জাতীয়

রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে তেমন কোনো আশ্বাস দেয়নি মিয়ানমার

Published

on

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নেয়া এবং রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হলেও এ বিষয়ে মিয়ানমার পক্ষ সুস্পষ্ট কোনো আশ্বাস দেয়নি।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। অপরদিকে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ওই দেশের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে।

গত বছরের আগস্টের পর প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আগে থেকেই তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ছিল। ফলে সব মিলিয়ে ১০ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে আশ্রিত আছে। তাদের ফেরত পাঠাতে গত বছরের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি সই হয়। চুক্তির আলোকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে গঠিত হয় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ।

ঢাকায় বৃহস্পতিবার হওয়া এবারের বৈঠক ছিল যৌথ ওয়ার্কিং গ্র“পের দ্বিতীয় বৈঠক। গত ১৬ নভেম্বর মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নেপিদোতে প্রথম বৈঠক হয়। তারপর বাংলাদেশ আট হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার একটি তালিকা মিয়ানমারকে দিয়েছে। মিয়ানমার তাদের মধ্যে ৮৭৮ জনের পরিচয় যাচাই করে ফেরত নেয়ার জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায়নি। প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম যুগান্তরকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্র এখনও প্রস্তুত নয়।

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, মিয়ানমার সরকারও সে দেশ থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নিতে চায়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুততর করার বিষয়ে দু’পক্ষই একমত।

তাহলে সমস্যা কোথায়? জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসলে প্রত্যাবাসনের সঙ্গে সব ধরনের সমস্যাই উঠে আসে। আজ সব দিক নিয়েই আলোচনা হয়েছে। বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’

বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে মিন্ট থোয়ে বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় যে চুক্তি হয়েছে, সে অনুযায়ী তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রত্যাবাসনের জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। সে বিষয়টিও বৈঠকে এসেছে।

প্রত্যাবাসন দ্রুততর করতে যে সমস্যাগুলো রয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে সেগুলোর মীমাংসা করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। আরেক প্রশ্নের জবাবে শহীদুল হক বলেন, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্র“পের পরবর্তী বৈঠকের তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফেরার ‘অনুকূল পরিবেশ তৈরি’ হলে তাদের প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার জন্য এপ্রিলে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সঙ্গেও একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ। ইউএনএইচসিআরের পক্ষ থেকে সে সময় বলা হয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা শরণার্থীরা যাতে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং সম্মানের সঙ্গে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারে এবং এ প্রত্যাবাসন যাতে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করে হয়, তা নিশ্চিত করতেই একটি ‘ফ্রেমওয়ার্ক’ রয়েছে ওই সমঝোতা স্মারকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version