বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা হচ্ছি ঘর পোড়া গরু। আমরা প্রতি মুহূর্তে দেখতে পাচ্ছি কী হচ্ছে দেশে। কোনো ঘটনাই ঘটেনি অথচ পাঁচ লাখ আসামি। এই সরকার আসার পর থেকে আমাদের আসামি ২৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মামলার সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তবে হতাশ হলে চলবে না। খারাপ দিন চলে যায়। আর আন্দোলন করেই সুদিন ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আপনাদের এখনো সময় আছে। শেষ সময় হয়নি এখনো। উপলব্ধি করার সময় আছে। যিনি আপনাদের রক্ষাকর্তা, সেই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। একমাত্র তিনি আপনাদের মুক্তি দিতে পারবেন। তাকে মুক্ত করুন, আলোচনা করুন। সংলাপে বসুন। সকলের অংশগ্রহণে কিভাবে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে তা নিয়ে আলোচনা করুন। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। জনগণকে জিম্মি করে কিছুদিনের জন্য ক্ষমতায় থাকা যায়। চিরদিনের জন্য নয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ পাসের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, এই সরকারের কোনো আইন আমরা মানি না। কারণ তারা অবৈধ সরকার। সংসদে আইন পাস করার কোনো বৈধতা তাদের নেই। তারা একটি প্রতারক সরকার। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন সম্পূর্ণভাবে ধূলিসাৎ করে আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে।
জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ শুরু করেছেন জানিয়ে ফখরুল বলেন, তবে আমরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আগেই জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে আছে। প্রতিটি দিক, কর্নার থেকে একটাই আওয়াজ আসছে, ‘আপনারা উঠে দাঁড়ান, বুকে যে পাথর চেপে বসেছে, তাকে সরান। আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাব। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে নিতে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাব। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ায় সাংবাদিকসহ সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। দেশে যে কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে, তাকে চূড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সেই চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে ধূলিসাৎ করে দেয়া হচ্ছে গণতান্ত্রিক, মুক্ত স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ভেঙে ফেলা হচ্ছে আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি বহু মত, বহু পথ, ভিন্ন মতের ব্যবস্থাকে পুরোপুরি শেষ করে দিয়ে একটি দলের শাসন বাস্তবায়নের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। এভাবে চলতে দেয়া যায় না। দেশের সবাইকে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
ফখরুল বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করে বললেন, তাদের আপত্তির বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা করে সংশোধনের চেষ্টা করবেন। কিন্তু একবারে কাছেই গেলেন না। উনি (প্রধানমন্ত্রী) দেশে এসে বললেন, যারা মিথ্যা প্রচার করবে তাদের জন্য সমস্যা। এই আইন মিথ্যা কথা যারা বলে তাদের জন্য। সরকার তাদের কথা রাখেনি। বিশেষ ক্ষমতা আইন, ৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ, বাকশাল কায়েমের কথা আমরা ভুলে যাইনি। এরাই তো গত ১০ বছর ধরে একটার পর পর একটা আইন তৈরি করে চাপিয়ে দিয়েছে।