জাতীয়

কি ঘটেছিলো কুমিল্লার পূজামণ্ডপে?

Published

on

বিডিপি ডেস্ক:
কুমিল্লার ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১১ জেলায় হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছেন শতাধিক অভিযুক্ত। গত বুধবার সকালে কুমিল্লায় ‘কোরআন অবমাননার’ খবর স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন জেলায় উত্তেজনা ছড়ায় ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনার জেরে ওইদিন রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৪ জন মারা যায়।

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন গত বুধবার খুব ভোরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর আসে যে নানুয়ারদীঘির পূজামণ্ডপের ভেতরে প্রতিমার পায়ের কাছে একটি কোরআন রাখা আছে। খবর পেয়েই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান।

পুলিশ সেখান থেকে কোরআন নিয়ে আসেন। কিন্তু দশটা নাগাদ একটি ছবি ব্যাপক ভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়াতে থাকে যেখানে দেখা যায় প্রতিমার হাঁটুর কাছে কোরআন। অনেকে এটি দিয়ে নানা ধরণের লাইভ বক্তব্য দিয়ে কোরআন অবমাননার অভিযোগ করতে থাকেন।

স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেছেন বেলা ১১ টার দিকে হঠাৎ কোরআন অবমাননা হয়েছে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে শহর জুড়ে।সকালে নানুয়ারদীঘির মণ্ডপে কোরআন নজরে পড়লে দ্রুত পুলিশকে জানানো হয় এবং পুলিশ তখনি এসে কোরআনটি সরিয়ে নেয়।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু খবরটি খুব দ্রুত ছড়ানো হয় এবং কয়েকটি মাদ্রাসার লোকজন ছাড়াও স্থানীয় অনেকে প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে সেখান থেকে মণ্ডপ গুলোতে হামলা করা শুরু হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা গেলেও সেগুলো কোথায় হয়েছে তা বোঝা যায়নি।

এদিকে ঘটনার পরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোরআন অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে ব্যাপক প্রচার শুরু হয় এবং অনেকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনেকে ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করেন।

পূজা উদযাপন পরিষদের কুমিল্লা জেলা ইউনিটের সম্পাদক নির্মল পাল বলছেন খুব ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে। তিনি বলেন, পূজা বানচালের জন্য পরিকল্পিতভাবে কোরআন রেখে এ ঘটনা ঘটিয়ে তারাই এখন শহরজুড়ে পূজাবিরোধী বিক্ষোভ করছে। কয়েকটি মণ্ডপে হামলার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু পুলিশের বাধায় ভেতরে ঢুকতে না পারলেও গেইট বা সামনের স্থাপনা ভাংচুর করেছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা জানিয়েছেন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে কুমিল্লায় অনেকগুলো পূজামণ্ডপে উৎসব চলছিলো। কিন্তু আজ যেই মণ্ডপে কোরআন পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে সেখান থেকে প্রতিমা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ব্যবস্থাপকেরা জানিয়েছেন পূজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বিসর্জন দিয়ে দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version