সম্প্রতি জাতিসংঘ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর দেশটির সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্যাতন ও গণহত্যার উপর একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কিন্তু এই তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে মিয়ানমারের এক মুখপাত্র বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ভুয়া অভিযোগ তুলেছে।
সোমবার রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সেনাপ্রধান ছাড়াও দেশটির সেনাবাহিনীর আরো পাঁচ জ্যেষ্ঠ কমান্ডারকে বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করে জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানী মিশন। রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে এটাই ছিল জাতিসংঘের সবচেয়ে স্পষ্টতম নিন্দা প্রকাশ ও নির্যাতনকারীদের বিচারের প্রতি আহবান জানানোর ঘটনা।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, রাখাইন থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে গণহত্যার মাধ্যমে উৎখাত করা হয়েছে৷ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সেখানে হত্যা, ধর্ষণ, শিশুদের ওপর নির্যাতনসহ নানা ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে৷ এছাড়া মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিং অং হ্লাইং ছাড়াও সেনাবাহিনীর আরো পাঁচজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডারকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের সুপারিশও করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে৷
কিন্তু মিয়ানমার সরকার প্রতিবেদনটিতে উল্লেখিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সরকারের মুখপাত্র জ হতে বুধবার রাষ্ট্র পরিচালিত গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, আমরা মানবাধিকার পরিষদের করা কোন তদন্ত মেনে নিচ্ছি না।
তিনি বলেন, মিয়ানমার জাতিসংঘের তদন্তকারীদের প্রবেশ করার অনুমোদন দেয়নি। আর এজন্যই আমরা মানবাধিকার পরিষদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই ও তা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি জানান, মিয়ানমার মানবাধিকার লঙ্ঘন সহ্য করে না এবং তারা জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করা ভুয়া অভিযোগের জবাবে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে।
হতে বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোন ঘটনা যদি ঘটে থাকে, তাহলে আমাদের মজবুত প্রমাণ দিন, রেকর্ড দিন ও তারিখ দিন, যাতে করে আমরা নিয়ম-নীতি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে পারি।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের প্রতিবেদন নিয়ে এটাই মিয়ানমারের পক্ষ থেকে প্রথম প্রতিক্রিয়া।
এদিকে, জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি প্রকাশের দিন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জেনারেল মিন অং হ্লাইং ও অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের ফেসবুক একাউন্ট বন্ধ করে দেয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির কর্তৃপক্ষ।