জাতীয়

আজ থেকে যাত্রা শুরু করলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ বার্ন ইনস্টিটিউট

Published

on

আজ থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন চাঁনখারপুলে নির্মিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’র যাত্রা শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১৮ তলাবিশিষ্ট এই ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন করেন। অত্যাধুনিক এই ইনস্টিটিউট থেকে পোড়া রোগীরা বিশ্বমানের চিকিত্সা সেবা পাবেন। একই সঙ্গে প্লাস্টিক সার্জন তৈরি হবে। যাদের দিয়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে পৃথক বার্ন ইউনিট স্থাপন করা হবে। এতে পোড়া রোগীরা হাতের কাছেই পাবেন সুচিকিত্সা।

বর্তমানে দেড় কোটি মানুষের জন্য একজন প্লাস্টিক সার্জন রয়েছেন। বছরে প্রায় ১০ লাখ লোক আগুনে পুড়ে যাওয়ার শিকার হয়। তাদের ৮০ ভাগেরই প্লাস্টিক সার্জারির প্রয়োজন হয়। পোড়া ও প্লাস্টিক সার্জারির চিকিত্সা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। পোড়া রোগীদের কারো কারো হাত, পা, শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ বেঁকে যায়। এক্ষেত্রে তাদের প্লাস্টিক সার্জারি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এই সার্জারি করার পর তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। পোড়া হতে এবং প্লাস্টিক সার্জারির আগ পর্যন্ত রোগীদের কি যে দুর্বিষহ অবস্থা তা চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। তবে পোড়া রোগীদের প্লাস্টিক সার্জনের অধীনে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত চিকিত্সা প্রদান করা হলে এক্ষেত্রে প্লাস্টিক সার্জারির প্রয়োজন খুব কম হয়। এছাড়া ঘটনা-দুর্ঘটনায় আহতদের অনেকেই প্লাস্টিক সার্জারির প্রয়োজন হয়। ক্যান্সার সার্জারি, স্তন ক্যান্সার সার্জারি ও সংক্রমণের কারণে হাতের সার্জারির ক্ষেত্রে প্লাস্টিক সার্জারির প্রয়োজন পড়ে। জন্মগত ত্রুটি, ঠোঁট কাটা, তালু কাটাদেরও প্লাস্টিক সার্জারির প্রয়োজন হয়। এছাড়া প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে জীবিত ও মৃত ব্যক্তিদের স্কিন সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে। যার নাম স্কিন ব্যাংক। পোড়া কোনো রোগীর স্কিন প্রয়োজন হলে সেখান থেকে স্কিন গ্রাফটিং করার জন্য নেয়া হয়।

আকাশ ছোঁয়া ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল’ ভবনটি তিনটি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। একদিকে থাকবে বার্ন ইউনিট, অন্যদিকে প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট আর অন্য ব্লকটিতে করা হবে অ্যাকাডেমিক ভবন। এই ইনস্টিটিউটে হেলিপ্যাড সুবিধা রয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো কোনো সরকারি হাসপাতালে হেলিপ্যাড সুবিধা রাখা হলো। ইনস্টিটিউটটিতে ৫০০টি শয্যা, ২০টি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, ৬০টি এসডিইউ, সর্বাধুনিক ১২টি অপারেশন থিয়েটার ও পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড রয়েছে। ব্যথা ও জীবাণুমুক্ত ড্রেসিং রুমও রয়েছে। সবগুলোই অত্যাধুনিক। এখানে নার্স ও প্যারামেডিক্যাল প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটসহ সারাদেশে মোট ১৪টি হাসপাতালে বার্ন ইউনিট রয়েছে। তবে ঢাকার বাইরেরগুলো নামমাত্র। পূর্ণাঙ্গ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি শুধু ঢাকায়। এ কারণে সারাদেশ থেকে পোড়া রোগীরা ঢাকায় আসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version