‘কোটা আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছিল কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় সেই ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ।
গতকাল সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি দাবি করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, আন্দোলনকারীরা আমাদেরই সন্তান। তারা বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার ছবি নিয়ে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানে আন্দোলন করেছে। সেখানে বিএনপি তাদের পেট্রলবোমা বাহিনী, সন্ত্রাসী বাহিনীকে ঢুকিয়েছিল এবং দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তাদের সেই প্রচেষ্টা ভেস্তে গেছে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায়।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ বিএনপি নেতারা কোটা অন্দোলনকে পুঁজি করে দেশে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছিলেন অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, তারা (বিএনপি) দেশের মাটি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছিল। তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে অর্থাৎ তাদের রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মাধ্যমে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখলাম তারেক রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মামুন আহমেদ নামে একজন অধ্যাপকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি কীভাবে এ আন্দোলনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়, কীভাবে এই আন্দোলনে একটু বাতাস দেয়া যায় সেই নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাই আমি মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনে কারা হামলা চালিয়েছে, এই মামুন সাহেবদের গ্রেফতার করা হলে সেই তথ্য বেরিয়ে আসবে। সম্ভবত তারেক রহমান নির্দেশ দেয়ার পরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।
কোটা বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকেই ছিল উল্লেখ করে সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার সব সময় হয়ে এসেছে। কোটা সংস্কার ভবিষ্যতেও হবে। প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন এবং সেই সঙ্গে প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আলাদা বিশেষ ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে ঘোষণা দিয়েছেন, তাই প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই।
বিএনপিকে পরগাছা দল আখ্যা দিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা বিভিন্ন সময় অন্যদের আন্দোলনে আশ্রয় নিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। তেল, গ্যাস রক্ষা কমিটির আন্দোলনে শরিক হয়েও তারা তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল। তাদের সে চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিল। তারা নিজেরাও বহু আন্দোলন করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার নেতাদের বিশ্বাস করেন না এবং নেতাদের তাদের কর্মীরা বিশ্বাস করে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, এখন তাদের (বিএনপি) ডাকে কেউ সাড়া দেয় না। তাই অন্যরা কিছু করলে সেখানে খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। বিএনপির সবকিছুই ভেসে চলে গেছে। খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয় কারাগারে আছেন। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে আছেন। তাদের বড় বড় নেতাদের দুর্নীতির বিষয়ে দুদক তদন্ত করছে। তাদের রাজনীতি বানের পানির মতো ভেসে যাচ্ছে বিধায় অন্যদের আঁকড়ে ধরে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।
এ সময় ড. হাছান মাহমুদ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এম এ জলিলের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান, রেহানা আশিকুর রহমান, জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব সাদেক সিদ্দিকি, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, শেখ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।