সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে পুনরায় আন্দোলন, আলটিমেটাম দেয়া, সব কিছু বন্ধ করে দেয়ার হুমকি বাড়াবাড়ি বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কোটা নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে, এটা বাস্তবায়নাধীন। বাস্তবায়নে সময় তো লাগতে পারে।
গতকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় কোটা আন্দোলন নিয়ে কথা উঠলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের সূত্র জানায়, বৈঠকে কোটা আন্দোলন নিয়ে আলোচনা উঠলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি তো সিদ্ধান্ত দিয়েই দিয়েছি। আমরা তো বলেছি, আমরা এটা করব। কিন্তু এখনই এটা করতে হবে, এটা কি। আমি তো বলেছি কোটা থাকবে না। এর পরও আলটিমেটাম দেয়া, হুমকি দেয়া, সব কিছু বন্ধ করে করে দেয়ার হুমকি দেয়া, এটা কি। এর তো কোনো যুক্তি নেই। আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়েছি। কিন্তু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে যৌক্তিক কারণেই সময় লাগতে পারে। এটা লম্বা প্রক্রিয়া। প্রজ্ঞাপন জারি নিয়ে হুমকি দেয়া, আলটিমেটাম দেয়া এটা তো বাড়াবাড়ি। এ প্রসঙ্গে তিনি শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের সমালোচনা করে বলেন, এতে তাদেরই ক্ষতি হবে।
সূত্র আরও জানায়, এ আলোচনায় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ সিনিয়র কয়েকজন মন্ত্রী অংশ নেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, কেউ কেউ এটা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। যেহেতু আপনি এর একটা সমাধানের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, সেটা দ্রুত করা গেলে কোনো বিভ্রান্তির সুযোগ থাকবে না। আমির হোসেন আমু এবং মতিয়া চৌধুরীও প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে আন্দোলনকে বাড়াবাড়ি বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে বৈঠকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নিয়ে বিএনপি নেতাদের সমালোচনার বিষয়টিও উঠে আসে। স্যাটেলাইটের মালিকানা নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে সেটা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
সূত্র জানায়, এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন সমালোচনা করুক, ভালো না লাগলে যৌক্তিক কোনো সমালোচনা থাকলে করতে পারে কিন্তু বিভ্রান্তি ছাড়ানো হচ্ছে কেন? এ স্যাটেলাইটের মালিকানা সরকার ছাড়া আর কারো হওয়ার সুযোগ নেই।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জোনাইদ আহমেদ পলকও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। বৈঠকে তারা বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনকে সম্প্রচারের জন্য বাইরে টাকা দিতে হতো। এখন সেই টাকা বাইরে দিতে হবে না। তারা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো না বুঝে কথা বলছে।