Highlights

দেশজুড়ে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত, বিপর্যস্ত জনজীবন

Published

on

উত্তরাঞ্চলসহ দেশজুড়ে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। হাড়কাঁপানো শীতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। কোথাও কোথাও দিনের শেষে বিকেল থেকে বাড়তে থাকে হিমেল হাওয়া ও কুয়াশা। সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়তে থাকে। সকাল থেকে সন্ধ্য পর্যন্ত কুয়াশা পড়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা।

এদিকে চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মঙ্গলবার সিলেটের শ্রীমঙ্গলে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তিন দিন ধরেই সিলেট অঞ্চলে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রয়েছে। এই অঞ্চলসহ আরও কিছু জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। ধীরে ধীরে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের দিকে এগোচ্ছে দেশ।

আবাহওয়া অফিস সূত্র জানায়, কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা যদি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামে তখন সেই অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ চলছে বলে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬-৮ ডিগ্রিতে থাকলে তাকে মাঝারি এবং ৬-এর নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। সিলেটে তাপমাত্রা মাত্র ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমলেই চলতি শীতে প্রথমবারের মতো মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে।

এদিকে পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। দিনের শেষে বিকেল থেকে বাড়তে থাকে হিমেল হাওয়া ও কুয়াশার সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ভোর থেকে বেলা ১১টার সময়েও দেখা মিলছে না সূর্যের। রাত বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টির মতো ঝড়ছে কুয়াশা। এমন কনকনে ঠান্ডায় চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া তেঁতুলিয়ার মানুষ। বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মধ্যরাত থেকে দিন ১১টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে চারদিক। ফলে এসময় হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হয়। শীতের কারণে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে শিশু ও বয়স্কদের। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর আধিক্য। জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া সমস্যা নিয়ে রোগীরা হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। এমনিতে শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই এ সময়টাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা পাওয়া যাবে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, বুধবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, উত্তরের হিমেল হওয়া ও তীব্র শীত জেঁকে বসেছে ফরিদপুরে। আর এই শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। গরমের কাপড়ের চাহিদাও দেখা দিয়েছে। সাথে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ।

টানা দুই দিন সূর্যের দেখা নেই এ জেলাতে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা। হাড় কাঁপানো বাতাসে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসছে। বৃদ্ধ ও ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে কষ্ট নেমে এসেছে। দিনমজুর ও কৃষকও পড়েছেন বিপাকে। চাকরিজীবী ও জরুরি কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না মানুষ। রিকশা ও অটোরিকশার সংখ্যা সড়কে কম দেখা যাচ্ছে। মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলতে দেখা গেছে।

ফরিদপুরের আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বুধবার (০৪ জানুয়ারি) ফরিদপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩.০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতিদিনই তাপমাত্রা কমছে।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে। অব্যাহত হিমেল হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। বুধবার (৪ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানান, শীত আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। বুধবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৯ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version