নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর পল্লবী থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও সার্টিফিকেট নিয়ে নিখোঁজ হওয়া কলেজপড়ুয়া সেই তিন বান্ধবীকে উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তারা কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ফিরছিল, তখন তাদের র্যাব-৪ এর একটি দল উদ্ধার করে।
বুধবার বিকেলে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছিলাম। তাদের অবস্থান শনাক্তের পর আমাদের একটি টিম কক্সবাজারে যায়। সেখানে আমাদের সদস্যরা তাদের অনুসরণ করেন। গতকাল তারা কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন। আমাদের সদস্যরাও তাদের অনুসরণ করে ঢাকায় আসেন। মিরপুরে প্রবেশের সময় তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। শিগগির তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তারা তিনজনই সুস্থ আছেন।’
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে দিলখুশ জান্নাত নিশা, কানিজ ফাতেমা ও নেহা আক্তার নামে তিন বান্ধবী বাসা থেকে বের হন। তারা কলেজের পোশাক পরে এবং ব্যাগ নিয়ে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু তারা আর বাসায় ফেরেননি। পরে নিখোঁজদের পরিবার জানায়, ওই ছাত্রীরা বাসা থেকে বের হওয়ার সময় নগদ টাকা, স্বর্ণের গহনা, নিজেদের সার্টিফিকেট নিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে নিখোঁজ শিক্ষার্থী দিলখুশ জান্নাত নিশার বড় বোন অ্যাডভোকেট কাজী রওশন দিল আফরোজ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় মামলাটি করেন। মামলার আসামিরা হলেন- মো. তরিকুল্লাহ (১৯), মো. রকিবুল্লাহ (২০), জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ (১৮) ও শরফুদ্দিন আহম্মেদ অয়ন (১৮)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ কাজী দিলখুশ জান্নাত নিশা (১৬) পল্লবী থানাধীন সেকশন-১১, ব্লক-সি, ১৮ নম্বর রোডের মায়ের সঙ্গে বসবাস করত। সে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। লেখাপড়ার সুবাদে এক নম্বর আসামি তরিকুল্লাহ, রকিকুল্লাহ, জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ ও শরিফুদ্দিন আহম্মেদ অয়নসহ দিলখুশের বান্ধবী লেহা আক্তার (১৭) ও কানিজ ফাতেমার (১৮) সঙ্গে পরিচয় হয়।
এতে বলা হয়, তিন নম্বর আসামি জিনিয়া প্রায় সময় দিলখুশের বাসায় আসা-যাওয়া করত এবং প্রায় সময়ই তরিকুল্লাহ ও জিনিয়া বাসায় এসে নিশাকে ঘোরাফেরার জন্য বাইরে নিয়ে যেত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে দিলখুশ বাসা থেকে বের হয়।
এজাহারে বলা হয়, নিখোঁজের পর তার পরিবারের সদস্যরা খোঁজ করে দেখতে পান, আলমারির ভেতরে রাখা নগদ ছয় লাখ টাকা, স্বর্ণের গহনা, স্কুল সার্টিফিকেট ও জন্মনিবন্ধনপত্র নেই। তার বান্ধবী নেহা আক্তারের বাবা জানান, বাসা থেকে তার মেয়ে নগদ ৭৫ হাজার টাকা, সার্টিফিকেট ও জন্মনিবন্ধনপত্র নিয়ে গেছে। এ ছাড়া কানিজ ফাতেমার বাবা জানান, তার মেয়েও বাসা থেকে আড়াই ভরি স্বর্ণের গহনা, স্কুল সার্টিফিকেট ও জন্মনিবন্ধনপত্র নিয়ে গেছে।
এদিকে এ ঘটনায় করা মামলায় গত রোববার রকিবুল্লাহর (২০) দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। অন্যদিকে আসামি মো. তরিকুল্লাহ (১৯), জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ (১৮) ও শরফুদ্দিন আহম্মেদ অয়নকে (১৮) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।