ফিচার

মরিচ চাষে কাউনিয়া চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদল

Published

on


মিজান,কাউনিয়া প্রতিনিধিঃ
কাউনিয়ায় তিস্তার চরে এখন মরিচের সমারোহ, দামও ভালো। তাই কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ওরা বলছে ‘মরিচ চাষ হামার ভাগ্য বদলে দিছে।’

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত ২৯টি চর এখন মরিচ ক্ষেতের ঘণ সবুজে ঘেরা মরিচের সমারোহ। চারিদিকে জমি গুলোতে শোভা পাচ্ছে নানা জাতের কাচা-পাকা মরিচ। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারে মরিচ চাষ করে কৃষকেরা ভালো দাম পেয়ে দারুণ খুশি। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে কাউনিয়ার মরিচ যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে বলেও জানায় কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর ৮৫ হেক্টর বেশি জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪’শ হেক্টর কিন্তু চাষ হয়েছে ৪’শ ৬০ হেক্টর জমিতে। অধিকাংশ মরিচ ক্ষেতই হলো তিস্তা নদীর জেগে ওঠা চরে।

সরেজমিনে উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলের গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে চর নাজির দহ, চর পল্লীমারী, চর চতুরা, প্রাণনাথ চর, চর আরাজী হরিশ্বর, বল্লভবিষু, চর সাব্দী, গোপী ডাঙ্গা, চর পাঞ্জরভাঙ্গা, চর গদাই, চর ঢুষমারা, পূর্ব নিজপাড়া, চর গনাই, চর হয়বৎখাঁ, চর আজমখাঁ, চর রাজীবসহ তিস্তা নদীর কোল ঘেষা চর গুলোতে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিস্তার চরাঞ্চলে পলি ও উর্বর দোআঁশ মাটিতে ফলন ভালো ও অধিক দাম পাওয়ায় চাষীরাও বেজায় খুশি।

চর আরাজী হরিশ্বর এলাকার কৃষক সোহরাব হোসেন জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচের দাম ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা হওয়ায় ভালো লাভ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘মুঁই দেড় দোন (৩৬ শতক) জমিত মরিচ আবাদ করি খরচ হইছে ১৭ হাজার টাকা আর মরিচ বেচানু ৩৯ হাজার টাকা।’

একই কথা জানালেন বল্লভবিষু চরের কৃষক আব্দুল মালেক ও জগদীশ চন্দ্র। তারা জানান, ‘তিস্তার চরে মরিচ চাষ হামার ভাগ্য বদলে দিছে, এলা হামার সংসারোত অভাব নাই।’ আর প্রাণনাথ চরের কৃষক কোরবান আলী জানান, তাদের ক্ষেতের উৎপাদিত মরিচ স্থানীয় হাট-বাজারের চাহিদা মিটিয়ে জেলা শহর থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত রফতানি হচ্ছে।

এদিকে উপজেলার ভায়ার হাট, খানসামা হাট, শহীদবাগ হাট, টেপামধুপুর হাট এবং তপিকল হাট ঘুরে দেখা গেছে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি দেদারছে কেনাবেচা হচ্ছে মরিচ।

এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষকদের সার্বক্ষনিক ট্যাকনিক্যাল পরামর্শ দেয়ায় চলতি মৌসুমে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও তিস্তার জেগে ওঠা চরের জমিতে প্রচুর পলি পড়ায় এলাকার মাটির প্রকৃতি ও আবহাওয়া মরিচ চাষের জন্য উপযোগী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version