পারস্য উপসাগরের উপকূলে মার্কিন নৌবাহিনীর এমভি কেপ রে নামের যুদ্ধজাহাজ নোঙর করায় নিরাপত্তা শঙ্কা ও অস্বস্তিতে পড়েছে ইরান।
ইরানের ক্ষতি করতে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ইরাক ও সিরিয়ার বন্দরে রাসায়নিক বোঝাই মার্কিন যুদ্ধজাহাজ পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দেশটির কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি পেন্টাগন।
এক্সপ্রেস ইউকে জানায়, পারস্য উপসাগরের উপকূলে নোঙর করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর এমভি কেপ রে নামের যুদ্ধজাহাজ।
ইরানের সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বোলফাজি শেখারচি জানান, রোববার জাহাজটিকে উপসাগরীয় একটি দেশের বন্দরে দেখা যায়। তবে নির্দিষ্ট করে ওই দেশের নাম বলেননি তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, এটা ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিপজ্জনক ষড়যন্ত্রে’র অংশ।
মার্কিন ওই যুদ্ধজাহাজটিকে এর আগে ইরাক ও সিরিয়ার উপকূলেও দেখা গেছে বলেও জানান শেখারচি। সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে রাসায়নিক হামলার অভিযোগ এনে গত বছরের এপ্রিলে সিরীয় উপকূল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, জাহাজটি এখনও ইরাক ও সিরিয়ার উপকূলের কাছাকাছি রয়েছে।
হুশিয়ারি করে তিনি বলেন, ‘জাহাজটির ব্যাপারে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। কতজন নাবিক, কি কি রাসায়নিক তার সব তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। খুব শিগগিরই এ সব তথ্য প্রকাশ করা হবে।’
ইরানি সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায় থেকে অভিযোগ করা হলেও এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন। ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে ট্রাম্পের সরে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।
তেহরানের ওপর ইতিমধ্যে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। চলতি সপ্তাহেই দেশটির বিরুদ্ধে তেল অবরোধের ডাক দিয়েছে তারা।
মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে সিরিয়ায় ইরানের উপস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান প্রকট হচ্ছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে শুরু থেকেই আসাদ বিরোধীদের অস্ত্র-গোলাবারুদসহ সব রকম সহযোগিতা দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন। ২০১২ সাল থেকে বাশার সরকারকে সহায়তা শুরু করে তেহরান।
এদিকে ইরানের তেল রফতানি বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে তেহরান কাজ শুরু করেছে জানিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইশহাক জাহাঙ্গীর। এ জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অপরিশোধিত তেল রফতানির অনুমোদন দেবে দেশটি।
আলজাজিরার এক সংবাদে বলা হয়, রোববার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে ইশহাক জাহাঙ্গীর বলেন, ইরানের তেলের বাজার দখলকারী দেশগুলো বিশ্বাসঘাতক এবং এর জন্য তাদের একদিন প্রতিদান দিতে হবে। এ সময় তিনি ইরানের প্রতিদ্বন্দ্বী ওপিইসি (অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিস) প্রস্তুতকারী, সৌদি আরবকে সতর্ক করে বলেন, তারা কখনোই তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে তেহরানের জায়গা দখল করতে পারবে না।