সোনাইমুড়ী প্রতিনিধি: সোনাইমুড়ীতে বক্তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন হিজবুত তাওহীদের নোয়াখালী জেলা কমিটির সভাপতি গোলাম কবির। রবিবার বেলা ১১ টার দিকে সোনাইমুড়ী থানার ওসি বকতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ওয়াজ মাহফিলে ধর্মীয় বক্তারা ভিন্ন মতাবলম্বীদেরকে কাফের ফতোয়া দিয়ে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সোনাইমুড়ির রামপুর ইসলামিয়া কওমী মাদ্রাসার আয়োজিত একটি ওয়াজ মাহফিলে রেজাউল করিম আবরার নামক জনৈক বক্তার উস্কানিমূলক বক্তব্যের পর এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
এলাকাবাসী জানান, উক্ত ধর্মীয় বক্তা ওয়াজের একটি পর্যায়ে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ফতোয়া ও হুমকি দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। মাহফিলের বাইরেও অনেকদূর পর্যন্ত তার দিয়ে বহু সংখ্যক মাইক সংযুক্ত করা হয়। পার্শ্ববর্তী গ্রাম পোরকরায় হেযবুত তওহীদের বেশকিছু সদস্য বসবাস করে। এ উস্কানিমূলক ওয়াজের ঘটনায় তারা বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
হেযবুত তওহীদ সদস্য কামাল হোসেন এ বিষয়ে বলেন, “আমি ওয়াজটি শুনেছি। সেখানে মওলানা রেজাউল করিম আবরার হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন বইয়ের খণ্ডিত অংশ তুলে ধরে সেগুলোর অপব্যাখ্যা করেন এবং মানুষকে আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুল ধারণা প্রদান করেন। গত আট বছর আগে ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ আমাদের উপর হামলা করা হয়। হামলার পটভূমি নির্মাণের জন্য এর আগে থেকে এলাকায় এরকম উস্কানিমূলক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। হেযবুত তওহীদকে খ্রিষ্টান বলে, আমাদের মসজিদকে গির্জা বলে গুজব রটিয়ে তারা ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করেছিল। হামলাকারীরা আমাদের বাড়িঘর ধ্বংস করে দেয়, আমাদের দুইজন সদস্যকে নির্মমভাবে জবাই করে হত্যা করে, আমাদের মসজিদ গুড়িয়ে দেয়। সেই ঘটনার বিচার আজও আমরা পাই নি, মামলা আজও চলমান রয়েছে। ওয়াজকারীরা ওয়াজ করে টাকা নিয়ে চলে গেছে। তাদের উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে নিরীহ নির্দোষ মানুষ প্রাণ হারায়, সর্বশান্ত হয়। ওয়াজকারীর কিছু হয় না।”
মাহফিল আয়োজনকারী রামপুর ইসলামিয়া কাউমি মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলেন, “বক্তা কোরআন ও হাদিসের আলোকে বক্তা বক্তব্য রাখেন। তবে পরে উস্কানিমূলক কিছু বক্তব্য প্রদান করায় ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।”
হিজবুত তওহীদের নোয়াখালী জেলা কমিটির সভাপতি গোলাম কবির জানান, বক্তা তাদের সংগঠন নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে। তিনি লিখিত অভিযোগ থানায় দায়ের করেছেন। এছাড়াও তিনি স্বাক্ষর করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এর প্রতিবাদে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।
সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত ( ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওয়াজ মাহফিল চলাকালীন সময়ে ফোনের মাধ্যমে খবর পাই। পরে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।