Connect with us

রাজনীতি

চরমোনাই পীরের মঞ্চে হাছান মাহমুদ-বুলুর বাকযুদ্ধ

Published

on

চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিয়ে একই মঞ্চে বক্তব্য রেখেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।

সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটির জাতীয় সম্মেলনে প্রধান দুই দলের দুই নেতাকে হাস্যরস করতে দেখা গেলেও তাদের বক্তব্যে কথার লড়াই বেশ জমে ওঠে।

বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। বিচার ব্যবস্থা এবং আইনের শাসন ধ্বংস হয়ে গেছে। এগুলোর মেরামত করা দরকার। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত করার লক্ষ্যে সমমনা সব রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে আগামী দিনে নির্বাচন করতে হবে। সেই নির্বাচনের পর একটি জাতীয় সরকার গঠন করে এ ধ্বংস হওয়া রাষ্ট্র পুনরায় মেরামত করতে হবে।

বিএনপির ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, আজ বাংলাদেশে আন্দোলন-সংগ্রাম চলছে। ৭ তারিখ আমাদের পার্টি অফিসের সামনে পুলিশ নির্মমভাবে গুলি করে নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে৷ গত এক মাসে আমাদের ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতিদিন আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারপরও আমরা বাংলাদেশের মানুষের সামনে ১০ দফা আন্দোলনের একটা রূপরেখা দিয়েছি।

ইসলামী ব্যাংক থেকে বিরাট অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে দাবি করে বরকতুল্লাহ বুলু বলেন, দেশে ৪ লাখ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হয়েছে। আমরা বারবার বলেছি কারা এই খেলাপির সঙ্গে জড়িত তাদের নাম প্রকাশ করুন। কিন্তু সরকার তা করেনি। ত্রিশ দিনের মধ্যে সাদা কাগজে সই করে ইসলামী ব্যাংক থেকে ত্রিশ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়েও সরকারের মাথা ব্যথা নেই।

বুলু ছাড়াও সরকারের সমালোচক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণঅধিকার পরিষদের নেতা রাশেদও সরকারের সমালোচনা করেন। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের নেতারাও সরকারের সমালোচনা করছিলেন।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি এতক্ষণ ধরে সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্যগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এবং আপনাদের দলের কেউ কেউ সরকারের সমালোচনা করছিলেন। সরকারে থাকলে আলোচনা-সমালোচনা হবে এটাই স্বাভাবিক। যে গাছে ফল ধরে, সে গাছে ঢিল মারে, অন্য গাছে মারে না। যারা ক্ষমতায় থাকবে তাদের সহ্য করার ক্ষমতাও থাকতে হয়। আর সেটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি সমালোচনার জবাব দিতে আমি আসি নাই। সমালোচনা করতে গেলে এটি একটি বিতর্ক সভা হয়ে যাবে।’

বক্তব্যে সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসার পরামর্শ দেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, কাজ যেগুলো হচ্ছে সেটির প্রশংসা থাকতে হয়। ভালো কাজের প্রশংসা না থাকলে কাজের উৎসাহ কমে যায়। ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে, খারাপ কাজের সমালোচনাও করতে হবে। আমরা মনে করি, ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ থাকে।

সম্মেলনে উপস্থিত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুকে উদ্দেশ্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন করার কথা বলা হলেও তারা তা করেননি। আজ চাইলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও বলতে পারত, তারা বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে সম্মেলন করবে; কিন্তু তারা তা করেনি। কারণ তারা মনে করেছেন ওখানে করতে গেলে মুসল্লিদের নামাজের সমস্যা হবে।

সবকিছু থেকে ‘না’ বলার সংস্কৃতি থেকে সব দলের বেরিয়ে আসা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তথ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে সব সংঘর্ষের রাজনীতি থেকেও বেরিয়ে আসা উচিত বলে মত দেন তিনি।

অতীতে বিভিন্ন সরকার কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতির বিষয়ে ‘মুলা ঝোলানো’ নীতিতে ছিল বলে অভিযোগ করেন তথ্যমন্ত্রী। হাছান মাহমুদ বলেন, কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি বিষয়টি বহু বছরের পুরোনো দাবি। সেই দাবি পূরণ করা হবে বলে মুলা ঝুলিয়ে রাখা হতো। খালেদা জিয়া ঝুলিয়ে রেখেছিলেন, এরশাদ সাহেব ঝুলিয়ে রেখেছিলেন কিংবা জিয়াউর রহমান ঝুলিয়ে রেখেছিলেন সেটা বলব না। তবে এটা ঝুলিয়ে রাখা হতো বা করা হতো। প্রধানমন্ত্রী মুলা ঝুলিয়ে না রেখে কার্যে পরিণত করেছেন।

Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা দিলেন রওশন এরশাদ

Published

on

এক্সপ্রেস ডেস্ক: নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) এক প্রেস নোটে নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন তিনি।

এতে বলা হয়, দলের কো চেয়ারম্যানদের অনুরোধে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু যেসব কো-চেয়ারম্যান অনুরোধের কথা বলা হচ্ছে- তারা এই বিষয়ে কোনও কিছুই জানেন না।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আমি কখনও রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করি নাই। এক বছর, দুই বছর আগের কোনো স্বাক্ষরকে কেন্দ্র করে এই ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ নেই।

এর আগে ২০২১ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেলে এরিক এরশাদ রওশন এরশাদকে পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে সে বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালতে গড়ায়।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘এই খবর ভুয়া। আমাদের দলের গঠনতন্ত্রে এইভাবে কারও চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘যাদের স্বাক্ষর করার কথা বলা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা বলছে, তাদেরকে ব্লাকমেইল করা হয়েছে। গত বছর রওশন এরশাদ চিকিৎসা শেষে যখন দেশে এসেছিল তাকে দেখতে গিয়েছিলেন, তখন এসব স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছিল। কোনো সভায় তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেনি।’

Continue Reading

Highlights

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই: মির্জা ফখরুল

Published

on

এক্সপ্রেস ডেস্ক: বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে সর্বগ্রাসী ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের গ্রাস করে ফেলেছে। তারা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের গণতান্ত্রিক ন্যূনতম অধিকারও কেড়ে নিয়েছে। আজকে যারা ক্ষমতায় বসে আছে তারা জোর করে ক্ষমতায় আছে অবৈধ এবং অসাংবিধানিকভাবে। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম ও দুঃশাসনের দেড় দশক’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে বিএনপি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান সরকার আবারও জোর করে চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে সংবিধান সংশোধন করেছে। পুলিশ, প্রশাসন, গণমাধ্যম সবই নিয়ন্ত্রণ করছে। দেশের পুরো সমাজকে তারা নষ্ট সমাজে পরিণত করেছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা ছিলো সেটা বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। কর্পোরেট গণমাধ্যম তৈরি করা হয়েছে।

বড় বড় কোম্পানিগুলো সবাই টিভি চ্যানেল বা পত্রিকার মালিক। তারা সবাই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কেউ কিন্তু টাকা পাচারের বিরুদ্ধে কথা বলে না। আসলে গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি রেখেছে। ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মী খুন করেছে। চল্লিশ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সুতরাং এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে হলে সব শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে শুধু দেশের মানুষ নয় বিদেশীরাও বলছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। তারা সবাই আপনাদের সঙ্গে আছে। অতীতে যেভাবে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেলিাম আবারও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে চলে যেতে বাধ্য করতে হবে। এরপর জনগণের ভোটে একটি দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক আমলা ইসমাইল জবিউল্লাহ। বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, খায়রুল কবির খোকন, পেশাজীবীদের মধ্যে অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক রুহুল আমিন, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, এম আবদুল্লাহ, গণফোরামের আবু সাইয়্যিদ, এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, ন্যাপ ভাসানীর এডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) ড. রেজা কিবরিয়া, গণঅধিকার পরিষদের নূরুল ইসলাম নুর প্রমুখ।

Continue Reading

Highlights

সোমবার সারা দেশে বিএনপির জনসমাবেশ

Published

on

By

আগামী সোমবার সারা দেশে জনসমাবেশ করার ঘোঘণা দিয়েছে বিএনপি। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা–নির্যাতনের প্রতিবাদে সোমবার সারা দেশে এ কর্মসূচি দিল বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজ রাজধানীতে যে অত্যাচার–নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিবাদে আমরা আগামী পরশু সোমবার সারা দেশে, সকল মহানগর, জেলা সদরে জনসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করছি। আগামীকালই (রোববার) আমরা প্রতিবাদের দিন হিসেবে পালনের কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি, আগামীকাল সরকারি দল রাজপথে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা তাই তাদের মতো একই দিনে কর্মসূচি না দিয়ে সংকট সৃষ্টি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করব, গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে কোনো বাধা সৃষ্টি করা হবে না।’

Continue Reading