শ্রীলঙ্কায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দায় বিপর্যস্ত হওয়ার পর খরচ কমাতে সোমবার এ উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার।
দ্য হিন্দু‘সহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে বাঁচতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ২.৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে আলোচনা করছে শ্রীলঙ্কা। তবে এক্ষেত্রে আইএমএফ শর্ত জুড়ে দিয়েছে, ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এ জন্য কমাতে হবে সরকারি ব্যয়।
আইএমএফ আরও জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কায় এখন যে সংখ্যক সরকারি পদ আছে তাও কমাতে হবে। বর্তমানে দেশটিতে ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন।
এ ছাড়া শর্ত দেওয়া হয়েছে, সব পণ্যের ওপর কর বাড়াতে হবে এবং সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠান লোকসানের মধ্যে আছে সেগুলো বিক্রি করে দিতে হবে। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ীই সরকারি চাকরিতে নতুন নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কায় একসঙ্গে ২০ হাজার সরকারি চাকরীজীবি অবসরে যান। সাধারণ সময়ে দুই হাজার ৫০০ জনের মতো অবসরে গেলেও এই মাসে সংখ্যাটি প্রায় আট গুণ বেশি ছিল।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে অবসরের বয়স ৬৫ থেকে ৬০ করার কারণেই একসঙ্গে এতগুলো পদ শূন্য হয়। যেগুলোতে নতুন করে আপাতত কোনো নিয়োগ দেওয়া হবে না। এ ছাড়া সরকারের আয় বাড়াতে শ্রীলঙ্কায় বছরের প্রথম থেকেই ব্যক্তিগত ও কর্পোরেট ট্যাক্স দ্বিগুণ করা হয়েছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে ৬৫ শতাংশ।
স্বাধীনতা লাভের পর গত বছরের এপ্রিল থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে শ্রীলঙ্কা। করোনা মহামারির কারণে পর্যটন বাণিজ্যে ধস, জাতীয় অর্থনীতি পরিচালনায় সরকারের অদক্ষতা, বিশ্বজুড়ে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি ও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্যে নেমে যাওয়ায় দেশটিতে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার ফলে খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের মতো জরুরি পণ্য আমদানি করতে হিমশিম খায় দেশটি।
কৃচ্ছ্রতা সাধন ও সরকারি ব্যয় কমিয়ে সংকট মোকাবিলার চেষ্টা করছে দেশটির সরকার।