নিউজ ডেস্ক:
আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর আফগানরা দেশ ছাড়তে কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছে তারই এক বিস্ময়কর চিত্র ফুটে উঠেছে একটি মার্কিন কার্গো বিমানের ছবিতে।
এতে দেখা গেছে, গাদাগাদি, ঠাসাঠাসি করে বিমানে বসে আছে শত শত আফগান নারী-পুরুষ ও শিশু। কেউ ব্যাগপত্র ধরে রেখেছেন, কেউ শিশু সন্তানকে বুকে আঁকড়ে রেখেছেন, বিমানের মেঝেতে যে যেখানে জায়গা করতে পেরেছেন সেখানেই বসে পড়েছেন।
কাবুল বিমানবন্দর থেকে মার্কিন কার্গো বিমান সি-১৭ গ্লোবমাস্টারের ফ্লাইটে রোববার প্রায় ৬৪০ আফগান নাগরিক এভাবেই চড়ে বসেন বলে জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। বিমানের ভেতরকার এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ যাবৎ সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমানে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যক যাত্রী বহনের ঘটনা। আদতে এই বিমানের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ১৩৪ জন। সেখানে বিমাটিতে ৬ শতাধিক যাত্রীর বোঝা বহন করা ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু আতঙ্কগ্রস্ত আফগানরা এর কোনও তোয়াক্কা না করেই তাতে চড়ে বসেন।
বিমানটি এমনভাবেই আকাশে পাখা মেলে উড়ে গেছে। ক্রুরা এই পরিমাণ যাত্রীর বোঝা নিয়েই উড়ার সিদ্ধান্ত নেন। আফগানিস্তান থেকে এই বিমান প্রাথমিকভাবে কাতারের উদ্দেশে যাত্রা করে। সেখানে যাত্রীদের নামিয়ে আবার ফিরে গিয়ে দ্বিতীয় দফায় যাত্রী নিয়ে আসার কথা রয়েছে বিমানটির।
কেবল বিমানে মানুষের গাদাগাদিই নয়, কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির আরও কয়েকটি ছবি ও ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। সোমবারও কাবুল বিমানবন্দর থেকে মার্কিন সামরিক বিমান ছেড়ে যাওয়ার সময় নজিরবিহীন দৃশ্যের অবতারণা হয়।
বিমান ওড়ার আগে শত শত আফগান নাগরিক তাতে ওঠার চেষ্টা করেন। বিমান রানওয়েতে চলতে শুরু করার পরও অনেকেই চাকায় চড়ে বসার চেষ্টা করেন। বিমান উড়ে গেলে দু’জন পড়ে গিয়ে প্রাণও হারিয়েছেন বলে খবর পাওা গেছে।
এছাড়া, বিমানবন্দরের টারম্যাক দিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকা লোকজনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে থাকা মার্কিন সেনারা শূন্যে গুলি ছুড়ে। এক পর্যায়ে সেখানে পাঁচ জন নিহতও হন।
বিমানবন্দরে এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার দিনশেষে সব ধরনের সামরিক ও বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে মঙ্গলবার সকালে বিমানবন্দর আবার খুলে দেওয়া হয়েছে।
কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ এখনও মার্কিন সেনাদের হাতে রয়েছে। তারা বিদেশি কূটনীতিক ও বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে কাবুল ছাড়ার বিষয়টি দেখভাল করছেন। সেখানে থাকা ২৫০০ মার্কিন সেনার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ১০০০ সেনার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।