সাজ্জাদুল ইসলাম: তিন সন্তানের জননী রাবেয়া বেগম(২২)। রিক্সা চালক স্বামীকে নিয়ে থাকেন ভাড়া ঘরে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে টেনেটুনে চলছে পাঁচ সদস্যের সংসার। প্রচন্ড শীতের মধ্যেও শিশু সন্তানদের নিয়ে ঘুমান সিমেন্টের বস্তা বেছানো মেঝেতে। অভাবের সংসারে একটি চৌকি কেনার সামর্থ্য নেই তাদের। তবে বৃহস্পতিবার(১৮ জানুয়ারী) সকালে অপ্রত্যাশিত ভাবে একটি নতুন চৌকি উপহার হিসেবে পেয়েছেন তিনি। সেটি পাঠিয়েছেন সোনাইমুড়ীতে নতুন যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা।
আরেক পঞ্চাশোর্ধ রিক্সা চালক মোহাম্মদ আমিন। বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিয়ে কৌশল্যার বাগ ভূইয়া বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তারও দিন এনে দিন খাওয়া অবস্থা। আর্থিক সংকটের কারনে ভাড়া ঘরের মেঝেতে স্ত্রীকে নিয়ে কোন রকমে রাত কাটান। তিনিও চৌকি উপহার পেয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে।
এভাবেই নীরবে প্রচার বিমুখ মানুষটি কাজ করে চলেছেন সাধারণ মানুষের জন্য। গত কয়েকদিন পূর্বে গভীর রাতে শীতার্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম্বল পৌঁছে দিয়েছেন নিজ হাতে। এসময় তিনি অসহায় মানুষ গুলোর সন্ধান পান। পরে নিজ অর্থায়নে তাদের ভাড়া বাসায় নতুন চৌকি নিয়ে পৌঁছেছেন। বৃহস্পতিবার(১৮ জানুযারী) সকালে সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা উপজেলার দুটি দুঃস্থ পরিবারের মাঝে চৌকি বিতরণ করেছেন। এর আগে তিনি নিজ অর্থায়নে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে অসহায় পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন।
এমন উপহার পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন উপকারভোগীরা। অশ্রুসিক্ত চোখে রাবেয়া বেগম বলেন, গত ৪-৫ দিন পূর্বে রাত ১২ টার দিকে কম্বল হাতে নিয়ে আমার বাসায় হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এসময় আমাকে তিনি বাচ্চাদের নিয়ে ফ্লোরে শুয়ে থাকতে দেখেন। আর আজকে দুপুরে হটাৎ দেখি উপজেলা নির্বাহী মেড্যাম আমার বাসায় চৌকি নিয়ে হাজির। আমি ম্যেডামের জন্য আল্লাহ কাছে দোয়া করবো।
এ বিষয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা জানান, প্রচার নয় মানুষের কল্যানে কাজ করাই তার মূল লক্ষ্য। এজন্য নিজ অর্থায়নে মানুষকে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি প্রচারে আনতে আগ্রহী নন তিনি।