রাজনীতি

জাতীয় নির্বাচনে ভারতের হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই – ওবায়দুল কাদের

Published

on

বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভারতের কোনো হস্তক্ষেপ করার কিছু নেয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের । তিনি বলেছেন,দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে কে ক্ষমতায় থাকবে, আর কে থাকবে না।

গতকাল মঙ্গলবার বিকালে দুই দিনের ভারত সফর শেষে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১৯ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলটি পৌঁছলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের এ কথা জানান।

এর আগে মঙ্গলবার জেট এয়ারওয়েজের একটি বিমানে প্রতিনিধিদলকে বহনকারী বিমানটি অবতরণ করে। সফর শেষে দেশে ফেরা আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলকে দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের নেতৃত্বে স্বাগত জানানো হয়।

এ সময় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপদফতর ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আমিরুল আলম মিলন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ভারত সফর নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা একটি রাজনৈতিক দল। আমরা আজ আছি, কাল না-ও থাকতে পারি। আমাদের ক্ষমতার উৎস দেশের জনগণ। দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে, কে ক্ষমতায় থাকবে আর কে থাকবে না।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের ইন্টারফেয়ার করার কিছু নেই। আমরা আশাও করি না। এসব ব্যাপার আমরাই ঠিক করব। বিদেশি শক্তি আমাদের বন্ধু হতে পারে। কিন্তু তারা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে আমরা তা আশা করি না। আর ভারত অতীতেও আমাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেনি, এবারও করবে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের সঙ্গে তাদের অনেক নেতার কথা হয়েছে। তাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা ও আলোচনা হয়েছে। নিজ দেশের স্বার্থে আমরা যে কোনো দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক করতে পারি।

তিনি বলেন, আমাদের বিজেপি আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমরা কি সেখানে খেতে গেছি নাকি? ওখানে কি আমরা বেড়াতে গেছি? আনন্দ-উল্লাস করতে গেছি? আমরা ভারতের নেতাদের সঙ্গে সিরিয়াসলি আলাপ-আলোচনা করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা দু-একদিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে সফরের বিস্তারিত জানাব। সফরের কোনো বিষয়ই হাইড করা হবে না। সেখানে পার্টি টু পার্টি আলোচনা হয়েছে। আমরা সব ইস্যুর ওপর কথা বলেছি। সেগুলোর মধ্যে সীমান্তচুক্তির জন্য আমার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসাও করেছেন তারা। এই দুজন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় ছিলেন বলে এটা সম্ভব হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আশা করি তিস্তাচুক্তিও হবে। আমাদের পানির জন্য যে হাহাকার আছে তা উপস্থাপন করেছি। এই চুক্তি হলে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে।

ভারত সফর নিয়ে দুই-একদিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে সব তথ্য জানানো হবে দাবি করে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো। আমরা সফর-সংক্রান্ত কিছু গোপন করতে চাই না। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা সব কিছু প্রকাশ করব। যেন কোনো গুজব না ছড়ায়।

রোববার সকালে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলটি ভারতে যায়। ভারতে পৌঁছে সেদিন বিকেলে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়ালে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ‘হুমায়ুনের সমাধিসৌধ’ পরিদর্শন করেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশি দূতাবাসের সৌজন্যে এক প্রীতিভোজে অংশ নেয়।

সোমবার রাতে দিল্লিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের সম্মানে বিজেপি আয়োজিত এক নৈশভোজে অংশ নেয়। ভারতের বাণিজ্য, শিল্প এবং অ্যাভিয়েশনমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বিকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়।

বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৪টায় নরেন্দ্র মোদির সরকারি বাসভবনে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের মধ্য থেকে ওবায়দুল কাদের, পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আব্দুর রহমান ও জাহাঙ্গীর কবির নানক অংশ নেন। আর নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেশব গোখলে প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন- দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, অ্যাডভোকেট মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. মো. আব্দুস সবুর, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. গোলাম কিবরিয়া রাব্বানী চিনু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version