Connect with us

Highlights

জেলায় জেলায় বিএনপির সাথে পুলিশ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষ

Published

on

১সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দেশের কয়েকটি জেলায় পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত এবং প্রায় অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছেন। এর বাইরে রংপুর, নেত্রকোণা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর ও মানিকগঞ্জে সংঘর্ষে পুলিশসহ দেড়শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।

রংপুর: রংপুরে বিএনপির মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশ এবং মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এদিন বেলা ১টার দিকে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ের দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি বের হয়ে জাহাজ কোম্পানি মোড়ের দিকে গেলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে।

সে সময় নেতাকর্মীরা ব্যারিকেড উপেক্ষা করে এগুতে ধরলে পুলিশের সঙ্গে হট্টগোল শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মৃদু লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে ৩ পুলিশ সদস্যসহ আহত হয় ১০ জন। পরে গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা।

পুলিশ জানায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এতে পুলিশের ৩ জন সদস্য আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

নেত্রকোণা: নেত্রকোণায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে ৮ পুলিশ সদস্য ও কমপক্ষে ৫০ জন বিএনপির নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে জেলা শহরের ছোট বাজারে বিএনপি দলীয় অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এক বিএনপি নেতা বলেন, ‘১২ গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ ৫ জনকে নেত্রকোণা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে বিএনপির অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে শহরের নবদ্বীপ পুল এলাকায় বিএনপির অনুষ্ঠানে তাদের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এ সময় একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিএনপিকর্মীরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এ সময় পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে ৫২ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ৫ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় পুলিশের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের রাবার বুলেট ও টিয়ারশেলের আঘাতে বিএনপির অন্তত ২০ জন আহত হয়।

নাটোর: নাটোরে বিএনপির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে বিএনপি ও যুবদলের ৫ কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে নাটোর শহরের আলআইপুর এলাকায় পৌঁছালে এই ঘটনা ঘটে।

জেলা বিএনপি’র এক সদস্য বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসার পথে বিএনপি নেতা শামীম হোসেনসহ ৫ জনকে মারধর করে আহত করেছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় শামীম হোসেনকে নাটোর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।’

জানতে চাইলে নাটোরে পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল কিন্তু কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। দুই পক্ষকে অনুরোধ করেই সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। কারো আহত হওয়ায় বিষয়ে এখনও কিছু জানিনা।’

এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে নাটোর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘বিএনপির নাশকতার বিরুদ্ধে এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাঈদ আহমেদ পলককে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার প্রতিবাদে ছাত্রলীগ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ছাত্রলীগ কারো ওপর হামলা করেনি।’

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে ২ পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।

সকাল ১১টায় জেলা শহরের খালপাড় এলাকায় এই সংঘর্ষ বাধে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত দফা দফায় সংঘর্ষ হয়। এসময় প্রায় এক ঘণ্টা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিলেন তারা।

এদিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা।

সমাবেশের জন্য আগে থেকেই পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবি করেন তিনি।

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সদরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত এবং প্রায় অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি সংঘর্ষে নিহত হন। নিহতের নাম শাওন মাহমুদ ওরফে আকাশ (২০)।

Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

সোনাইমুড়ীতে মন্দিরে চাঁদা দাবির মিথ্যা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

Published

on

সোনাইমুড়ী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে আগত পূজাকে কেন্দ্র করে সোনাইমুড়ী পূজা কমিটির কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোনাইমুড়ী বাজারের ব্যবসায়ী ও উপজেলা বিএনপির সদস্য রুবেল ভূইয়া এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

শনিবার(২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবে এই আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে উপজেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন রুবেল ভূঁইয়া লিখত বক্তব্য পাঠ করেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার বিরুদ্ধে আগত পূজাকে কেন্দ্র করে সোনাইমুড়ী পূজা কমিটির কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলা হয়েছে। নোয়াখালী-২৪ নামের একটি অনলাইন ফেসবুক পেইজে প্রচারিত ভিডিওতে সোনাইমুড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পার্থ সাহা এই অভিযোগ তুলেছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে পূজা কমিটির কাছে চাঁদা নিয়েছি এক লাখ টাকা অথচ এই বিষয়ে মন্দির কমিটির কেউ অবগত নয়।

এসময় রুবেল ভূইয়া ফেসবুক পেইজ নোয়াখালী-২৪ এর একপাক্ষিক সংবাদ প্রচার ও সোনাইমুড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক পার্থ সাহার কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। সেই সাথে এসকল মিথ্যা অপপ্রচারের ঘটনায় সকল সাংবাদিক ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আন্তরিক সহযোগীতা কামনা করেন।

এদিকে একই ঘটনায় শনিবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করেছে সোনাইমুড়ি কালিবাড়ি মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ। তারা জানান পূজা কমিটির কাছ থেকে চাঁদা দাবির ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ হলেও এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক পার্থ সাহা চাঁদাবাজির যে অভিযোগ করেছে সেটি মিথ্যা।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, পার্থ সাহা তার ব্যক্তিগত কোন্দলকে সাম্প্রদায়িক ঘটনায় রুপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। কমিটির নেতৃবৃন্দ পূজাকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ ও ব্যক্তিগত ঘটনাকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাথে যুক্ত করে স্বার্থ হাসিল অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানান।

সোনাইমুড়ি কালিবাড়ি মন্দিরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সোনাইমুড়ী উপজেলা হিন্দু-বৈদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ এবং পূজা উদযাপন কমিটির সর্বস্তরের সদস্য বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Continue Reading

Highlights

সুবর্ণচরে বন্যার্তদের মাঝে সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়ার ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি

Published

on

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ চলমান দেশে আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রীর প্রস্তুতি নিচ্ছেন সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া। ২৫ আগস্ট রবিবার সুবর্ণচরের স্খানীয় সাংবাদিক ইমাম উদ্দিন সুমনসহ ৪ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়।

দুদিন ব্যাপী এ ত্রাণ সামগ্রীর মূল পৃষ্টপোষক হিসেবে রয়েছেন সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকা প্রবাসী শান্ত এবং সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বর থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল হক তরিক খন্দকার।

সহায়ক ফাউন্ডেশন, কুষ্টিয়া দীর্ঘ বছর ধরেই প্রাকৃতিক দূর্যোগ, বেকারত্ব দূরীকরণ, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা, মেধাবী ছাত্রদের শিক্ষার ব্যায়ভার গ্রহণ, অসহায়, হতদরিদ্র মানুষের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা সহ নানামুখি সামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

তারই ধারাবাহিগতায় ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, কুমিল্লাসহ দেশের প্রতিটি জেলায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন। সুবর্ণচরের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন সংবাদ প্রকাশের পর সহায়ক ফাউন্ডেশনের দৃষ্টিগোচর হয়।

সংবাদে সূত্রধরে পুলিশ কর্মকর্তা জিয়াউল হক তরিক খন্দকারের সার্বিক তত্বাবধানে চলমান বন্যায় গৃহবন্ধী এবং কর্মহীন হয়ে পড়া সুবর্ণচরের বেশ কয়েকটি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়ার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান সুবর্ণচর উপজেলার জনসাধারণ।

সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকা প্রবাসী শান্ত বলেন, মানু্ষ মানুষের জন্য, এমন দূর্যোগপূর্ণ মুহুর্তে অসহায় মানুষের পাশে থাকাটা প্রতিটি বিত্তশালী মানুষের নৈতিক দ্বায়িত্ব, তিনি দেশের প্রতিটি সামাজিক সংগঠন, অর্থশালী মানু্ষদেরকে দূর্যোগ মোকাবেলা করার অনুরোধ জানান। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সহযোগিতায় সব সময় সহায়ক ফাউন্ডেশন পাশে থাকার আশ্বাস দেন জিয়াউল হক তরিক খন্দকার। তিনি বলেন, যে কোন জেলায় দূর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া তাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

Continue Reading

Highlights

হামলা ও লুটপাট, হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তার দাবি

Published

on

By

নোয়াখালীতে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, গাইবান্ধা, শেরপুর, জয়পুরহাট, পঞ্চগড়, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ ৮টি কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শনিবার (১০ আগস্ট ২০২৪) আন্দোলনটির মুখপাত্র মো. মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার পোড়করা গ্রামে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের ৩০ একর জমি থেকে সংগ্রহকৃত আটটি খড়ের গাদা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। এর আগে গত ৫ আগস্ট আইনশৃঙ্খলার অবনতির সুযোগে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাটের ঘটনা উল্লেখ করে সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন প্রকল্পে হামলার পাঁয়তারা হচ্ছে জানিয়ে এর বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে মশিউর রহমান বলেন, আন্দোলন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ধর্মের অপব্যবহারকারী উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে। ফলে আমাদের কর্মীদেরকে অবর্ণনীয় নির্যাতন নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। উগ্রবাদী গোষ্ঠী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতার পিতৃনিবাস করটিয়া জমিদার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, পাবনায় হমালা চালিয়ে নৃশংসভাবে সদস্যদের হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের উপর সহস্রাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। আইন হাতে তুলে না নিয়ে আমরা আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। কিন্তু হামলাকারীরা ধর্মের মুখোশ পরে পার পেয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে হেযবুত তওহীদের বর্তমান এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে অবস্থিত তাঁর নিজ বাড়ির আঙিনায় একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থানীয় উগ্রগোষ্ঠী ‘মসজিদ নয়- গির্জা বানাচ্ছে’ গুজব তুলে দিয়ে তারা ধর্মান্ধ মানুষকে উস্কে দিয়ে সেদিন তাঁর বাড়িঘরসহ অন্যান্য সদস্যদের বাড়িঘরও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। মসজিটি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এরপর মসজিদের নির্মাণকাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে আগত দুই তরুণ সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোক জবাই করে হত্যা করে। তাদের হাত পায়ের রগ কাটে, চোখ তুলে ফেলে এবং দেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের হামলার পর হাল ছেড়ে না দিয়ে হেযবুত তওহীদের এমাম তাঁর গ্রামের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য অন্তত ৫০টির মতো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি গরুর খামার, মাছের ঘের, একটি বিদ্যালয়, চার তলা মসজিদ কমপ্লেক্স, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ইত্যাদি। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিক কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় এক হাজারের মতো সদস্য তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ওই গ্রামেই বসবাস করছেন। বর্তমানের অস্থিতিশীল পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে আবারো উগ্রবাদীরা ২০১৬ সালের মত একটি তাণ্ডব চালিয়ে গণহত্যার ষড়যন্ত্র করছে। হেযবুত তওহীদের এমামের গ্রাম চাষীরহাট থেকে এক বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বিশেষ করে লাকসাম উপজেলার অন্তর্গত বিপুলাসার বাজারের নিকটে আমাদের গার্মেন্টস কারখানা, খামার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত লোকজন বাসা ভাড়া করে থাকেন। অনেকে সেখানে মুদির দোকান করেন, রিকশা গ্যারেজ ইত্যাদিতে কাজ করেন। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের দিন দুর্বৃত্তরা তাদের প্রত্যেকটি বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে, গ্যারেজ লুট করেছে, দোকান লুট করেছে, বাড়িতে আগুন দিয়েছে। পঞ্চাশটি পরিবারের প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ তারা লুট করে পরিবারগুলোকে সর্বস্বান্ত করেছে।

এদিন হেযবুত তওহীদের শেরপুর, জয়পুরহাট, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ মোট ৮টি কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতির সাথে কোন সম্পৃক্ততা অতীতেও ছিল না, এখনও নেই। আমাদের আইন ভঙ্গ করার কোন রেকর্ড নেই। আমরা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কাজ করি তাই এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি মাননীয় এমামের বাড়িসহ হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালাতে ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলো লুণ্ঠন করার জন্য উসকানি দিয়ে যাচ্ছে। অনলাইনে তারা শত শত পোস্ট করেছে এ জাতীয় হুমকি দিয়ে। আমরা সেখানে ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে দিনানিপাত করছি।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট সোনাইমুড়ি থানায় হামলা করা হয়েছে এবং সেখানে চারজন পুলিশসহ সাত জন মানুষ নিহত হয়েছে। সেদিন বাজারে বাজারে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। সেদিন এবং তার পরেরদিন এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি বারবার চাষীরহাট বাজারে এসে হেযবুত তওহীদকে এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিয়ে গেছে। তবে এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। কিন্তু অনলাইনে ও অফলাইনে ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে। আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের এমামের বাসগৃহকে কেন্দ্র করে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। সোনাইমুড়ীসহ সারাদেশে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

এমতাবস্থায় সরকারের নিকট হেযবুত তওহীদের পক্ষ থেকে ৪টি দাবি জানান মশিউর রহমান। দাবিগুলো হলো- ১. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হোক। ২. স্থানীয় বাজারে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হোক। ৩. বিপুলাসারে ৫ তারিখে সংঘটিত লুটপাটে আমাদের অর্ধশত পরিবারের সদস্যরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বিনা কারণে যারা তাদের এই ক্ষতিসাধন করল তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। ৪. এখনও প্রতিমুহূর্তে গুজব সৃষ্টি করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে সে বিষয়ে সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উল্লেখ্য অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করে যাবতীয় উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, নারী নির্যাতন ইত্যাদির বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত আদর্শ প্রচারের কাজ করছে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত পন্নী পরিবারের সন্তান এমামমুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী ১৯৯৫ সালে হেযবুত তওহীদ প্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মীয় সংস্কারপন্থী আন্দোলন হেযবুত তওহীদ একাগ্রভাবে ইসলামের সুমহান আদর্শকে জনগণের মধ্যে প্রচারের কাজ করে আসছে। আদর্শ প্রচারের লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্তত দুই লক্ষাধিক জনসভা, সেমিনার, র‌্যালি, মানববন্ধন করে আন্দোলনটি।

Continue Reading