৪৭ ধারায় পুলিশকে সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে সংবাদপত্রকে স্তব্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এখানে ৪৭ ধারায় পুলিশকে সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যেটা রক্ষীবাহিনীর সময় ছিল। পুলিশ যেকোনও সময়, যেকোনও বাড়িতে, যে কারও অফিসে প্রবেশ করতে পারবে বিনা ওয়ারেন্টে। আদালতের কোনও অনুমতির প্রয়োজন নেই। শুধু তাই নয়, বাড়িতে গিয়ে আপনার কম্পিউটারসহ সবকিছু তারা জব্দ করে নিয়ে যেতে পারবে। তার জন্য আবার কোনও জব্দ তালিকাও দেবে না কেউ। নির্বাচনের আগে এ ধরনের আইন করা মানে বাংলদেশের সংবাদপত্র যেন কিছু না লিখতে পারে।
তিনি বলেন, আজকে যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, এই জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে এবং সংলাপে আসতে বাধ্য করা হবে। সেই সঙ্গে, সরকারকে বাধ্য করা হবে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে। এখানে সংবিধান কোনো বাধা হবে না।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মামলা বাতিলের দাবিতে আয়োজিত এক নাগরিক সভায় তিনি এই কথা বলেন।
মওদুদ বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য যা যা প্রয়োজন, সরকার তার সবই করছে। তারা যে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না, সেটা এরই মধ্যে প্রমাণ করে দিয়েছে। নির্বাচনের আর মাত্র ৩ মাস বাকি। জনগণ ভেবেছিল একটি সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নিজস্ব অভিমত প্রকাশ করতে পারবে। নিজস্ব রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে পারবে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল একটি নীতি করল যে, কীভাবে বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখা যায়, সেই ব্যবস্থা করা। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু করার দায়িত্ব যেই সরকারের ওপরে, সেই সরকারের কর্মকাণ্ড দেখলেই বোঝা যায়, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না।
মওদুদ বলেন, সরকার আর একটি ভয়ংকার কাজ করছে, সেটি হলো গায়েবি মামলা। কোনো ঘটনা ঘটে নাই, কিন্তু মামলা দিয়ে দিয়েছে। আমাদের এত বছরের রাজনীতির জীবনে কোনোদিন শুনিনি এমন মামলা হতে পারে। পাকিস্তান আমলে শুনিনি, বাংলাদেশ হওয়ার ৪৭ বছরেও কোনোদিন শুনিনি- এ ধরনের মামলা হতে পারে। এটা ফৌজদারি মামলা। অসংখ্য মামলা দিয়ে আমাদের আসামি করা হচ্ছে।
নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সহ-সভাপতি ভিপি ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মিসেস সাবিরা নাজমুল, জিনাফ সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন, ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফ সুলতানা রুমা প্রমুখ।