দেশজুড়ে

মহাদেবপুরে ফসলের সাথে এ কেমন শত্রুতা!

Published

on

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাড়শা গ্রামের বর্গাচাষী শহিদুল ইসলামের দুই বিঘা ও একই গ্রামের কৃষক খাজিম উদ্দিনের তিন বিঘা ধানখেতে রাতের আঁধারে বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে তাদের পাঁচ বিঘা জমির ধানগাছ পুড়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। ওই কৃষকদের প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ নির্মম ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দু’টির মাঝে শোকের মাতম চলছে। আর ঘটনাটিকে মানব জাতির জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় বলে আখ্যায়িত করেছে এলাকার সচেতন মহল। রাতের অন্ধকারে জমিতে আগাছা নাশক বিষ দেয়ায় গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রামবাসীরা এখন রাত জেগে জমি পাহারা দিচ্ছে।

শনিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক হৃদয বিদারক দৃশ্য। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দু’টির অধিকাংশ সদস্যের চোখে মুখে কান্নার ছাপ। এদের কারো মুখে কোনো কথা নেই। বর্গাচাষী শহিদুল ইসলাম জমিতে হাল চাষ, সার, কীটনাশক ও সেচ দেয়া সব কিছুর টাকা এনেছে এনজিও থেকে লোনের মাধ্যমে। ধান বিক্রি হবে, এনজিওর লোন পরিশোধ হবে। বাঁকি ধানে বছরের যে কয়েক মাস যায় ছেলে সন্তান নিয়ে দু’বেলা খেয়ে বাঁচবে। কিন্তু দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে সব শেষ করে দিলো। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ওই মাঠের ধান রাতের আঁধারে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, গত রবিবার বিকেলে দাড়শা বিলের ধান খেতের পাশ থেকে ঘুরে যাই। জমির ধান দেখে মন ভরে যায়। গত ২ এপ্রিল সোমবার ১১টার দিকে খবর পাই জমির ধান জ্বলে গেছে। রোদের প্রখরতা বাড়ার সাথে সাথে ধানের জ্বলা রং আরো বেশি করে বোঝা যাচ্ছে। বিকেল ৩টা নাগাদ জমির অর্ধেক ধান গাছ নতুন গজানো ধানসহ পুরোপুরি জ্বলে যায়।

অপর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক খাজিম উদ্দিন বলেন, গত ৪ এপ্রিল বুধাবার দিবাগত রাতে কে বা কাহারা রাতের আঁধারে আগাছা নাশক বিষ ছিটিয়ে আমার তিন বিঘা জমির ধান পুড়িয়ে দিয়েছে। শত্রæতা করে কেউ এসব করেছে। তিনি আরো বলেন, গত বছর আমার বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ একেএম মফিদুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত মাত্রায় আগাছা নাশক ওষুধ স্প্রে করার ফলে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত জমি পরিদর্শন করে পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version