ভারতের আসামে ‘ডিটেনশন সেন্টার’ বন্দি শিবির গড়ার অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার। এতে রাখা যাবে ৮ হাজার মানুষকে। আর এ নিয়ে আসামে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। এই ডিটেনশন সেন্টার তৈরির জন্য খরচ হবে ১৬০ কোটি রুপি। এর মধ্যে ভারত সরকার দিয়েছে ১২৮ কোটি টাকা। আগ থেকেই রাজ্যটিতে ৬টি বন্দি শিবির রয়েছে।
এনআরসি চূড়ান্ত খসড়ার দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশের পর আসামে সন্দেহজনক ভোটারের সংখ্যা এখন ১ লক্ষ ৭৬ হাজার। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু উদ্বাস্তুদের প্রথমে ওড়িশার দণ্ডকারণ্য ও পরে রাখা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন সংলগ্ন মরিচঝাঁপির শিবিরে। সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছিল।
এনআরসির দ্বিতীয় খসড়া প্রকাশের পর ৪০ লক্ষ মানুষ তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। তার মধ্যে ডি- ভোটার অর্থাৎ সন্দেহের তালিকায় থাকা ভোটারদের পরিণতি কী হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
গত ৯ মাসে একাধিক শুনানি হলেও তাদের তালিকাভুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। ফলে তালিকায় নাম ওঠা আসামের বাঙালিদের মনে সন্দেহ দানা বেঁধেছে তাহলে কী তাদের ভবিষ্যতে মূলস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জঙ্গলে ডিটেনশন ক্যাম্পে জীবন কাটাতে হবে?
এদিকে, এনআরসির দায়িত্বে থাকা প্রতীক হাজেলা জানিয়েছেন, ‘৭ আগস্ট থেকে এনআরসির বিভিন্ন সেবা কেন্দ্র থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে যাদের নাম ওঠেনি তাদের কেন নাম বাদ পড়ল।’
তিনি বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফের সময় দেওয়া হবে নাম তালিকাভুক্ত করার জন্য ফের আবেদন করার।
তবে দ্বিতীয় তালিকায় যাদের নাম উঠেছে তাদের নাম নিয়ে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তা হলে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। অর্থাৎ যাদের নাম ইতোমধ্যে তালিকাভুক্ত হয়েছে তারাও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারবেন না, যে চূড়ান্ত তালিকায় তাদের নাম থাকবেই।
উল্লেখ্য, নাগরিকপঞ্জিতে নাম তোলার জন্য আবেদন করেছিলেন ৩ কোটি ২৯ লক্ষ মানুষ। তালিকায় প্রকাশিত হয়েছে ২ কোটি ৮৯ লক্ষ মানুষের নাম। রাতারাতি উদ্বাস্তু হওয়ার পথে ৪০ লাখ মানুষ।