Highlights

ইউনিয়ন ব্যাংকের ভল্টে ১৯ কোটি টাকার গড়মিল পেল পরিদর্শক দল

Published

on

নিউজ ডেস্ক:
বেসরকারি ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় সংলগ্ন গুলশান শাখার ভল্ট থেকে ১৯ কোটি টাকা উধাও হয়েছে। গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল এমন তথ্য উদ্ঘাটন করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং পরিদর্শন বিভাগ ৭ -এর এক যুগ্ম পরিচালকের নেতৃত্বে একটি দল ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখা পরিদর্শনে যান। সকাল ১০টার আগেই তারা শাখায় গিয়ে উপস্থিত হন। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী শুরুতেই তারা ভল্ট পরিদর্শন করেন। কাগজে-কলমে শাখার ভল্টে ৩১ কোটি টাকা দেখানো হলেও পরিদর্শক দল সেখানে ১২ কোটি টাকা পান। তাৎক্ষণিকভাবে এর কোনো জবাব দিতে পারেননি শাখার কর্মকর্তারা।

সূত্র জানায়, ভল্টের টাকার গরমিল বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত ব্যাংকটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক থেকেও বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়নি। তবে ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন দল পরিদর্শনে গিয়ে ইউনিয়ন ব্যাংকের ভল্টের টাকা ঘোষণার সঙ্গে মিল পায়নি। এ বিষয়ে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী, ভল্টের চাবি থাকে দুজনের কাছে। শাখা ব্যবস্থাপক, শাখা পরিচালনা ব্যবস্থাপক, ক্যাশ ইনচার্জ ও ক্যাশ অফিসার—এ চার পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে যেকোনো দুজনের কাছে চাবি থাকবে। দুজনের উপস্থিতি ও চাবি ছাড়া ভল্ট খোলা ও বন্ধের সুযোগ নেই। প্রতিদিন লেনদেন শেষে ঠিক কত টাকার কতটি নোট ভল্টে জমা রাখা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট রেজিস্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করতে হয়। সেই খাতাও থাকে ভল্টের ভেতরে। টাকার হিসাব মেলার পর কর্মকর্তারা প্রতিদিন ওই রেজিস্টারে স্বাক্ষর করেন। তাই ভল্টের টাকার গরমিলের সুযোগ কম। শাখা ব্যবস্থাপক ও প্রধান শাখার কর্মকর্তারা হঠাৎ হঠাৎ ভল্ট পরিদর্শন করে টাকার হিসাব মিলিয়ে দেখেন। গরমিল পাওয়া গেলে দায়িত্বপ্রাপ্তদের জবাবদিহি করতে হয়। সন্তোষজনক জবাব পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলার বিধান রয়েছে।

ইউনিয়ন ব্যাংকের ২০২০ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ব্যাংকটিতে আমানতের পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানতই ৪ হাজার ১২৭ কোটি টাকা। ওই বছর শেষে ব্যাংকটির বিনিয়োগ (ঋণ) ছিল ১৬ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। গত বছর ব্যাংকটি ৯৮ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। গত বছর ব্যাংকটির শাখা ছিল ৯৫টি।

ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যাংকটিকে সম্প্রতি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ব্যাংকটি ৪২ কোটি ৮০ লাখ সাধারণ শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৪২৮ কোটি টাকা পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলন করবে। প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version