জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্র দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে ৮ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। কর্মসূচিতে রয়েছে মানববন্ধন ও দোয়া মাহফিল । গতকাল নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এদিকে, এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার’ দাবিতে রোববার রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে মহানগর উত্তর বিএনপি। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আজ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।
৮ দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ২৫ এপ্রিল ঢাকাসহ সারা দেশে মহানগর ও জেলা সদরে মানববন্ধন এবং খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় ২৭ এপ্রিল মসজিদে মসজিদে বাদ জুমা দোয়া মাহফিল। এছাড়া ২৬ এপ্রিল ছাত্রদল, ২৮ এপ্রিল যুবদল ও ২৯ এপ্রিল স্বেচ্ছাসেবক দল সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে। ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শ্রমিক সমাবেশ করবে শ্রমিক দল।
কর্মসূচি ঘোষণার পর রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজানো মামলায় কারারুদ্ধ করা হয়েছে। তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আবদুস সালাম আজাদ, মনির হোসেন, শওকত শাহিন ও সেলিমুজ্জামান সেলিম, মুনীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
যেভাবেই হোক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব- লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য চরম ক্রোধ ও প্রতিহিংসার বহির্প্রকাশ। ভারত কখনও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে হস্তক্ষেপ করে না- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, গত নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের এক শীর্ষ নেতাকে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং ধমক দিয়েছিলেন যা ওই নেতা গণমাধ্যমে স্বীকারও করেছিলেন। এসব কি মানুষ ভুলে গেছেন? সুতরাং যতই ছোটাছুটি করেন না কেন ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন এ দেশে আর হবে না। রিজভী আরও বলেন, বিএনপিকে ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। জনগণের শক্তির কাছে কোনো দুঃশাসনই টেকে না। প্রতিবাদী চেহারা নিয়ে সংগ্রামী মানুষ রাস্তায় নামছে। বিদেশি প্রভুর ওপর নির্ভর করা সরকার জনগণের শক্তির কাছে পরাজিত হবেই।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ৩ এপ্রিল সর্বশেষ থানায় থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এছাড়া বিক্ষোভ, মানববন্ধন, গণঅনশন, গণস্বাক্ষরতা, জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশসহ নানা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা হয়।
ফখরুল-আব্বাসের নেতৃত্বে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। রোববার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় হোসেন মার্কেটের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আয়োজনে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তিনি গুরুতর অসুস্থ। তাকে সুচিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। আমরা দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ করে দেয়ার দাবি করছি।
বিক্ষোভ মিছিলে আরও অংশ নেন- ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুন্সি বজলুল বাছিত আঞ্জু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম পারভেজ, এজিএম শামসুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, ঢাকা মহানগর যুবদল উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন প্রমুখ।