মিজান,কাউনিয়া প্রতিনিধিঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার কাছ দিয়ে প্রভাবিত হচ্ছে। নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে কাউনিয়া উপজেলার চরাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ১১টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, ভারতের গজলডোবার দোমহনী পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানি হু হু করে বাড়ছে। গত সোমবার রাত থেকে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার দশমিক ১৫সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ৫২দশমিক ৭৫সেন্টিমিটার মাত্রায় প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে নদীর পানির প্রবল স্রোতের কারণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে ভাটিতে পানি বাড়ায় ব্যারেজ এলাকার ভাটির চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে তিস্তায় পানি বৃদ্ধির কারণে কাউনিয়ার চরাঞ্চল ও তীরবর্তী গ্রামগুলো নদীর পানি প্রবেশ করায় সৃষ্ট বন্যার আশংকা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১১সেপ্টেম্বর) খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, তিস্তার পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধির ফলে বন্যায় উপজেলার চর ঢুষমারা, চর গনাই, তালুকশাহবাজ, চর বিশ্বনাথ, টাপুর চর, হয়বৎখাঁ, হরিচরণশর্মা, চর গনাই, আরাজীকানুয়া, পাঞ্জরভাঙ্গা ছাড়াও নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এব্যাপারে বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, তাঁর ইউনিয়নের ঢুষমারা, আরাজি হরিশ্বর, গোপিডাঙ্গা, গদাই, পাঞ্জরভাঙ্গা, গদাই, তালুকশাহাবাজ, নিজপাড়া ও হরিশ্বর গ্রামসহ নদী তীরবর্তী গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। পানিবন্দি গ্রামের মানুষেরা অনেকেই গবাদি পশু, হাঁস-মুরগী উচু স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, সৃষ্ট বন্যার পানিতে তিস্তা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে প্রায় ৫’শ হেক্টর আমন ধানসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ জানান, পানিবন্দি মানুষদের জন্য সরকারীভাবে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।