঠমাণ্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বলছে, সবশেষ বিমানটি নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পশ্চিম দিক থেকে অবতরণের মাত্র দুমিনিট আগে ট্রাফিক এয়ার কন্ট্রোলের সাথে যোগাযোগ করে। আর তার পরপরই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। স্থানীয় সময় বেলা ১০টা ৫৩ মিনিটে এটি বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল।

বিবিসি নেপালি তাদের প্রতিবেদনে বলছে, বিমানটির পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টন কামাল কে সি। যিনি রোববারই আরেকটি ফ্লাইট নিয়ে কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় গেছেন।

ইয়েতি এয়ারলাইন্স বলছে, সম্প্রতি চালু হওয়া পোখারা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে এর আগে পরীক্ষামূলক উড্ডয়নও করেছেন তিনি।

কর্মকর্তারা বলছেন যে, অবতরনের বিষয়ে বিমানবন্দর থেকে অনুমতিও পেয়েছিলেন পাইলট। তখনও পর্যন্ত কোন সমস্যা ছিল না।

বিমানটি স্রেফ পড়ে যায়-

অবতরণের জন্য ‘ক্লিয়ারেন্স’ বা অনুমতি পাওয়ার পর বিমানটি বিমানবন্দর থেকে দৃশ্যমানও হয়েছিল এবং ১০-২০ সেকেন্ডের মধ্যে সেটি রানওয়েতে পৌঁছানোর কথা ছিল।

বিমানবন্দরে থাকা একজন ট্রাফিক কন্ট্রোলার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসি নেপালি-কে বলেন, “মোড় নেয়ার সময় যখন ল্যান্ডিং গিয়ারটি খুলে, তখনই বিমানটি ‘স্থির’ হয়ে যায়।”

বিমানযাত্রায় ‘স্থির’ মানে হচ্ছে কোন বিমান তার উচ্চতা ধরে রাখতে পারে না। অর্থাৎ সেটি আর আকাশে ভেসে থাকতে পারে না।

তিনি বলেন, “কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে যতদূর দেখা যায় সে পর্যন্তই বিমানটি নিচে নেমে আসে।”

পোখারা বিমানবন্দরের মুখপাত্র বিষ্ণু অধিকারী বলেন, রোববার আবহাওয়া পরিষ্কার ছিল এবং ফ্লাইটগুলোও নিয়মিতই চলছিল।

তিনি বলেন, “নতুন বিমানবন্দরে ফ্লাইটে কোন সমস্যা ছিল না। সেগুলো নিয়মিতই ছিল। আজ আবহাওয়াও পরিষ্কার।”

পশ্চিম মোহাদা থেকে অবতরণের সময় দুর্ঘটনা-

গত পহেলা জানুয়ারি থেকে চালু হওয়া পোখারা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পূর্ব এবং পশ্চিম দিক থেকে বিমানগুলো অবতরণ করে থাকে।

পূর্ব দিক থেকে অবতরণের জন্য রানওয়ে থ্রি জিরো এবং পশ্চিম দিক থেকে অবতরণের ক্ষেত্রে রানওয়ে ওয়ান টু ব্যবহার করতে বিমানগুলোকে বলা হয়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে যে, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ভিএফআর বা ভিজ্যুয়াল ফ্লাইট রুলস প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবতরণ করতে যাাচ্ছিল। ভিএফআর হচ্ছে পরিষ্কার আবহাওয়ায় অবতরণের পদ্ধতি।

তিনি বলেন, “বিমানটি যখন যোগাযোগ করে তখন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল তাদের থ্রি জিরো রানওয়ে ব্যবহারের অনুমতি দেয়। কিন্তু বিমানটি ১৫ মাইলের মধ্যে আসার পর সেটি রানওয়ে ওয়ান টু ব্যবহারের অনুমতি চায়।”

“আমি নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি এবং আমি পশ্চিম দিক থেকে অবতরণ করতে চাই।”

বিমানবন্দরের মুখপাত্র বিষ্ণু অধিকারী বলেন, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ সম্পর্কে তদন্তের পর জানা যাবে। বিমানবন্দরের কোন কারিগরি ত্রুটি ছিল কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এটা বলেন। আমরা এখনই কিছু বলতে পারছি না। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখার পর বলা যাবে।

পোখারায় বিমান বিধ্বস্তের প্রকৃত কারণ জানতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। বিমান দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে অভ্যন্তরীণ সব এয়ারলাইন্সকে উড্ডয়নের আগে বিমান পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা যা বলছেন-

বিবিসি নেপালি সার্ভিসকে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন যে, মনে হচ্ছিলো বিমানটি অবতরণের আগে মোড় নিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে।

বিবিসি আরো কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেছে এবং তারা সবাই বলেছে যে, দুর্ঘটনাটি এতো হঠাৎ করে ঘটেছে যে তারা কিছু বুঝেই উঠতে পারেননি।

তেতাল্লিশ বছর বয়সী কামলা গুরুং বলেন, “আমার চোখের সামনে আমি বিমানটি পুড়ে যেতে দেখেছি।”

কামলা গুরুং ঘারিপাতান এলাকার বাসিন্দা যেখানে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানের জানালা, চায়ের কাপ এবং আরো পোড়া অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।

বোমার মতো বিস্ফোরণ হয়-

কামলা বলেন যে, দুর্ঘটনাটি দেখে শিশুরা ভয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। কামলা গুরুং বলেন, “সকাল ১১.৩০ মিনিট পর্যন্ত সব কিছু স্বাভাবিকই ছিল। বাসার ছাদে আমি শিশুদের সাথে রোদ পোহাচ্ছিলাম। বাড়ি থেকে সব সময়ই বিমানের উঠানামার শব্দ শোনা যায়। কিন্তু রোববার সকালে মাথার উপর দিয়ে যে বিমানটি উড়ে যাচ্ছিল তার শব্দটা ভিন্ন ছিল। আমি যখন এট দেখলাম তখন এটি আছড়ে পড়েছে।”

কামলা বলেন যে এতো ভয়ংকর বিমান দুর্ঘটনা তিনি এর আগে আর কখনো দেখেননি। তিনি বলেন, “যখন বিমানটি পড়লো তখন বিশাল শব্দ হয়। এরপর কিছুক্ষণ ধরে শুধু কালো ধোঁয়া দেখা গেলো। এরপর আগুন বাড়তে থাকে।”

দুঘর্টনাস্থল থেকে দুইশো মিটারের মধ্যে বেশ কয়েকটি উঁচু ভবন ছিল। আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা বল বাহাদুর গুরুং বলেন, ‘সৌভাগ্যবশত’ বিমানটি এখানে বিধ্বস্ত হয়নি।

বাহাদুর গুরুং বলেন, “বিমানটি অনেক নিচ দিয়ে যাচ্ছিলো। বিমানটি ঘাটের দিকে যাচ্ছিল আর তখনই এটা বোমার মতো বিস্ফোরিত হয়। পাশের জঙ্গলেও আগুন ধরে যায়।”

এর কিছুক্ষণ পরেই ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে।

নেপালের কিছু বিমান দুর্ঘটনা-

  • মে ২০২২ – পোখারা থেকে জমসমের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী টুইনঅটার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২২ জন নিহত।
  • এপ্রিল ২০১৯ – লুকলা বিমানবন্দরের রানওয়েতে দুটি হেলিকপ্টারের সাথে সামিট এয়ারের একটি বিমানের সংঘর্ষে তিন জন নিহত।
  • ফেব্রুয়ারি ২০১৯ – এয়ার ডাইনাস্টির একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে সাতজন নিহত। নিহতদের মধ্যে তৎকালীন সংস্কৃতি, পর্যটন ও বিমান চলাচল মন্ত্রী রবীন্দ্র অধিকারীও ছিলেন।
  • সেপ্টেম্বর ২০১৮ – গোর্খা থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এয়ার অলটিচ্যুডের একটি হেলিকপ্টার জঙ্গলের মধ্যে বিধ্বস্ত হলে ছয়জন নিহত হয়। এদের একজন ছিলেন এক জাপানী পর্যটক।
  • মার্চ ২০১৮ – বাংলাদেশ থেকে নেপালে যাওয়া ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। একান্ন জন নিহত হয়।
  • ফেব্রুয়ারি ২০১৬ – পোখারা থেকে জমসম যাওয়া তারা এয়ারের বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২৩ জন নিহত।
  • জুন ২০১৫ – ডক্টর্স উইদআউট বর্ডার্সের ভাড়া করা হেলিপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে চার জন নিহত। তারা ভূমিকম্প পরবর্তী ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছিলেন।
  • মে ২০১৫ – ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণকার্যে নিয়োজিত মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত। ছয়জন আমেরিকান সৈন্য, দুইজন নেপালী সৈন্য এবং ৫ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত।
  • মার্চ ২০১৫ – একটি তুর্কী বিমান রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়লে ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চারদিনের জন্য বন্ধ রাখতে হয়।
  • ফেব্রুয়ারি ২০১৪ – পোখারা থেকে জুমলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া নেপাল এয়ারলাইন্স কর্পোরেশনের বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৮ জন নিহত।
  • সেপ্টেম্বর ২০১২ – কাঠমান্ডু থেকে লুকলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া সিতা এয়ারের বিমান ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হয়। বিমানে থাকা উনিশ জনের সবাই নিহত হয়।
  • মে ২০১২ – পোখারা থেকে জমসমের উদ্দেশ্যে ভারতীয় তীর্থযাত্রী বহনকারী অগ্নি এয়ারের একটি বিমান বিধ্বস্ত। উনিশ জন নিহত।
  • সেপ্টেম্বর ২০১১ – বুদ্ধা এয়ারের একটি বিমান কাঠমান্ডুর কাছে বিধ্স্ত। চৌদ্দ জন নিহত, যাদের মধ্যে নেপালী, ভারতীয় ও অন্যান্য দেশের নাগরিকেরাও ছিলেন।
  • ডিসেম্বর ২০১০ – লামিডান্ডা থেকে কাঠমাণ্ডুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৯ জন যাত্রী ও তিন জন ক্রু নিহত।
  • অগাস্ট ২০১০ – কাঠমান্ডু থেকে লুকলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বিমান বিধ্স্ত হয়ে ১৪ জন নিহত।
  • অক্টোবর ২০০৮ – লুকলা বিমানবন্দরে একটি বিমান অবতরণের সময়ে বিধ্বস্ত হলে ১৮ জন নিহত হয়। একজন আহত।
  • সেপ্টেম্বর ২০০৬ – শ্রী এয়ারের হেলিকপ্টার বিধ্স্ত হয়ে ২৪ জন নিহত। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তখনকার বন ও ভূমি রক্ষা প্রতিমন্ত্রী গোপাল রাই, পরিবেশবিদ ড. হার্ক গুরুং, ড. সিবি গুরুং ও তীর্থমান মাস্কে।

Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

সুবর্ণচরে বন্যার্তদের মাঝে সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়ার ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি

Published

on

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ চলমান দেশে আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রীর প্রস্তুতি নিচ্ছেন সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া। ২৫ আগস্ট রবিবার সুবর্ণচরের স্খানীয় সাংবাদিক ইমাম উদ্দিন সুমনসহ ৪ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়।

দুদিন ব্যাপী এ ত্রাণ সামগ্রীর মূল পৃষ্টপোষক হিসেবে রয়েছেন সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকা প্রবাসী শান্ত এবং সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বর থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল হক তরিক খন্দকার।

সহায়ক ফাউন্ডেশন, কুষ্টিয়া দীর্ঘ বছর ধরেই প্রাকৃতিক দূর্যোগ, বেকারত্ব দূরীকরণ, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা, মেধাবী ছাত্রদের শিক্ষার ব্যায়ভার গ্রহণ, অসহায়, হতদরিদ্র মানুষের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা সহ নানামুখি সামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

তারই ধারাবাহিগতায় ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, কুমিল্লাসহ দেশের প্রতিটি জেলায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন। সুবর্ণচরের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন সংবাদ প্রকাশের পর সহায়ক ফাউন্ডেশনের দৃষ্টিগোচর হয়।

সংবাদে সূত্রধরে পুলিশ কর্মকর্তা জিয়াউল হক তরিক খন্দকারের সার্বিক তত্বাবধানে চলমান বন্যায় গৃহবন্ধী এবং কর্মহীন হয়ে পড়া সুবর্ণচরের বেশ কয়েকটি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়ার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান সুবর্ণচর উপজেলার জনসাধারণ।

সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকা প্রবাসী শান্ত বলেন, মানু্ষ মানুষের জন্য, এমন দূর্যোগপূর্ণ মুহুর্তে অসহায় মানুষের পাশে থাকাটা প্রতিটি বিত্তশালী মানুষের নৈতিক দ্বায়িত্ব, তিনি দেশের প্রতিটি সামাজিক সংগঠন, অর্থশালী মানু্ষদেরকে দূর্যোগ মোকাবেলা করার অনুরোধ জানান। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সহযোগিতায় সব সময় সহায়ক ফাউন্ডেশন পাশে থাকার আশ্বাস দেন জিয়াউল হক তরিক খন্দকার। তিনি বলেন, যে কোন জেলায় দূর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া তাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

Continue Reading

Highlights

হামলা ও লুটপাট, হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তার দাবি

Published

on

By

নোয়াখালীতে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, গাইবান্ধা, শেরপুর, জয়পুরহাট, পঞ্চগড়, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ ৮টি কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শনিবার (১০ আগস্ট ২০২৪) আন্দোলনটির মুখপাত্র মো. মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার পোড়করা গ্রামে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের ৩০ একর জমি থেকে সংগ্রহকৃত আটটি খড়ের গাদা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। এর আগে গত ৫ আগস্ট আইনশৃঙ্খলার অবনতির সুযোগে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাটের ঘটনা উল্লেখ করে সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন প্রকল্পে হামলার পাঁয়তারা হচ্ছে জানিয়ে এর বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে মশিউর রহমান বলেন, আন্দোলন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ধর্মের অপব্যবহারকারী উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে। ফলে আমাদের কর্মীদেরকে অবর্ণনীয় নির্যাতন নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। উগ্রবাদী গোষ্ঠী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতার পিতৃনিবাস করটিয়া জমিদার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, পাবনায় হমালা চালিয়ে নৃশংসভাবে সদস্যদের হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের উপর সহস্রাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। আইন হাতে তুলে না নিয়ে আমরা আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। কিন্তু হামলাকারীরা ধর্মের মুখোশ পরে পার পেয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে হেযবুত তওহীদের বর্তমান এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে অবস্থিত তাঁর নিজ বাড়ির আঙিনায় একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থানীয় উগ্রগোষ্ঠী ‘মসজিদ নয়- গির্জা বানাচ্ছে’ গুজব তুলে দিয়ে তারা ধর্মান্ধ মানুষকে উস্কে দিয়ে সেদিন তাঁর বাড়িঘরসহ অন্যান্য সদস্যদের বাড়িঘরও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। মসজিটি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এরপর মসজিদের নির্মাণকাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে আগত দুই তরুণ সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোক জবাই করে হত্যা করে। তাদের হাত পায়ের রগ কাটে, চোখ তুলে ফেলে এবং দেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের হামলার পর হাল ছেড়ে না দিয়ে হেযবুত তওহীদের এমাম তাঁর গ্রামের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য অন্তত ৫০টির মতো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি গরুর খামার, মাছের ঘের, একটি বিদ্যালয়, চার তলা মসজিদ কমপ্লেক্স, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ইত্যাদি। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিক কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় এক হাজারের মতো সদস্য তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ওই গ্রামেই বসবাস করছেন। বর্তমানের অস্থিতিশীল পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে আবারো উগ্রবাদীরা ২০১৬ সালের মত একটি তাণ্ডব চালিয়ে গণহত্যার ষড়যন্ত্র করছে। হেযবুত তওহীদের এমামের গ্রাম চাষীরহাট থেকে এক বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বিশেষ করে লাকসাম উপজেলার অন্তর্গত বিপুলাসার বাজারের নিকটে আমাদের গার্মেন্টস কারখানা, খামার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত লোকজন বাসা ভাড়া করে থাকেন। অনেকে সেখানে মুদির দোকান করেন, রিকশা গ্যারেজ ইত্যাদিতে কাজ করেন। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের দিন দুর্বৃত্তরা তাদের প্রত্যেকটি বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে, গ্যারেজ লুট করেছে, দোকান লুট করেছে, বাড়িতে আগুন দিয়েছে। পঞ্চাশটি পরিবারের প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ তারা লুট করে পরিবারগুলোকে সর্বস্বান্ত করেছে।

এদিন হেযবুত তওহীদের শেরপুর, জয়পুরহাট, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ মোট ৮টি কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতির সাথে কোন সম্পৃক্ততা অতীতেও ছিল না, এখনও নেই। আমাদের আইন ভঙ্গ করার কোন রেকর্ড নেই। আমরা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কাজ করি তাই এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি মাননীয় এমামের বাড়িসহ হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালাতে ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলো লুণ্ঠন করার জন্য উসকানি দিয়ে যাচ্ছে। অনলাইনে তারা শত শত পোস্ট করেছে এ জাতীয় হুমকি দিয়ে। আমরা সেখানে ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে দিনানিপাত করছি।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট সোনাইমুড়ি থানায় হামলা করা হয়েছে এবং সেখানে চারজন পুলিশসহ সাত জন মানুষ নিহত হয়েছে। সেদিন বাজারে বাজারে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। সেদিন এবং তার পরেরদিন এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি বারবার চাষীরহাট বাজারে এসে হেযবুত তওহীদকে এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিয়ে গেছে। তবে এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। কিন্তু অনলাইনে ও অফলাইনে ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে। আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের এমামের বাসগৃহকে কেন্দ্র করে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। সোনাইমুড়ীসহ সারাদেশে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

এমতাবস্থায় সরকারের নিকট হেযবুত তওহীদের পক্ষ থেকে ৪টি দাবি জানান মশিউর রহমান। দাবিগুলো হলো- ১. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হোক। ২. স্থানীয় বাজারে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হোক। ৩. বিপুলাসারে ৫ তারিখে সংঘটিত লুটপাটে আমাদের অর্ধশত পরিবারের সদস্যরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বিনা কারণে যারা তাদের এই ক্ষতিসাধন করল তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। ৪. এখনও প্রতিমুহূর্তে গুজব সৃষ্টি করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে সে বিষয়ে সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উল্লেখ্য অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করে যাবতীয় উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, নারী নির্যাতন ইত্যাদির বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত আদর্শ প্রচারের কাজ করছে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত পন্নী পরিবারের সন্তান এমামমুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী ১৯৯৫ সালে হেযবুত তওহীদ প্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মীয় সংস্কারপন্থী আন্দোলন হেযবুত তওহীদ একাগ্রভাবে ইসলামের সুমহান আদর্শকে জনগণের মধ্যে প্রচারের কাজ করে আসছে। আদর্শ প্রচারের লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্তত দুই লক্ষাধিক জনসভা, সেমিনার, র‌্যালি, মানববন্ধন করে আন্দোলনটি।

Continue Reading

Highlights

সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি খোরশেদ-সম্পাদক মাহাবুর

Published

on

“আঁধারের সাথে দ্বন্দ্ব যাদের, আমরা তাদের সাথে” এই শ্লোগানকে ধারণ করে নোয়াখালীতে যাত্রা শুরু করেছে সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি (সাকস)। বৃহস্পতিবার(২০ জুন) সকালে চড়ুইভাতি পার্টি সেন্টারের হলরুমে সংগঠনটির সতীর্থ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়।

২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতি হিসেবে দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রতিনিধি খোরশেদ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি মাহাবুব আলমকে এক বছর মেয়াদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরবর্তীতে সদস্যগণ বক্তব্য রাখেন। সতীর্থ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কল্যানে সংগঠনটি কিভাবে ভূমিকা রাখবে সেবিষয়ে আলোকপাত করা হয়।

এসময় সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার বারি পিন্টু বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতায় চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে পাশে থাকবে সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি।

সংগঠনের সহ-সভাপতি শাহ জাহান আলম তার বক্তব্যে বলেন, যে কোন সংগঠনের গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য সাংবাদিক কল্যান সমিতির দরজা খোলা। প্রকৃত সাংবাদিকদের যে কোন সমস্যায় কার্যকরী ভূমিকা রাখবে এই সংগঠন।

সমিতির সহ-সভাপতি জাভেদ আলম কিরন সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই সংগঠকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার আহব্বান জানান। এসময় সকল সদস্য সাংবাদিকদের কল্যানে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করেন।

সাধারণ সম্পাদক মাহাবুর আলম বলেন, সাংবাদিকেরা পেশাগত দায়িত্ব পালনে দিনে-রাতে যেকোন সময় সমস্যায় পড়লে তাদের পাশে থাকবে সাংবাদিকদের কল্যান সমিতি।

সভাপতি খোরশেদ আলম বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিক কল্যান সমিতির সদস্যদের বাইরেও কোন গণমাধ্যমকর্মী যদি কোন সমস্যায় পড়েন হামলা-মামলার শিকার হয় তাদের পাশেও থাকবে সাংবাদিক কল্যান সমিতি।

সতীর্থ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক বাংলা ও যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি খোরশেদ আলম, দৈনিক জনতার জমিন পত্রিকার সম্পাদক জাবেদ আলম কিরন, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার প্রতিনিধি শাহজাহান আলম, এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি মাহাবুর আলম, বিজয় টিভির জেলা প্রতিনিধি শেখ ফরিদ, দৈনিক সময়ের আলোর বিনোদন বিট প্রতিনিধি আনোয়ার বারি পিন্টু, দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার প্রতিনিধি গোলজার হানিফ, দৈনিক গণমুক্তি পত্রিকার সাজ্জাদুল ইসলাম।

এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক চলমান নোয়াখালীর প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম, প্রতিদিন আমার সংবাদ পত্রিকার প্রতিনিধি অনুপ সিংহ, দৈনিক ভোরের সময়ের প্রতিনিধি সেলিম হোসেন, সংবাদ সারাবেলা পত্রিকার প্রতিনিধি শাহাদাত হোসেন রাসেল, দৈনিক দেশবার্তা পত্রিকার প্রতিনিধি রবিউল হাসান, দৈনিক ভোরের চেতনার প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম সোহাগ, দৈনিক মুক্ত খবরের প্রতিনিধি শাহ পরাণ, দৈনিক বর্তমানের জেলা ব্যুরো ইয়াছিন শরীফ অনিক, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির প্রতিনিধি মামুনুর রশিদ, দৈনিক বিজনেস বাংলাদেশের প্রতিনিধি মাহবুবুল হাসান, দৈনিক আলোকিত সকালের প্রতিনিধি মৃনাল কান্তি, দৈনিক বর্তমান কথার প্রতিনিধি মাইনুল ইসলাম আরিফ, দৈনিক দেশের কন্ঠের প্রতিনিধি মোঃ ইয়াসিন, দৈনিক গণতদন্তের প্রতিনিধি নুর মোহাম্মদ সবুজ, দৈনিক স্বাধীন ভোরের প্রতিনিধি সাজিদ মাহমুদ প্রমুখ।

Continue Reading