Connect with us

জাতীয়

মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীসহ ৫ জেলায় বন্দুকযুদ্ধে ৯ জন নিহত

Published

on

মাদকবিরোধী অভিযানকালে রাজধানীসহ দেশের ৫ জেলায় মোট ৯ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন । গতকাল দিবাগত রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত বন্দুকযুদ্ধে রাজধানীর মিরপুরে ১জন, কুমিল্লায় ২জন, পিরোজপুরে ২ জন, সাতক্ষীরায় ২ জন, চাদঁপুরের ফরিদগঞ্জে ১ জন, ঝিনাইদহে ১ জনসহ মোট ০৯ জন নিহত হয়েছেন।

পুলিশের দাবি, নিহতরা মাদক ব্যবসায়ী। তাদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

মিরপুরে ডিবি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অজ্ঞাত পরিচয়ে (৫০) এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশ বলছে নিহত ওই ব্যক্তি মাদক ব্যবসায়ী।

রূপনগর থানার এসআই মিজানুর জানান, রূপনগরে সরকারী কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ভবনে মাদক কেনাবেচা হচ্ছে-এমন খবর পেয়ে ডিবি (পশ্চিম) বিভাগের একটি দল দিবাগত রাত ৩টার দিকে সেখানে অভিযান চালায়। মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালায়। ডিবিও পাল্টা গুলি চালালে একপর্যায়ে তারা পালিয়ে যায়।

পরে ঘটনাস্থলে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৪টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৫ হাজার পিস ইয়াবা ও ১টি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।

কুমিল্লায় পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এনামুল হক (দোলন) ভূইয়া (৩৫) এবং নুরু নামের (৫৫) দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

পুলিশের দাবি, নিহত দুজন মাদক ব্যবসায়ী।

রোববার দিবাগত রাতে জেলার দেবিদ্বার উপজেলা পশ্চিম ভিংলাবাড়ি এবং সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা এলাকায় এ দুটি ঘটনা ঘটে।

দেবিদ্বারে নিহত দোলন উপজেলার ভিংলাবাড়ি (মির্জানগর) গ্রামের মৃত আবদুল্লাহ ভূইয়ার ছেলে এবং সদর দক্ষিণে নিহত নুরু উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে।

দেবিদ্বার থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক উদ্ধার করতে পুলিশের একটি দল উপজেলার পশ্চিম ভিংলাবাড়ি এলাকায় গোমতী বাঁধে অবস্থান নেয়। সেখানে মাদক ব্যবসায়ী দোলনসহ তার সহযোগীরা পৌঁছলে তাদের আটকের চেষ্টা করা হয়। এসময় মাদক ব্যবসায়ী দোলনসহ তার ওপর সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষায় ২৩ রাউন্ড শাটগানের গুলি চালায়। এতে দোলন গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে দোলনের মৃত্যু হয়।

ওই অভিযানে এসআই যুবরাজ বিশ্বাস, পুলিশ সদস্য গনেশ, মনির ও রাজ্জাক আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি পাইপগান, ১০ কেজি গাঁজা ও ১০০ পিস ইয়াবা। নিহত দোলনের বিরুদ্ধে দেবিদ্বার ও মুরাদনগর থানায় ১২টি মাদকের মামলা রয়েছে।

অপর দিকে সদর দক্ষিণ থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, মাদক বিরোধী অভিযানকালে উপজেলার সীমান্তবর্তী গলিয়ারা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী নুরু ও তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও গুলি চালালে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয় নুরু। তাকে গুরুতর আবস্থায় উদ্ধারের পর কুমেক হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক নুরুকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় ২ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি রিভলবার ও ৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে। নিহত নুরু স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ে তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী এবং তার বিরুদ্ধে ১১টি মাদক ও একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।

পিরোজপুরে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওহিদুজ্জামান (৩৫) ও মিজানুর রহমান (৩৪) নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

নিহত মাদক ব্যবসায়ী ওহিদুজ্জামান নেছারাবাদ উপজেলার দক্ষিণ কৌরিখাড়া গ্রামের মৃত আ. রহমানের ছেলে ।

পিরোজপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ জানান, রোববার দুপুরে পিরোজপুর পৌরসভার উত্তর কৃষ্ণ নগর এলাকা থেকে ওহিদুজ্জামানকে পিরোজপুর ডিবি পুলিশের একটি দল গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী রাত পৌনে ১টার দিকে সদর উপজেলার কলাখালী ইউনিয়নের টোনা ব্রিজ সংলগ্ন কৈবর্তখালী গ্রামে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে গেলে ওহিদুজ্জামানের সঙ্গীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এসময় অহিদুজ্জামানকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে তারা।

পরে ডিবি পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে ডিবি পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়। এসময় মাদক ব্যবসায়ী ওহিদুজ্জামান পালাতে গেলে গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এসময় ডিবি পুলিশের এএসআই আল-আমিন ও ডিবি পুলিশ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, ৫ রাউন্ড গুলি, দুটি বগি দা, ১৭৫টি ইয়াবা ট্যাবলেট, ৫০ গ্রাম গাঁজা, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম ও মাদক সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

তার বিরুদ্ধে মাদক, সন্ত্রাসী, অস্ত্র মামলাসহ মোট ৮টি মামলা রয়েছে।

মঠবাড়িয়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার জানান, রোববার দিবাগত রাতে মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়মাছুয়া গ্রামের হাওলাদার বাড়ি এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতির খবর পেয়ে থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। রাত পৌনে ২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর ডাকাতেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। দুই পক্ষের গোলাগুলিতে মিজানুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন।

এ সময় মঠবাড়িয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল আমিন, উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম, তসলিমুর রহমান ও নূর আমিন, সহকারী উপপরিদর্শক ইয়ার আলী ও আবুল হাসান আহত হন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দেড় কেজি গাঁজা, ৫৫ পিচ ইয়াবা বড়ি ও চারটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে। মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও মাদকের ছয়টি মামলা রয়েছে।

সাতক্ষীরার বাঁকালে অজ্ঞাত পরিচয় দুই ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি তারা মাদক ব্যবসায়ী। মাদক ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি করে নিহত হয়েছে ওই দুজন।

সোমবার ভোরে সাতক্ষীরা ভোমরা সড়কের বাঁকালের আগুনপুর গ্রামে রাস্তার পাশ থেকে ওই লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। সদর থানার উপপরিদর্শক প্রবীর কুমার দাস জানান, ভোরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশ দুটির দেহে একটি করে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তাদের পরনে ছিল লুঙ্গি ও গেঞ্জি। মাত্র ১০ গজের ব্যবধানে পড়ে থাকা লাশ দুটির পরিচয় জানাতে পারেনি কেউ।

তিনি বলেন, পাশেই পাওয়া গেছে একটি ওয়ান শুটারগান ও ১০৫ বোতল ফেনসিডিল। এ ছাড়া মদের খালি বোতলও পাওয়া গেছে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা মাদকের ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। নিজেদের মধ্যে গোলাগুলির এক পর্যায়ে দুজন নিহত হন। ময়না তদন্তের জন্য লাশ দুটি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পিচ্চি হান্নানের সহযোগী ও শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আবু সাঈদ বাদশা ওরফে লাল বাদশা (৪৫) নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

সোমবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নে বৈচাতরী এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

বাদশা একই উপজেলার ১০নং গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ ছৈয়ালের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় ৭টি, চাঁদপুর সদরে ২টি, চট্টগ্রামে ১টিসহ ১০টি মাদক মামলা রয়েছে।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি শাহ্ আলম জানান, রাত ১০টার দিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে লাল বাদশাকে তার বাড়ির সামনে থেকে মাদক বিক্রির সময় ১১১ পিছ ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ।

পরে তাকে নিয়ে পুলিশের একটি দল অভিযানে বের হয়। গুপ্টি ইউনিয়নের চাঁদপুর সেচ প্রকল্প বাঁধেরর বৈচাতরী এলাকায় গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের ওপর হামলা ও গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয় আবু সাঈদ ওরফে লাল বাদশা। আহত অবস্থায় তাকে ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদশাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পুলিশ নিহতের কাছ থেকে ১১১ পিছ ইয়াবা এবং ঘটনাস্থল থেকে একটি একনলা বন্দুক, ৩টি ককটেল, ৪ রাউন্ডগুলি উদ্ধার করে। ঘটনার সময় পুলিশের এএসআই বাবুল, সুমন, সুমন চৌধুরী, কনস্টেবল আশরাফ ও দেলোয়ার আহত হন।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় মাদক ব্যবসায়ীদের দুই গ্রুপের মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছেন।

রোববার রাত সোয়া ১টার দিকে উপজেলার জাড়গ্রামের শ্মশান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তি জেলা শহরের পাগলাকানাই সড়কের মৃত মোহম্মদ আলীর ছেলে ফারুক আহম্মেদ বলে দাবি করেছে তার ছোট ভাই ফরিদ আহম্মেদ।

মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দুইদল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলিতে নিহতের এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ।

তিনি বলেছেন, রাতে গোলাগুলির খবর পেয়ে টহল পুলিশের একটি দল সেখানে যায় এবং রাতেই নিহত ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।

তিনি দাবি করেন, নিহত ব্যক্তি একজন মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল,ম্যাগজিনসহ ২ রাউন্ড গুলি, আধা কেজি গাঁজা ও ২০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।

Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

হামলা ও লুটপাট, হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তার দাবি

Published

on

By

নোয়াখালীতে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, গাইবান্ধা, শেরপুর, জয়পুরহাট, পঞ্চগড়, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ ৮টি কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শনিবার (১০ আগস্ট ২০২৪) আন্দোলনটির মুখপাত্র মো. মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার পোড়করা গ্রামে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের ৩০ একর জমি থেকে সংগ্রহকৃত আটটি খড়ের গাদা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। এর আগে গত ৫ আগস্ট আইনশৃঙ্খলার অবনতির সুযোগে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাটের ঘটনা উল্লেখ করে সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন প্রকল্পে হামলার পাঁয়তারা হচ্ছে জানিয়ে এর বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে মশিউর রহমান বলেন, আন্দোলন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ধর্মের অপব্যবহারকারী উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে। ফলে আমাদের কর্মীদেরকে অবর্ণনীয় নির্যাতন নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। উগ্রবাদী গোষ্ঠী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতার পিতৃনিবাস করটিয়া জমিদার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, পাবনায় হমালা চালিয়ে নৃশংসভাবে সদস্যদের হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের উপর সহস্রাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। আইন হাতে তুলে না নিয়ে আমরা আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। কিন্তু হামলাকারীরা ধর্মের মুখোশ পরে পার পেয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে হেযবুত তওহীদের বর্তমান এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে অবস্থিত তাঁর নিজ বাড়ির আঙিনায় একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থানীয় উগ্রগোষ্ঠী ‘মসজিদ নয়- গির্জা বানাচ্ছে’ গুজব তুলে দিয়ে তারা ধর্মান্ধ মানুষকে উস্কে দিয়ে সেদিন তাঁর বাড়িঘরসহ অন্যান্য সদস্যদের বাড়িঘরও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। মসজিটি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এরপর মসজিদের নির্মাণকাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে আগত দুই তরুণ সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোক জবাই করে হত্যা করে। তাদের হাত পায়ের রগ কাটে, চোখ তুলে ফেলে এবং দেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের হামলার পর হাল ছেড়ে না দিয়ে হেযবুত তওহীদের এমাম তাঁর গ্রামের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য অন্তত ৫০টির মতো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি গরুর খামার, মাছের ঘের, একটি বিদ্যালয়, চার তলা মসজিদ কমপ্লেক্স, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ইত্যাদি। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিক কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় এক হাজারের মতো সদস্য তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ওই গ্রামেই বসবাস করছেন। বর্তমানের অস্থিতিশীল পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে আবারো উগ্রবাদীরা ২০১৬ সালের মত একটি তাণ্ডব চালিয়ে গণহত্যার ষড়যন্ত্র করছে। হেযবুত তওহীদের এমামের গ্রাম চাষীরহাট থেকে এক বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বিশেষ করে লাকসাম উপজেলার অন্তর্গত বিপুলাসার বাজারের নিকটে আমাদের গার্মেন্টস কারখানা, খামার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত লোকজন বাসা ভাড়া করে থাকেন। অনেকে সেখানে মুদির দোকান করেন, রিকশা গ্যারেজ ইত্যাদিতে কাজ করেন। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের দিন দুর্বৃত্তরা তাদের প্রত্যেকটি বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে, গ্যারেজ লুট করেছে, দোকান লুট করেছে, বাড়িতে আগুন দিয়েছে। পঞ্চাশটি পরিবারের প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ তারা লুট করে পরিবারগুলোকে সর্বস্বান্ত করেছে।

এদিন হেযবুত তওহীদের শেরপুর, জয়পুরহাট, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ মোট ৮টি কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতির সাথে কোন সম্পৃক্ততা অতীতেও ছিল না, এখনও নেই। আমাদের আইন ভঙ্গ করার কোন রেকর্ড নেই। আমরা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কাজ করি তাই এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি মাননীয় এমামের বাড়িসহ হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালাতে ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলো লুণ্ঠন করার জন্য উসকানি দিয়ে যাচ্ছে। অনলাইনে তারা শত শত পোস্ট করেছে এ জাতীয় হুমকি দিয়ে। আমরা সেখানে ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে দিনানিপাত করছি।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট সোনাইমুড়ি থানায় হামলা করা হয়েছে এবং সেখানে চারজন পুলিশসহ সাত জন মানুষ নিহত হয়েছে। সেদিন বাজারে বাজারে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। সেদিন এবং তার পরেরদিন এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি বারবার চাষীরহাট বাজারে এসে হেযবুত তওহীদকে এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিয়ে গেছে। তবে এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। কিন্তু অনলাইনে ও অফলাইনে ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে। আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের এমামের বাসগৃহকে কেন্দ্র করে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। সোনাইমুড়ীসহ সারাদেশে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

এমতাবস্থায় সরকারের নিকট হেযবুত তওহীদের পক্ষ থেকে ৪টি দাবি জানান মশিউর রহমান। দাবিগুলো হলো- ১. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হোক। ২. স্থানীয় বাজারে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হোক। ৩. বিপুলাসারে ৫ তারিখে সংঘটিত লুটপাটে আমাদের অর্ধশত পরিবারের সদস্যরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বিনা কারণে যারা তাদের এই ক্ষতিসাধন করল তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। ৪. এখনও প্রতিমুহূর্তে গুজব সৃষ্টি করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে সে বিষয়ে সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উল্লেখ্য অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করে যাবতীয় উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, নারী নির্যাতন ইত্যাদির বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত আদর্শ প্রচারের কাজ করছে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত পন্নী পরিবারের সন্তান এমামমুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী ১৯৯৫ সালে হেযবুত তওহীদ প্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মীয় সংস্কারপন্থী আন্দোলন হেযবুত তওহীদ একাগ্রভাবে ইসলামের সুমহান আদর্শকে জনগণের মধ্যে প্রচারের কাজ করে আসছে। আদর্শ প্রচারের লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্তত দুই লক্ষাধিক জনসভা, সেমিনার, র‌্যালি, মানববন্ধন করে আন্দোলনটি।

Continue Reading

Highlights

রাজনীতি করতে না চাওয়া সাকিব কিনলেন আ.লীগের মনোনয়ন!

Published

on

খেলা ডেস্ক: আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী ডামাডোল শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তিনটি আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নির্বাচনে অংশগ্রহণে তার আগ্রহের বিষয়টি অনেকটাই ওপেন সিক্রেট। যা মনোনয়ন ফরম নেওয়ার মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পেয়েছে। এরপরই একটি ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে সাকিবের। ২০১৩ সালে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘জীবনেও রাজনীতি করব না।’

গতকাল (শনিবার) সন্ধ্যায় এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের মনোনয়ন ফরম নেওয়ার খবর প্রকাশ হতেই সেই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই শেয়ার করছেন। কেউবা সে পোস্টের কমেন্টবক্সে সাকিবের সমালোচনায় মেতেছেন। এর আগে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সাকিবের পক্ষে ফরমগুলো সংগ্রহ করা হয়। আসনগুলো হলো— ঢাকা-১০, মাগুরা-১ ও ২।

মূলত মনোনয়ন ফরম নেওয়ার মাধ্যমে সরাসরি রাজনীতিতে অংশগ্রহণের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন সাকিব। যা তার আগের দেওয়া বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেই অনেকেই বিষয়টি নতুন করে সামনে নিয়ে আসছেন। ২০১৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০.১৪ মিনিটে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে সাকিব লিখেন, ‘আমি রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছি না এবং আমার জীবনে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কোনো ইচ্ছাও নেই।’

ওই সময় সাকিব বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের অনুরোধে একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এরপরই তার রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে আলোচনার ডালপালা মেলে। তখন নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে সাকিব ওই স্ট্যাটাস দেন। তবে এক দশকের বেশি সময় পর নিজের অবস্থান বদলাতে দেখা গেলো তাকে।

ফেসবুক পোস্টে সাকিব আরও লিখেন, ‘আমাকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে দিন। আমি রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছি না এবং আমার জীবনে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কোনো ইচ্ছাও নেই। আমাকে বোর্ড সভাপতি (পাপন) অনুরোধ করায় আমি ক্রিকেট দলের পক্ষ থেকে ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম এবং সেখানে রাজনীতি নিয়ে একটি শব্দও বলিনি। তাই সবাইকে বলব যে– আমাদের মিডিয়াকে বিশ্বাস করবেন না। আশা করি নিজের বিষয়টা পরিষ্কার করতে পেরেছি।’

এর আগে গত একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সাকিব নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন বলে গুঞ্জন শোনা যায়। ওই সময় সাকিব না পারলেও, নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হন আরেক সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। এরপর থেকে সাকিবও নির্বাচনে যাবেন বলে অনেকদিন ধরেই জোর শোরগোল চলছিল। এশিয়া কাপ চলাকালে অনেকটা হুট করে সাকিব দল রেখে দেশে চলে আসেন। ওই সময় নির্বাচনী কাজেই সাকিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন বলে আলোচনা রয়েছে!

Continue Reading

Highlights

উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের মানুষকে অভিশাপমুক্ত করেছি : প্রধানমন্ত্রী

Published

on

এক্সপ্রেস ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করেছি। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। সেইসঙ্গে মানুষের গড় আয়ুও বেড়েছে আমাদের সরকারের আমলে। আমরা উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের মানুষকে অভিশাপমুক্ত করেছি।

আজ রোববার (২৯ আগস্ট) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নেওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়গুলো আমি সম্মেলনে তুলে ধরেছি।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসার আমন্ত্রণে ২২ থেকে ২৪ আগস্ট জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সম্মেলনে শেষে গত রোববার তিনি দেশে ফিরেছেন।

Continue Reading