দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে সম্প্রতি একটি একান্ত সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে অবশেষে আসামে ভারতীয় নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধন বা এনআরসি নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিনি বলেছেন, ভারতে অবৈধ অভিবাসী প্রবেশ ঠেকানো ১৯৭২ সালে করা ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির অংশ। টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে তাকে আসামের এনআরসি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নটি হচ্ছে- আসামের নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধন নিয়ে তিক্ত রাজনীতিতে বিজেপি’র বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক চাল চালার অভিযোগ ওঠেছে। যে ৪০ লাখ বাসিন্দা তালিকা থেকে বাদ পড়েছে তাদের বিষয়ে কি করা হবে?
উত্তরে মোদি বলেন, অবৈধ অভিবাসী ঠেকানো ১৯৭২ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি এবং ১৯৮৫ সালে স্বাক্ষরিত রাজিব গান্ধি-এএএসইউ চুক্তির অংশ। কংগ্রেস অবশ্য এটিকে ভোট জোগাড়ের রাজনীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে- তারা অবশ্য এমন চিন্তাতেই পারদর্শী। কিন্তু তারা এই প্রক্রিয়াটিকে সত্যিকারে বাস্তবায়ন করা থেকে বিরত রেখেছে। কংগ্রেসের রাজনৈতিক ইচ্ছা ও সাহসের অভাব ছিল। তারা দেশের প্রতি অপরাধমূলক অবহেলার দায়ে দোষী।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে এনআরসি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল কংগ্রেস।
তিনি বলেন, ভারতের জনগণের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল এনআরসি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। এটা রাজনীতির বিষয় নয়, মানুষের বিষয়। আমরা সুপ্রিম কোর্টের সকল নির্দেশনা মেনে চলছি। আদালত যে প্রক্রিয়াগত স্বচ্ছতা বজায় রাখার কথা বলেছে, তাও অনুসরণ করছি। যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তা নিছকই একটি খসড়া তালিকা।’
বিজেপি নেতা বলেন, আমি নিশ্চিত সমস্ত ভারতবাসীই এ কথা মানবেন যে, সার্বভৌমত্ব এবং নাগরিকত্বের প্রশ্নটি যে কোনও দেশের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা এ বিষয়ে সম্পূর্ণ অকারণে বিতর্ক তুলছেন, তাদের বোঝা দরকার, এই গোটা প্রক্রিয়ার তাৎপর্য ঠিক কোথায়। তাদের এটাও মনে রাখা দরকার, গোটা কাজটির দিকেই কিন্তু নজর রাখছে সুপ্রিম কোর্ট।
মোদি আরো বলেন, এটা হাস্যকর যে, আমাদের বিরোধীদের প্রধান বিচারপতির ওপর কোন ভরসা নেই। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে চলমান প্রক্রিয়ার ওপরও ভরসা নেই। এটা কেবলই জাতীয় স্বার্থের একটি বিষয়। জাতীয় স্বার্থের ব্যাপারে রাজনীতির কোন স্থান নেই।
এদিকে, এএনআই’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোদি বলেছেন, তালিকা থেকে একজন ভারতীয়ও বাদ পড়বে না।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আসামের এনআরসি তালিকার চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হয়। সে তালিকা থেকে রাজ্যের ৪০ লাখ বাসিন্দার নাম বাদ পড়েছে। দেশজুড়ে এ নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।