মিজান,কাউনিয়া প্রতিনিধিঃ রংপুরের কাউনিয়ায় পাটের বাজার দর ভালো, কিন্তু উপজেলায় পাটের আবাদ কম হওয়ায় বাজারে পাটের আমদানী কম। ফলে উপজেলার হাট বাজার গুলোতে সোনালী আঁশ পাট বিক্রেতার কদরও অনেক বেড়েছে।
পাট চাষী ও ব্যবসায়ী সুত্র জানায়, উপজেলার পাটের বড় হাটের মধ্যে তকিপল হাট, টেপামধুপুর হাট, মীরবাগ বাজার, খানসামা হাটসহ সব কয়টি হাটে পাট ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয় ভোর ৫ টায় আর শেষ হয়ে যায় সকাল ৮ টার মধ্যেই। অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার চর গনাই, চর পল্লীমারী, চর প্রাননাথ, চর ঢুষমারা, চর হয়বৎ খাঁ, চর সাব্দী, চর পাঞ্চরভাঙ্গাসহ ২৯ টি চরাঞ্চলে পাটের আবাদ কিছুটা হলেও উপজেলার অন্য ৫৪ টি মৌজায় পাটের আবাদ নেই বললেই চলে।
তকিপল হাটে পাট বিক্রি করতে আসা চর প্রাননাথ এর পাট চাষী আব্দুল গফ্ফার অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে পাট চাষের জন্য সরকারী বা আধা সরকারী কেউই কৃষকের সাথে কথা বলেন না। তাছাড়া পাট চাষের জন্য সরকারের কোন সহযোগিতাও নেই, তাই পাটের আবাদ ছেড়ে দিয়েছে অনেকেই। কারন অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়, গত দু’বছর আগে পাট অধিদপ্তরে একজন কর্মকর্তা থাকলেও বর্তমানে পদটি শুন্য রয়েছে। পূর্ব চান্দঘাট গ্রামের পাট চাষী সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি দুই দোন জমিতে (৫০ শতাংশ) পাট চাষ করেন কিন্ত পানির অভাবে সব পাট জাগ দিতে পারেন নাই । কিছু পাট নিজের মাছ চাষের পুকুরে জাগ দিয়েছেন বাকীটা শুকিয়ে খড়ি হয়ে গেছে। পানি না থাকলে রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পঁচানো যায় সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ইবোন এটিং (রিবোন রেটিং) কী? বুঝিয়ে বললে তিনি জানান, ওগুলা হামরা জানিনা। আর আজ পর্যন্ত হামাক ওই গুলা কেউ কয়োঁ (বলে) নাই।
পাট পঁচানো আর পাট চাষে আগ্রহ তৈরী না হওয়ায় কাউনিয়ায় এবারে পাট চাষ হয়েছে মাত্র ৯৫০ হেক্টর জমিতে। পাট ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে পাটের বাজার দর ও চাহিদা ভালো তবে বাজারে পাট অন্য বারের তুলনায় অনেক কম। তিনি বলেন, প্রতি মণ পাট প্রকার ভেদে ১৬’শ থেকে ২১’শ টাকা ক্রয়-বিক্রয় করা হচ্ছে।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ জানায়, পাট কৃষি পণ্য হলেও পাটের আলাদা বিভাগ রয়েছে, তাই পাট চাষের ক্ষেত্রে আমাদের ভুমিকা কম, তবুও বিষয়টি আমরা দেখছি। তিনি জানান, অন্য নানা রকম ফসল চাষের কারনে কৃষকরা পাট চাষ করছেন না। তিনি বলেন, উপজেলায় ১৫০ টি রিবোন রেটিং মেশিন দেয়া হয়েছে যা ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করেন।