২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তিনি বলেন, ‘বাজেট যখন করা হয়, তখন তা বাস্তবায়নের চিন্তা থেকেই করা হয়। নির্বাচনের বছর হলেও বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জিত হবে। বিগত বছরগুলোতে যে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে তার সিংহভাগ অবদান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেস পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর একটি দরিদ্র- অভাবী- অনাহারি দেশ ছিল। অভাব শব্দটি এখন এই দেশে নেই, মঙ্গাও দূর হয়েছে। এটি এখন মোটামুটি একটি উন্নত দেশে পরিনত হয়েছে।’দেশে দারিদ্র ও অতিদারিদ্রের হার অনেক হ্রাস পেয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আগে বিদেশি সহায়তা নির্ভর বাজেট ছিল। বলা হত- বাংলাদেশ ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে হাঁটছে। এটা এখন আর কেউ বলে না। প্রত্যেক বছরই ঘাটতি হয়। অধুনা ঘাটতি হওয়ার প্রবনতা কমেছে। আশা করি ঘাটতি আরও কমবে।
বাজেটকে নির্বাচনী বাজেট হিসাবে উল্লেখ করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমার সব বাজেটই নির্বাচনী বাজেট। আমি একটি দলের সদস্য এবং গূরুত্বপূর্ণ সদস্য, তাই বাজেট নির্বাচনী হবে।’
সঞ্চয়পত্রের সুদের হার দুই-তিন বছর পরপর পর্যালোচনা করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবার একটু দেরি হয়েছে। পরের মাসেই রিভিউ করা হবে।’
ব্যাংক খাতের সংস্কারের লক্ষ্যে কমিশন গঠন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, পরবর্তি সরকারের কাছে এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র দেয়া হবে। ব্যাংক সংস্কারে কোন কমিশন করছি না। সব কাগজপত্র তৈরি। এটা পরবর্তি সরকারের কাছে দিয়ে যাব। তারা এটা করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারিদের সুযোগসুবিধা এই সরকার যেভাবে দেখেছে, আর কেউ সেভাবে দেখে নাই। তাদের বেতন-ভাতা অনেকগুণ বেড়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশে যেখানেই বাংলাদেশি শ্রমিক-কর্মির সংখ্যা ১২ হাজার বা তার বেশি থাকবে সেখানেই শ্রম অফিস স্থাপন করা হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তিনি সুশাসন ও স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, এবারের বাজেটে আমি বলেছিলাম নতুন কর দেয়া হবে না। মোটামুটিভাবে সেইকথা রাখতে সক্ষম হয়েছি।’ তিনি প্রস্তাবিত বাজেটকে জনবান্ধব ও উন্নয়নমুখী হিসাবে উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সিনিয়র সচিব শামসুল আলম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আজম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।