অাগামী ১৫ এপ্রিল সৌদি আরব ও ১৬ এপ্রিল ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ‘গাল্ফ শিল্ড ওয়ান’ শীর্ষক এক সামরিক মহড়ার সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সৌদি আরব যাবেন। সামরিক মহড়ার সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে ১৬ এপ্রিল লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি ১৮ এপ্রিল কমনওয়েলথের বৈঠকে যোগ দেবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে লন্ডনে বৈঠক হওয়ার আশা করছি। তিনি বলেন, ‘তবে এখনও সময় নির্ধারিত হয়নি। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হবে কি না জানতে চাইল তিনি বলেন, ‘সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।’ রোহিঙ্গা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসবে এবং এখান থেকে তারা মিয়ানমারে যাবে।’
রোহিঙ্গা বিষয়ে রাশিয়ার অবস্থানে বাংলাদেশ সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সন্তুষ্ট। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সবাই আছে। তারা যখন আসবে, তখন আলাপ করা যাবে।’ কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনের আগে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনা হয়েছে এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে কমনওয়েলথ সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথমবার সংহতি প্রকাশ করেছে।
সৌদি আরবের সামরিক মহড়ার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘১৬ এপ্রিল সৌদি আরবের ইস্টার্ন প্রভিন্সের আল জুবাইল নামক স্থানে গালফ শিল্ড-আই শীর্ষক যৌথ সামরিক মহড়ার সমাপনী ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রোববার দেশটি সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
সৌদি আরবের বাদশাহ ও পবিত্র দুই মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক সালমান বিন আবদুল আজিজ আল-সৌদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ সামরিক মহড়ার সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করে তাতে যোগদানের উদ্দেশে রোববার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ঢাকা থেকে সরাসরি দাম্মাম যাবেন তিনি।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বন্ধুপ্রতিম ২৩টি রাষ্ট্রের অংশগ্রহণে গালফ শিল্ড-আই শীর্ষক এক মাসব্যাপী যৌথ সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে। ১৮ মার্চ এ মহড়া শুরু হয়। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।
আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান, যা প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও দক্ষ কূটনৈতিক তৎপরতায় সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আরও জোরালো ও বহুমুখী হয়েছে। আবহমান ধর্মীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের পাশাপাশি সামরিক ক্ষেত্রেও সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সম্প্রসারিত হচ্ছে।
ইতিপূর্বে বাংলাদেশ সৌদি নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী ইসলামী সামরিক জোটে অংশগ্রহণ করেছে এবং এবার গালফ শিল্ড-আই মহড়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি থেকেই সৌদির এই সামরিক জোটে বাংলাদেশ যোগ দিয়েছে। এখানে বাধ্যবাধকতার কিছু নেই। পবিত্র দুই মসজিদ (মক্কা ও মদিনা) যদি কখনও আক্রান্ত হয়, তাহলে আমরা সৈন্য পাঠাব।