নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে এক্ষেত্রে আবেদন করতে হবে। যদি নিহতের পরিবারের কারো আপত্তি থাকে সেক্ষেত্রে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।
এসি বিস্ফোরণের ঘটনার পর শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আহত ও নিহতদের ব্যক্তিদের দেখতে এসে এসব কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জায়েদুল আলম।
তিনি বলেন, এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ মিলে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার যেভাবে চাইবে আমরা সেভাবেই মরদেহ হস্তান্তর করবো। নিহতদের মরদেহ শাহবাগ থানা পুলিশের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে।
এসপি জায়েদুল আলম বলেন, আমরা ঘটনাস্থল (মসজিদ) পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে পরীলক্ষিত হয় সেখানে এসি বিস্ফোরণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মসজিদের মোট ছয়টি এসি ছিল। সবগুলো এসিই বিস্ফোরণ হয়। এতে মসজিদের সবগুলো জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। আগুনে মসজিদের সিলিং ফ্যানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনাস্থলে মানুষের রক্ত মাংস ও চামড়া লেগে থাকতে দেখা গেছে।
আহত ও নিহত ব্যক্তির স্বজনদের সহায়তার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে হাসপাতালে একটি হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। আমরা শুক্রবার রাত থেকেই তাদের সহায়তা দিচ্ছি। এ ঘটনায় শনিবার দুপুর পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যারা আহত হয়েছেন, তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, এসি বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ), তিতাস গ্যাস, বিদ্যুৎ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের এক জন স্টেশন অফিসার রয়েছেন। মসজিদের কী কারণে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো সেটি বের করার চেষ্টা চলছে। এদিকে মসজিদের নিচে তিতাস গ্যাসের লাইন রয়েছে। যা টাইলস দিয়ে ঢাকা ছিল। এ মুহূর্তে বিস্ফোরণের সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না।
এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩০৪ ধারায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান এসপি জায়েদুল।
এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত ১২ জন হলেন- রিফাত (১৮), মোস্তফা কামাল (৩৪), জুবায়ের (১৮), সাব্বির (২১), কুদ্দুস ব্যাপারী (৭২), হুমায়ুন কবির (৭০), ইব্রাহিম (৪৩), মোয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), জুবায়ের (৭) ও রাসেদ (৩৪)।
এর আগে শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।