নিউজ ডেস্ক:
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে চলতি অর্থবছরের (২০২১-২০২২) প্রথমেই মন্থর হয়ে পড়েছে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হার। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দু’মাসে (জুলাই-আগস্ট) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অগ্রগতির হার মাত্র তিন দশমিক ৫২ শতাংশ। গত বছর করোনার প্রকোপ শুরু হলেও থেমে থাকেনি মেগা প্রকল্পগুলোর কাজের গতি। গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপির অগ্রগতি ছিল ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আইএমইডির হাল নাগাদ তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের ১ হাজার ৫৯১ প্রকল্পের বিপরীতে খরচ মাত্র আট হাজার ৩৩৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, সরকারের ২৫ টি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার দু’মাসের অগ্রগতি বা খরচের হার ১ শতাংশেরও নিচে। এর মধ্যে তিন মন্ত্রণালয় ও চার বিভাগ গত দু’মাসে প্রকল্পের পেছনে কোনো টাকা খরচ করেনি। এগুলো হলো- বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে এক শতাংশের কম অর্থ ব্যয় করেছে এমন মন্ত্রণালয়গুলো হলো- বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, আইএমইডি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর বেহাল স্বাস্থ্যখাতের চিত্র সবার নজরে আসে। এরপরই স্বাস্থ্যসেবা খাতে বাড়ানো হয় বরাদ্দ।
তবে আইএমইডির তথ্য বলছে, অর্থবছরের প্রথম দু’মাসে এ খাত খরচ করতে পেয়েছে মাত্র ১৭০ কোটি ১৬ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৫৫৮ কোটি তিন লাখ টাকা, দু’মাসে তারা ব্যয় করতে পেরেছে মাত্র ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ বা ৮৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এছাড়া গত দু’মাসে ২১৪টি প্রকল্পের বিপরীতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ব্যয় করেছে দুই হাজার ৫৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বিদ্যুৎ খাতের ৭৫টি প্রকল্পের বিপরীতে খরচ করছে ১ হাজার ৬৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা বা ৩.৮১ শতাংশ।
সড়ক উন্নয়নে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ১৮২টি প্রকল্পের জন্য এ সময়ে খরচ ১ হাজার ১৪৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা, যা বরাদ্দের মাত্র ৪.০৯ শতাশং। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ২১ প্রকল্পে খরচ করেছে দু’মাসে খরচ করেছে ৪৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের মাত্র ০.২৩ শতাংশ। রেলপথ মন্ত্রণায়ের ৩৬ প্রকল্পের বিপরীতে খরচ হয়েছে ৫৪৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা বা বরাদ্দের ৪.০১ শতাংশ। এডিপি বাস্তবায়নে শ্লথগতির বিষয়ে আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, প্রথম দিকে কাজের গতি কম থাকে। তবে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের পর প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগোবে।