Highlights

পলিসেডে স্বপ্ন বুনছেন সোনাইমুড়ীর কৃষকেরা

Published

on

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলছে ভাদ্র মাস। বৃষ্টির কারণে চারিদিক থৈ-থৈ। নিচু জমিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নোয়াখালী সোনাইমুড়ীর অধিকাংশ কৃষক এই মৌসুমে অলস সময় পার করেন। তবে সরকারের বেতিক্রমী উদ্যোগ আর সোনাইমুড়ী কৃষি কর্মকর্তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পাল্টাতে শুরু করেছে এই এলাকার কৃষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। প্রয়োজনীয় পরামর্শ, হাতে কলমে প্রশিক্ষণ আর প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে বৃষ্টি মৌসুমেও আগাম সবজি চাষ করছেন এই এলাকার কৃষকেরা। পলিসেড পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে শীতকালীন টমেটো, ধনিয়াপাতা, মুলা, লালশাক সহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদনের মাধ্যমে আগাম সবজি চাষের আশার আলো দেখছেন তারা।

জানা যায়, ২২-২৩ অর্থ বছরে নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ উপজেলায় পলিসেড প্রযুক্তিতে সবজি চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে সোনাইমুড়ী উপজেলার পোরকরা, রথী, জয়াগ, ভানুয়াই ও পৌরসভা এলাকায় রয়েছে এই প্রকল্পের বেশ কয়েকটি প্লট। এই প্রকল্পের প্রতি ৫ শতক জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। সেড নির্মাণের উপকরণ হিসেবে সিমেন্টের পিলার, উন্নত মানের পলিথিন, সার, বীজ, কীটনাশক সহ সকল প্রকার পরামর্শ সেবা পাচ্ছেন কৃষকেরা।

উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়নের রথী গ্রামের প্রবীণ কৃষক আবদুল হাকিম। সোনাইমুড়ী কৃষি কর্মকর্তার সহায়তায় তিনি এবারই প্রথম বৃষ্টি মৌসুমে সবজি চাষাবাদ করছেন। পাঁচ শতক জমিতে লাগিয়েছেন, লালশাক, ধনিয়া, টমেটো ও পালংশাক। নতুন এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ সম্পর্কে আবদুল হাকিম বলেন, “আমি যেগুলো চাষ করছি তার সবই শীতকালীন সবজি। পলিসেডের মাধ্যমে এই প্রথম বৃষ্টিকালেও সবজি চাষ করছি। আশা করছি সামনের ভালো ফসল উৎপাদন হবে। শীতের আগাম সবজি বিক্রি করে ভালো দাম পাবো।”

এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে চাষাবাদ করা আরেক তরুন কৃষকের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। তিনি ভানুয়াই গ্রামের বাসিন্দা। গত পাঁচ বছর থেকে কৃষিকাজ করছেন। তিনি জানান, কিছুদিন পূর্বে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার আয়োজিত একটি কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করেছিলেন। সেখান থেকে আগ্রহী হয়ে কৃষি কর্মকর্তার সহায়তার পলিসেডে চাষাবাদ শুরু করেন। বর্তমানে পাঁচ শতক জমিতে ধনিয়া চাষ করছেন, ফলন বেশ ভালো হয়েছে। একদিকে বৃষ্টির পানি ফসলের ক্ষতি করতে পারছেনা অন্যদিকে বাজারে ধনিয়া পাতার চাহিদা থাকায় ভালো দাম বিক্রি করতে পারছেন।

নতুন এই পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, এই এলাকার কৃষকদের জন্য পলিসেড পদ্ধতি একেবারেই নতুন। পলিসেডের মাধ্যমে বৃষ্টির মৌসুমেও সবজি চাষ করা যাবে। একটি সেড প্রায় চার বছর অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবেন কৃষকেরা। এই পদ্ধতির মাধ্যমে বৃষ্টির ভেতরে শীতকালীন সবজি চাষের মাধ্যমে কৃষক আর্থিক ভাবে লাভবান হতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, “এই পদ্ধতির মাধ্যমে যাতে কমখরচে বিনা ঝুঁকিতে কৃষক আর্থিক ভাবে লাভবান হতে পারেন সেজন্য আমরা সার্বিক ভাবে সব ধরনের সহায়তা ও পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা আশাবাদি সামনে এই পদ্ধতির সুফল দেখে এই এলাকার কৃষকেরা নতুন এই পদ্ধতির প্রতি আগ্রহী হবেন। ফলে আরও অধিক জমি চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version