জাতীয়

আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের লাশ উদ্ধার

Published

on

গত ৩০ মার্চ নিখোঁজ হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রংপুরে নিখোঁজ আইনজীবী ও আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের লাশ উদ্ধার করেছে র‍্যাব । নিখোঁজ হওয়ার আগে তাঁর বন্ধ হয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্তে নামেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

পুলিশ জানায়, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রংপুরে নিখোঁজ আইনজীবী ও আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের লাশ উদ্ধারের সময় পরনে ছিল জুতা, শার্ট ও প্যান্ট। তাঁর শরীর বিছানার চাদর ও লুঙ্গি দিয়ে মোড়ানো ছিল। গত ৩০ মার্চ রথীশ চন্দ্র ভৌমিক নিখোঁজ হন।

নিহত রথীশ চন্দ্রের নিজ বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন একটি বাড়িতে তাঁর লাশ মাটিচাপা দেওয়া ছিল। গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটায় রথীশের লাশ উদ্ধার করা হয়। রথীশের ভাই সুশান্ত ভৌমিক লাশ শনাক্ত করেন। র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব-১৩) অধিনায়ক আরমিন রাব্বি সাংবাদিকদের এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

র‍্যাব জানায়, রথীশের স্ত্রী স্নিগ্ধা ও তাঁর দুই সহকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গতকাল রাত সাড়ে আটটায় অভিযানে নামে র‍্যাব। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী লাশের সন্ধান মিলেছে।

এর আগে গত ৩০ মার্চ রথীশ চন্দ্র ভৌমিক নিখোঁজ হন। নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর রক্তমাখা শার্ট নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। গতকাল বিভিন্ন সংগঠন রথীশ চন্দ্র নিখোঁজ হওয়ার প্রতিবাদে প্রতীকী অনশন পালন করে।

রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বলেন, ৩০ মার্চ রথীশ চন্দ্র নিখোঁজ হওয়ার আগের রাতে ১০টা ২২ মিনিটে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। মঞ্চনাটকসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ওই সংগঠনের লোকজনেরা জানান, নিখোঁজ হওয়ার আগের রাতেই রথীশ চন্দ্র রংপুর টাউন হল মঞ্চে রাত নয়টা পর্যন্ত মঞ্চনাটক করেছেন এবং পাশে লালন উৎসব মঞ্চেও উঠেছিলেন। এরপর তিনি সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ি যান। এরপর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ হয়ে যায়। ফোন বন্ধ হওয়ার ঘটনাটি ধরেই গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত শুরু করে। পরের দিন তাঁর স্ত্রী দাবি করেন, রশীথ চন্দ্র নিখোঁজ হয়েছেন। অজ্ঞাত মোটরসাইকেলে তাঁকে তুলে নেওয়া হয়েছে। এটি ছিল বানানো কথা।

সাইফুর রহমান জানান, রথীশ চন্দ্রের লাশ থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য তা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

র‍্যাবের এক খুদে বার্তায় বলা হয়েছে, রথীশ চন্দ্রের লাশ উদ্ধারের ঘটনা বিষয়ে আজ র‍্যাব-১৩ কার্যালয়ে সকাল ১০টায় ব্রিফিং হবে।

রথীশ চন্দ্র জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি ও মাজারের খাদেম হত্যা মামলার সরকারি কৌঁসুলি ছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এ টি এম আজহারুল ইসলামের মামলার সাক্ষী ছিলেন তিনি।

রথীশ চন্দ্র বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি রংপুর জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক। জেলা আইনজীবী সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক বাবু সোনা নামে পরিচিত এই আইনজীবী হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ও রংপুর জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি ছিলেন।

গত শুক্রবার সকালে শহরের তাজহাট বাবুপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেননি রথীশ। বাড়ির বাইরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লাল রঙের একটি মোটরসাইকেলে করে তিনি বের হন বলে পরিবার জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version