Connect with us

মতামত

আমি মনোনয়ন নিয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার : বিদ্যুৎ কুমার রায়

Published

on

নিজস্ব সংবাদদাতা:
দ্বিতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে পীরগাছার তাম্বুল ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও একটি কুচক্রী মহল সেটি বাতিল করতে গভীর ষড়যন্ত্র করছে বললেন বিদ্যুৎ কুমার রায়।

শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে নেকমামুদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘বিদ্যুৎ কুমার রায়ের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে চক্রান্তের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে’ সাংবাদিকের এসব কথা বলেন তিনি।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিদ্যুৎ কুমার রায় বলেন, গত ৭ অক্টোবর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। সেখানে পীরগাছা উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে তাম্বুলপুরে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

“সেই মনোনয়ন নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিতরা আমার মনোনয়ন বাতিল করতে ষড়যন্ত্র করছে। আমি মনোনয়ন পেয়ে কাগজপত্র দাখিল করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছিলাম। এমন সময়ে বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখলাম প্রার্থী পরিবর্তন করে আমার স্থলে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন সরদারকে দল নতুন করে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন পোষ্ট দেখে আমি উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিস এবং মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মহোদয়ের কাছে বিষয়টি ক্লিয়ার হতে জানার চেষ্টা করি কিন্তু পরিস্কার কোন উত্তর পাই নাই। এছাড়াও প্রার্থীতা বাতিলেরও কোন চিঠি এখন পর্যন্ত হাতে পাইনি। তাই যারা আমার এই মনোনয়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র করে আমার ইউনিয়নের ভোটারদের বিভ্রান্ত করছে তাদের প্রতি দলীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানান তিনি।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, তাম্বুলপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিন, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সভাপতি শ্রী ভবেশ চন্দ্র বর্মন, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু তারেক পাভেল। ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী, মোতাকাব্বার হোসেন বাপন প্রমুখ।

Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

মতামত

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আনন্দ মোহন কলেজে আনন্দ র‍্যালি

Published

on

By

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের ছাত্রলীগের আনন্দ র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকালে আয়োজিত র‍্যালিটি আনন্দ মোহন কলেজের ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. নাজমুল ইসলাম সাকিব নেতৃত্ব দেন।

এ সময় তিনি বলেন, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাবে ও শেখ মুজিবের আদর্শে কাজ করে যাবে ছাত্রলীগের প্রতিটি ইউনিট। সকল অপশক্তিকে রোধকল্পে আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রলীগ ইউনিট সবসময় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি।

Continue Reading

মতামত

স্যোশাল মিডিয়া: নিজেকে মিথ্যেভাবে জাহির করার এক অবিরাম প্রতিযোগিতা

Published

on

By

সবুজ ভট্টাচার্য্য
বাঙ্গালীদের মন-মানসিকতা সার্বিক পর্যালোচনার মাধ্যমে কোন একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছানো বেশ কষ্টসাধ্য বিষয়। আবেগ তাড়িত এই জাতিকে শিক্ষার মাধ্যমে খুব বেশি পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি। এর প্রভাব পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। “নিজে যারে বড় বলে বড় সেই নয়, লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়” – এটি খুবই প্রচলিত একটি বাংলা প্রবাদ যা আত্মসংযমের উদ্দেশ্যে প্রণিত হলেও পরবর্তীতে সেই আত্মসংযম তীব্র গতিতে বেড়ে গিয়ে বাঙালি মন থেকে সম্পূর্ণ বিয়োজন হয়ে গেছে।

ব্রিটিশ আমলে হাজার বছরের ধুতি পাঞ্জাবি ছেড়ে ইংরেজদের সুট বুট পড়া শুরু করা থেকেই এই জাতি নিজেকে মিথ্যেভাবে জাহির করা শুরু করে। কিন্তু সেই মিথ্যে ভাবে জাহির করার বিষয়টি যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে এলো তখন তা অতীতের সব সীমাকেই লংঘন করেছে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অধিকাংশ মানুষ নিজেকে মিথ্যেভাবে উপস্থাপন করছে। এর ক্ষেত্র এবং উদ্দেশ্য রীতিমত একটি গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আমাদের চোখে পড়ে তা হল অধিকাংশ ব্যক্তি বিভিন্ন ধরনের সাজসজ্জা বা মেকাপের আড়ালে ঢেকে নিজেকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে এক ধরনের তৃপ্তি অনুভব করছেন। এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থাপিত নিজের ছবিতে এসবের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহারের ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ভাবে ঐ ব্যাক্তি উপস্থাপিত হচ্ছে তার সাথে প্রকৃত ব্যাক্তির অধিকাংশই ক্ষেত্রেই মিল খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।

যার কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সূত্র ধরে সৃষ্ট সকল সম্পর্ক খুব বেশিদিন স্থায়িত্ব পাচ্ছে না। কারণ এ ধরনের মিথ্যে আবরণে ঢাকা ব্যক্তি সমূহকে বাস্তব জীবনে প্রত্যক্ষভাবে পাওয়ার পর সেই ব্যক্তির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সার্বিক অবয়বের সাথে তার বাস্তব জীবনের প্রকৃত রূপের মিল না পাওয়ার কারণে তার সম্পর্কে পূর্বে যে সম্মানবোধ বা আকর্ষণ কাজ করতো তা খুব অল্প সময়ে বাষ্প হয়ে উড়ে যায় এবং সম্পর্কগুলোতে আকস্মিক পরিবর্তন আসে।

সৌন্দর্যের সংজ্ঞা এর ব্যাপারে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে আদিকাল থেকেই একটি বিভ্রান্তি রয়েছে যা একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এই জাতি ভুলতে পারেনি এবং তার রক্ত থেকে দূরীভূত করতে পারেনি। এই লেখার বিষয়বস্তুর প্রয়োজনেই একজন আমেরিকান লেখক এবং সাংবাদিক নাওমি ওল্ফের লেখা একটি বইয়ের কিছু তথ্য তুলে ধরছি। “মিথ অফ বিউটি” নারীবাদী তত্ত্বের উপর লেখা একটি ক্লাসিক রচনা, মূলত ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে এটি লেখা হয়েছিল । এতে, লেখক বহু অধ্যয়ন এবং গবেষণার উপর ভিত্তি করে, নারী মুক্তি, নারীর অগ্রগতি এবং সৌন্দর্য সম্পর্কে মানুষের ক্রমবর্ধমান বিভ্রান্তির উপর আলোকপাত করেছেন।এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার করে বলা উচিত যে “মিথ অফ বিউটি” এর উল্লেখের মাধ্যমে আমি কোনভাবেই সরাসরি নারীদেরকে আমার লেখার একমাত্র বিষয়বস্তু হিসেবে প্রতীয়মান করতে রাজি নই বরং লেখার প্রয়োজনেই এর আবির্ভাব হয়েছে।

অধিকাংশ সময় আমরা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আমাদের ফিকে বা স্বল্পমেয়াদী মনোভাব পোষণ করে থাকি কারণ এই মনোভাবের দীর্ঘমেয়াদে যখন তা নিজের ব্যক্তিগত জীবনের সাথে সাংঘর্ষিক অবস্থান গ্রহণ করে তখন তা থেকে আমরা নিরবে সরে আসি। এখন প্রশ্ন হলো বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আমরা যে এত কথা বলি তা কি প্রকৃত অর্থে আমরা নিজেরা বিশ্বাস করি? অনেকেই বলে থাকেন যে মানুষ সমাজে শ্বেতাঙ্গদের অনেক বেশি দাম দিয়ে থাকেন যেসব ব্যক্তির গায়ের রং ভালো তাদেরকে অনেক বেশি দাম দিয়ে থাকেন এবং যাদের গায়ের রং শ্যামলা বা কাল তারা অনেক ক্ষেত্রেই সমাজে তাদের উপযুক্ত জায়গা গড়ে তুলতে পারেননা এবং সবক্ষেত্রে সমান প্রাধান্য পাননা; যেটাকে তারা এক ধরনের অসম্মান হিসেবে বিবেচনা করেন। আমিও তাদের সাথে একমত কিন্তু একটি জায়গায় আমি কোনোভাবেই একমত হতে পারিনা যে তারা যখন নিজেদেরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের প্রকৃত রূপকে ভিন্নভাবে প্রদর্শনের চেষ্টায় রত থাকেন।

এতে একটি প্রশ্ন থেকেই যায় যে, তারা কি নিজেরা এই বর্ণবাদের অপবাদে নিজেদেরকেই আঘাত করছে না। কারন তারা নিজেরাই তাদের সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত শারীরিক অবস্থাকে বিভিন্ন ভাবে পরিবর্তন করে সেইসব সাদা চামড়ার মানুষ বা সমাজের চোখে তথাকথিত সুন্দর মানুষ গুলোর মত করতে চাচ্ছে। এতে কি তারা তাদের নিজেদেরকে অপমান করছে না? এটাও যদি একটা অধিকার হিসেবে বিবেচিত হয় তাহলে সমাজকে আলাদা করে দোষ দেবার মত কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। যতদিন না পর্যন্ত তারা তাদের এই ধরনের আচরণ পরিবর্তন করবে না ততদিন পর্যন্ত সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলান সম্ভব নয়। প্রত্যেকটা মানুষ যদি নিজে নিজের শারীরিক অবয়বকে স্বাভাবিক এবং সুন্দর হিসেবে উপস্থাপন করতে পারে এবং উপস্থাপন করতে লজ্জাবোধ না করে তবেই সেই অবয়ব বা শারীরিক রূপ একসময় গিয়ে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হিসেবে সমাজে বিবেচিত হবে।

আমি মনে করি আমাদের সবসময় নিজেদেরকে একটু কম প্রদর্শন করা উচিত। আমরা ঠিক যতটা; প্রদর্শন করা উচিৎ ঠিক তার অর্ধেক। কারণ আমরা যদি ব্যক্তিগতভাবে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য, রূপ এবং আমাদের ব্যক্তিগত অবস্থান সব সময় জাহির করতে চাই, তাহলে তা সাময়িক ভাবে লোকমনে দাগ কাটলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা বিরক্তির কারণ হতে পারে এবং ব্যক্তিগতভাবে জাহির করা একশটি তথ্য থেকে যদি একটিও ভুল প্রমাণিত হয় তাহলে ঠিক সেইসব ব্যক্তি যারা আমাদের জাহির করা তথ্য শুনে বা দেখে ঠিক যতটা আমাদেরকে দেবতাতুল্য মনে করে মাথায় তুলে রেখেছিল; ঠিক সেই অবস্থান থেকেই মাটিতে ছুঁড়ে ফেলতে একমুহূর্ত দ্বিধাবোধ করবে না। তারচেয়ে বরং আমাদের উচিত নিজেদেরকে কম প্রকাশ করা এবং আশেপাশের মানুষগুলোকে নিজ থেকেই আমাদের সম্পর্কে জানার সুযোগ প্রদান করা। তাহলে তারা নিজ থেকে যা জানবে তা সবসময় তারা সত্য হিসেবেই মানবে এবং তার উপর নির্ভর করে আমাদেরকে যে সম্মান করবে তার সব সময় টিকে থাকবে। কামিনী রায়ের ‘অনুকারীর প্রতি’ নামের কবিতায় এই ভিন্ন জীবনদর্শনের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। তিনি অকাতর চিত্তে তার কবিতায় বলেছেন ; “পরের চুরি ছেড়ে দিয়ে আপন মাঝে ডুবে যা রে / খাঁটি ধন যা সেথায় পাবি, আর কোথাও পাবি না রে।”

লেখক :

সম্পাদক, ত্রৈমাসিক ঊষাবার্তা, চট্টগ্রাম।

Continue Reading

মতামত

মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা নাকি করোনা বাজার?

Published

on

By

নোভেল করোনা তথা কভিড-১৯ নামক ভাইরাস জ¦রে জর্জরিত প্রায় তামাম দুনিয়া। ইতোমধ্যে চীনের উহান শহর থেকে উৎপত্তি অদৃশ্য করোনাঘাতে মানবতার শহর ইতালিকে বাঁচার আকুতি নিয়ে আকাশপানে কাঁদতে দেখছে বিশ্ববাসী। বিধ্বস্ত হয়েছে বাণিজ্যিক শহর চীন। করোনা রোধে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে মেডিসিনের শহর সুইজারল্যান্ড। নিরূপায়ত্ব দেখিয়েছে প্রযুক্তির শহর জার্মান। দিশাহারা ক্ষমতার দেশ আমেরিকা, নিঃসঙ্গ শক্তিধর কানাডা, বাঁচার কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছিল না ব্রিটিশের দেশ ইংল্যান্ড। নিস্তব্ধ অস্ত্রের রাজাখ্যাত রাসিয়া-ফ্রান্স। টালমাটালবস্থায় রক্ষণশীল সৌদি-ইরান-ইরাক-পাকিস্তান। করোনার ধাক্কায় বেদশায় নিমজ্জিত পোশাকের আমাদের বাংলাদেশ।

বলা যায়, হঠাৎ কে যেনো থামিয়ে দিল চলমান বিশ্বকে। অবস্থায় এমন যে, করোনার আঘাত থেকে রেহাই পেতে পারমাণবিক অস্ত্রের বাহাদুরি ফিকে। বিজ্ঞান ব্যর্থ। সভ্যতার আস্ফালন স্তমিত। ক্ষমতার দম্ভ পরাজিত। ফলে এগিয়ে যাওয়ার বিশ্ব যেনো চলছে এখন ব্যাক গিয়ারে! করোনা রোধে টীকা আবিষ্কারেও মুক্তির শতভাগ নিরাপদ পথ রুদ্ধ হওয়ায় আকাশের নিচের মানবক্ষমতার সকল কারামতি শেষ। একমাত্র আকাশে উপরের অধিপতির নিকট প্রার্থনা, হে জগত মালিক তুমি আমাদের উপর সহায় হও।

মহামারি করোনার এমন ভয়াবহ ছোঁবল থেকে আদম সন্তানকে বাঁচাবার একটিই উপায় হিসেবে চারিদিকে চাউর হচ্ছে ‘দূরত্ব থিওরি’। অর্থাৎ ‘দূরত্ব’ বজায় রাখা। মূলত একজন অপরজনের সাথে মধ্যকার নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান করা। বিশ্বের সব দেশই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আবিষ্কারকৃত ‘দূরত্ব’ থিওরিটি মোতাবেক ব্যবস্থা নিয়ে চলছে। বাংলাদেশে বিশেষ করে করোনার প্রতিকারে টেলিভিশনে টকশোসহ পত্র-পত্রিকায় ওই ‘দূরত্ব’ থিওরিটি ব্যাপক আকারে আলোকপাত করা হচ্ছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারংবার ছবি এঁকে এবং রাস্তায় দাগ কেটে দূরত্বের সংজ্ঞা সম্পর্কে জনতাকে অবহিত করছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে, দূরত্ব থিওরিটার গোড়ায় গলদ পরিলক্ষিত। মূলত হওয়ার দরকার ছিল ‘শারীরিক দূরত্ব’। তা না হয়ে বলা হচ্ছে, ‘সামাজিক দূরত্ব’! অথচ সংকটকালে একদিকে প্রয়োজন সামাজিক নৈকট্য বিধান। শেষাবধি এ দূরত্ব থিওরিটির উননেও লেজেগোবরে পরিণত হচ্ছে। কেননা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকলেও নির্বাচনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হরহামেশাই চলছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া করোনা ভাইরাসটি আর কোথাও বিস্তার করতে পারে না! যার জলজ্যান্ত উদাহরণ মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামী ২এপ্রিল এমবিবিএস ও ৩০শে এপ্রিল বিডিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কথা রয়েছে।

করোনা ঝুঁকির মধ্যেই ২০২০-২১ সালের শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ২ এপ্রিল। তবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার বেড়ে গেলে তারিখ পেছাতে পারে বলে গত ১৩ মার্চ স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়।

করোনার ঝুঁকি নিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে চান না এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। সেকারণেই ২ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবি তুলেছেন তারা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পুরোপুরি শেষ হয়নি। যারা ভর্তি পরীক্ষা দেবেন তাদের ভ্যাকসিনও দেয়া হয়নি। এ ছাড়া সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ঈদের পর নেয়া হবে। সেখানে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা নিতে কেনো এত তাড়াহুড়ো? তবে, ২ এপ্রিলের পূর্বে মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা হয় তাহলে ভর্তি পরীক্ষা দিতে রাজি বলেও জানান তারা।

উল্লেখ্য, রাজধানীসহ দেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৫৫টি ভেন্যুতে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবার রেকর্ডসংখ্যক এক লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। গত বছর আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৭২ হাজারেরও কম। ১৯টি কেন্দ্রে ভেন্যুর সংখ্যা ছিল ২৭টি। তবে করোনার কারণে এবার ভেন্যুর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। কারণ পরীক্ষার হলে শারীরিক দূরত্ব মেনে আসনবিন্যাস করার কথা রয়েছে। বর্তমানে সরকারিভাবে পরিচালিত মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৩৭টি। এগুলোতে মোট আসন সংখ্যা চার হাজার ৩৫০। এ বছর এক লাখ ২২ হাজার ৮৭৪টি আবেদনের হিসাবে আসনপ্রতি লড়বেন ২৮ জন।

অপ্রিয় হলেও সত্য যে, গত ১৯ মার্চ করোনা সংক্রমণ বাড়ার মধ্যেই ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ পরীক্ষায় প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ পরীক্ষর্থী অংশ নেন। সেখানেও যেনো করোনা আঘাত হানতে হিম্মত দেখায়নি! দেশে করোনার সংক্রমণের হার যখন ঊর্ধ্বমুখী তখন বিসিএস পরীক্ষা হলে আক্রান্তের হার বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা করে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করেছিলেন অনেক প্রার্থী। একদল পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে আদালতে রিটও করেছিলেন। তবে, হাইকোর্ট সেই রিট খারিজ করে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা আয়োজন করতে পিএসসিকে নির্দেশ দেন।

গত ১৭ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মিনি কনফারেন্স রুমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও বর্তমানে করণীয় সম্পর্কে এক জরুরি সভায় পাবলিক পরীক্ষা বন্ধসহ ১২টি নির্দেশনা পালন করতে সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

নির্দেশনাগুলো হলো: ১. সম্ভব হলে কমপ্লিট লকডাউনে যেতে হবে। সম্ভব না হলে ইকোনমিক ব্যালান্স রেখে যেকোনো জনসমাগম বন্ধ করতে হবে। ২. কাঁচা বাজার, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, শপিংমল, মসজিদ, রাজনৈতিক সমাগম, ভোট অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, পবিত্র রমজান মাসের ইফতার মাহফিল ইত্যাদি অনুষ্ঠান সীমিত করতে হবে। ৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেগুলো বন্ধ আছে সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে। অন্যান্য কার্যক্রম সীমিত রাখতে হবে। ৪. যেকোনো পাবলিক পরীক্ষা (বিসিএস, এসএসসি, এইচএসসি, মাদ্রাসা, দখিলসহ অন্যান্য) বন্ধ রাখতে হবে। ৫. কোভিড পজিটিভ রোগীদের আইসোলেশন জোরদার করতে হবে। ৬. যারা রোগীদের কন্ট্রাকে আসবে তাদের কঠোর কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে, ৭. বিদেশ থেকে বা প্রবাসী যারা আসবেন তাদের ১৪ দিনের কঠোর কেয়ারেন্টিনে রাখা এবং এ ব্যাপারে সামরিক বাহিনীর সহায়তা নেওয়া, ৮. আগামী ঈদের ছুটি কমিয়ে আনা, ৯. স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আইন প্রয়োজনে জোরদার করা, ১০. পোর্ট অব এন্ট্রিতে জনবল বাড়ানোসহ মনিটরিং জোরদার করা, ১১. সব ধরনের সভা ভার্চুয়াল করা এবং ১২. পর্যটন এলাকায় চলাচল সীমিত করা।
এসব প্রস্তাবের পাশাপাশি কয়েকজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও ৫টি প্রস্তাবনা দিয়েছেন। সেখানে তারা বলেছেন- ১. বইমেলা বাতিল করতে হবে, ২. বদ্ধস্থানে বা কক্ষে ইফতার পার্টি না করতে নির্দেশনা দিতে হবে, ৩. ঈদের ছুটি কমিয়ে ১ দিন করতে হবে, ৪. কক্সবাজারসহ পর্যটন এলাকায় যাতায়াত সীমিত করতে হবে, ৫. মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজের ব্যবস্থা করতে হবে।

সভায় আলোচিত ১২টি প্রস্তাবনার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র এবং রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নজমুল ইসলাম গণমাধ্যমে জানান, প্রস্তাবগুলো ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও বিশিষ্ট ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমে জানান, এই প্রস্তাবগুলো অবশ্যই ভালো। সংক্রমিত ব্যক্তিদের আইসোলেট করে রাখতে হবে। তারা নেগেটিভ হলে তবে ছাড়তে হবে। সামগ্রিকভাবে লকডাউন করা যাবে না।

দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আগের মতো কঠোর হওয়ার কথা বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, তা নিশ্চিত করতে আবারও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসবে। মাস্ক না পরলে-স্বাস্থ্যবিধি না মানলে জরিমানা করা হবে। এ বিষয়ে জেলা পর্যায়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে ইতোমধ্যে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ১৩ মার্চ সারাদেশে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। উপসচিব মো. শাফায়াত মাহবুব চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর হার গত কয়েক মাসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবার মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরের পর সংক্রমণের মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকলেও চলতি মার্চের শুরু থেকে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার গত ১৫ মার্চ ৯ শতাংশ পেরিয়ে গেছে, যা দুই মাস আগে ৩ শতাংশের নিচে নেমেছিল। দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৭ শর ঘরে উঠেছে, যা এক মাস আগেও তিনশর ঘরে ছিল। দেশে করোনা শনাক্তের এক বছর পার হওয়ার পর দুই মাসের ব্যবধানে গত ১৭ মার্চ আবারও হাজারের ঘরে পৌঁছায় শনাক্তের সংখ্যা। এরপর থেকে করোনা শনাক্তের সংখ্যা হাজারের নিচে নামেনি। এর আগে ১৪ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১১৫৯ জনের করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল। ১৫ মার্চ শনাক্ত হয়েছিল ১৭৭৩ জন। এটি ছিল গত ৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। শনাক্ত বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় প্রতি ১০০ নমুনায় ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং এখন পর্যন্ত ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত বিবেচনায় প্রতি ১০০ জনে সুস্থ্য হয়েছে ৯১ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং মৃত্যু হয়েছে ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

অন্যদিকে, দেশে করোনার ৩৪টি নতুন রূপ ধরা পড়েছে এক গবেষণায়। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলাদেশে চার হাজার ৬০৪ বার মিউটেশন বা রূপ পরিবর্তন করেছে করোনা। এর মধ্যে ৩৪টি রূপ একেবারেই নতুন। অর্থাৎ পৃথিবীর আর কোনো দেশে এই রূপগুলো পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের গবেষকরা মালয়েশিয়ার মোনাস ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথভাবে ৩৭১টি জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করে ওই তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষকরা ভাইরাসের এই নতুন ৩৪টি রূপের নাম দিয়েছেন ‘বাংলা মিউটেশন’। এই রূপগুলোর বেশীরভাগই পাওয়া গেছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরে। এই তিন জেলার প্রত্যেকটিতে অন্তত তিনটি করে নতুন রূপ ধরা পড়েছে। করোনার চার হাজার ৬০৪টি রূপের মধ্যে সবচেয়ে বেশী রূপ পাওয়া গেছে চট্টগ্রামে। এই জেলায় পাওয়া করোনার পরিবর্তিত রূপগুলো সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ, ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া গেছে। দেশের অন্যান্য স্থানে পাওয়া রূপগুলোর সঙ্গে মিল পাওয়া যায় মূলত ইউরোপের।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আদনান মান্নান, সহকারী অধ্যাপক মাহবুব হাসান এবং চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও বায়োটেকনোলজির সহকারী অধ্যাপক রাসেল দাশ ওই গবেষণার নেতৃত্ব দেন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান এএমএএম জুনায়েদ সিদ্দিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এস এম মাহবুবুর রশীদ গবেষণা কাজে তদারকির দায়িত্ব পালন করেন। মালয়েশিয়ার মোনাস ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হামিদ হোসেন ও নাজমুল হাসান এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসমা সালাউদ্দিন, রাশেদুজ্জামান ও মেহেদী হাসান তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে সহায়তা করেছেন। গত ২১ মার্চ এ-সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি নেদারল্যান্ডসের ‘এলসেভিয়ার’ ও ‘ভাইরাস রিসার্চ অব নেদারল্যান্ডস টুডে’ নামের আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, ওই গবেষণাটি একটি নির্দেশিকার মতো। যার মাধ্যমে আরো গবেষণা করে জানা যাবে দেশে খুঁজে পাওয়া নতুন এই রূপগুলোর বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কতখানি। সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বৃটেনে চিহ্নিত অতিসংক্রমণশীল করোনার ধরনটি বাংলাদেশে গত জানুয়ারিতেই প্রবেশ করে। এ ছাড়া আফ্রিকা এবং ব্রাজিলের অতি সংক্রমণশীল ধরনসহ অন্তত ১২টি রূপ বাংলাদেশে বিদ্যমান বলে গবেষণা তথ্য থেকে জানা গেছে। বৃটেন থেকে নতুন ধরনটি জানুয়ারিতে দেশে এলেও তা প্রকাশ হয় অতি সম্প্রতি।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই তথ্য আগে প্রকাশ পেলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব ছিল। দেশে আসা অতিসংক্রমণশীল ধরন ছড়িয়েছে কি-না তা এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, করোনার এমন ধরনের কারণেই হয়তো সম্প্রতি সংক্রমণ এবং মৃত্যু বেড়ে গেছে। আমরা বলতে চাই, করোনাকালীন যেখানে স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা মাথায় রেখে অ্যাকাডেমিক পরীক্ষাগুলো পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেখানে কী যুক্তিতে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের আয়োজন? ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, তাদের পরিবারও জড়িত। প্রতিটি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে পৌঁছে দিতে সাথে যদি অন্তত চারজন অভিভাবক পরীক্ষা কেন্দ্র এলাকায় হাজির হন, সেখানে শিক্ষার্থী ছাড়াই ৫ লক্ষাধিক অভিভাবকের সমাবেশ ঘটবে।

প্রশ্ন হচ্ছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পর্বে কীভাবে সরকার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার মতো এত বড় এক পাবলিক পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবতে পারে? নাকি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কি স্বাস্থ্যঝুঁকির বালাই নেই? ভাবতে অবাক লাগে যে, মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা যেখানে অন্যসব পাবলিক পরীক্ষা জুনে হবে, সেখানে ৩ মাস আগে কেনো এ পরীক্ষার আয়োজন? নাকি সুস্বাস্থ্য রক্ষার প্রয়োজন এখন আর নেই? আমরা মনে করি, অন্যসব পাবলিক পরীক্ষা যেসময় অনুষ্ঠিত হবে, ওই সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হোক। কারণ, ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশে ভয়-ভীতিহীনভাবে নিরাপদে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আয়োজনের বিকল্প নেই। নতুবা মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা হয়ে উঠতে পারে, নির্ভেজাল করোনা আমদানি করতেই করোনা বাজারে সহসাই প্রবেশ! সুতরাং, সাবধান ‘সাধু’।

Continue Reading