উচ্চ আদালতের বেঁধে দেয়া সময়ের দুই মাস আগেই দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের পেপারবুক প্রস্তুত শেষ করেছে হাইকোর্টের পেপারবুক শাখা।
গত সপ্তাহে খালেদা জিয়ার জামিন বাতিলের আপিল শুনানিতে ওই পেপারবুক নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হাজির হন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি পেপারবুক প্রস্তুতের বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতের দৃষ্টিতে আনেন। পরে শুনানিতে এ নিয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীরা আইনি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। হাইকোর্টে দায়েরকৃত আপিলে খালেদা জিয়া নিম্ন আদালতের সাজা বাতিল করে তাকে বেকসুর খালাস দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে বলেন, হাইকোর্ট চার মাসের মধ্যে খালেদা জিয়ার আপিলের পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই পেপারবুক তৈরি হয়েছে। এখন জামিনের পরিবর্তে তার আপিলের শুনানির নির্দেশ দেওয়া হোক। আগে আপিল নিষ্পত্তি হোক। সেখানে তিনি খালাস পেলে আমাদের আপত্তি থাকবে না। হাইকোর্টে আপিল বিচারাধীন থাকাবস্থায় জামিন পেলে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা পরিত্যক্ত হয়ে যাবে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, কার্যত সরকার মাইনাস ওয়ান থিওরি নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আদালতের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে খালেদা জিয়াকে মাইনাস করতে চান। এটা অশুভ লক্ষণ। লাখ লাখ মামলা বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও এই মামলার আপিল দ্রুততার সঙ্গে কেন শুনানি করতে চান অ্যাটর্নি জেনারেল?
অপর আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলের কথামতো পেপারবুক রেডি হয়েছে। ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে দায়েরকৃত আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। সেসব আপিলের শুনানি হয়নি। তাহলে খালেদা জিয়ার আপিল নিষ্পত্তি নিয়ে কেন এত তাড়াহুড়ো?
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। এই রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে গত ১২ মার্চ তাকে চার মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দেয় আদালত। একইসঙ্গে এ সময়ের মধ্যে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে আপিলের পেপারবুক প্রস্তুতের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। পেপারবুক প্রস্তুত হলে যে কোন পক্ষ শুনানির জন্য বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করতে পারবে বলে হাইকোর্টের আদেশে উল্লেখ করা হয়। এই আদেশের পরই হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা পেপারবুক প্রস্তুত করে।