আজ কোটা বাতিল প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’।
বিক্ষোভের অংশ হিসেবে বেলা ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছেন তারা। শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। প্রজ্ঞাপন দাবিতে দেশের প্রতিটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে রোববার বেলা ১১টায় বিক্ষোভ মিছিল ও পরে সমাবেশ করা হবে। এ কারণে বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। এ সময় তিনি আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্রদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।
আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে জানিয়ে আহ্বায়ক বলেন, ‘৯ মে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধনে অতি উৎসাহী কিছু সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। রংপুরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে পুলিশ বাধা দেয়, আন্দোলনকারীদের ছবি তুলে গ্রেফতারের হুমকি দেয়। চট্টগ্রামে পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন আকাশের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দ্রুত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক নুর বলেন, এখন কমিটি গঠনের কথা বলে ছাত্র সমাজের সঙ্গে নতুন প্রহসন করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য তারা টালবাহানা করছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির ঘোষণার পর প্রজ্ঞাপন জারি করতে এত দেরি কেন? অতি দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলার ছাত্র সমাজকে শান্ত করুন।
যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তা ছাড়ব না। এ দেশের ছাত্ররা যেমন ৫২, ৬৯, ৭১ ও ৯০ সালে রাস্তা ছাড়েনি, আমরাও ছাড়ব না। প্রধানমন্ত্রী সরকারের প্রধান নির্বাহী। তিনি সংসদে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কোটা বাতিল হবে। আইন অনুযায়ী সংসদে দেয়া প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়ন করতে হয় নির্বাহী বিভাগকে। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেটা বাস্তবায়ন করছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান, জসীম উদ্দিন, বিন ইয়ামিন মোল্লা প্রমুখ।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এত কিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটারই দরকার নেই। যারা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।’ এরপর প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী কোটা নিয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ফের সোচ্চার হয় শিক্ষার্থীরা। এর আগে ৩ দফা আলটিমেটাম দিয়েছিল তারা।