সরকারি চাকুরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাবির উপাচার্যের বাসভবনে হামলা করায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘দুষ্কৃতিকারী’ অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, দুষ্কৃতকারীরা ঢাবির উপাচার্যের বাসভবনে যে হামলা চালিয়েছে তা ‘৭১ এর তাণ্ডবকেও হার মানিয়েছে। এটা দুঃখজনক। সেখানে এমনভাবে তছনচ করা হয়েছে যে সকালে কাপড় পরিবর্তন করবে এমন একটা কাপড় ছিল না। খাবার খাবে এমন কোনও কিছু ছিল না, সব ফেলে দেওয়া হয়েছে। কোনও শিক্ষার্থী ভিসির বাড়িতে এরকম তাণ্ডব চালাতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। যারা এই হামলা চালিয়েছে তারা মুখোশ-হেলমেট পরা ছিল, তারা কারা? গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে, তাদের পরিচয় বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।
আজ সোমবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে ধানমন্ডি ৩ এ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নানক বলেন, ‘কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি সবাই জানেন। ঢাবি ভিসির বাসভবনে হামলা করে যে তাণ্ডব ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আলোচনার জন্য দায়িত্ব দেন। ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশ গতকাল রবিবার মধ্যরাতে ঢাবিতে গিয়েছিলাম। আমি সচক্ষে সব দেখলাম। এক পর্যায়ে তাদের (আন্দোলনকারীদের) আলোচনার জন্য প্রস্তাব করি। মিডিয়াকেও বিষয়টি জানিয়েছি। আমি মধ্য রাতেই জানিয়েছি আলোচনা হবে। আলোচনার মধ্য দিয়ে শিক্ষাঙ্গনে একটি সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে। শিক্ষার্থীরা সবাই শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যাবে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আমরা বার বার আলোচনার চেষ্টা করি। আমরা সকাল থেকে অপেক্ষায় ছিলাম তারা আসবেন। আলোচনার জন্য দুইটা জায়গার কথা বলেছিলাম। সচিবালয়ে সেতুমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১৮-২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল আসতে পারেন। অথবা আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়েও বৈঠকের আহ্বান জানাই আমরা। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত কোনও সারা পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘কোটা পদ্ধতির সংস্কার করতে হলে সরকার ছাড়া কোনও বিকল্প জায়গা নাই। তাই আলোচনায় বসতে হবে। আশা করি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা আলোচনায় বসলে সমাধান হবে। শিক্ষাঙ্গনে ফিরে আসবে সুষ্টু পরিবেশ। কোটা পদ্ধতি কোনও স্থায়ী পদ্ধতি নয়, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তও নয়। মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য যেসব কোটা আছে এসব কোটা যেসব পরিপূর্ণ হয় না তখন জেনারেল পদ্ধতিতে চলে যায়, সেটা আর থাকে না। এই পদ্ধতিতে একসঙ্গে দুইটি স্টেজ পার হয়ে আসতে হয়। মেধার পরীক্ষা ও ভাইভা পার হয়ে আসতে হয়। খাতায় কোটা লেখা থাকে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ অন্যরা।