ভারত সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীর এক বক্তব্য প্রসঙ্গে বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, “ভারতকে এমন কী কী দিয়েছেন যে তারা জীবনেও ভুলবে না। এর জবাব দিতেই হবে। ”
গতকাল বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘সোনার বাংলা পার্টি’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
‘ভারতকে যা দিয়েছি, তা সারা জীবন মনে রাখবে’—প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এ বক্তব্যের সমালোচনা করে বি. চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ ইজ নট এ সোল প্রোপার্টি অব অ্যানি বডি, নট ইভেন দ্য প্রাইম মিনিস্টার (বাংলাদেশ কারও একার সম্পত্তি নয়। এমনকি দেশের প্রধানমন্ত্রীরও নয়)। অনেক রক্তের অক্ষরে লেখা এই দেশ, জনগণের বাংলাদেশ। আপনি কী কী দিয়েছেন যে তারা জীবনেও ভুলবে না। এর জবাব আপনাকে দিতেই হবে। যতক্ষণ না আপনি জবাব দেবেন, বারবার জিজ্ঞেস করতেই থাকব।’
নতুন রাজনৈতিক জোট যুক্তফ্রন্টের আহ্বায়ক বি. চৌধুরী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ সরকার দিতেই হবে। সংবিধানে নেই—এটা ক্ষমতাসীনদের ভুলে যেতে হবে। তিনি বলেন, এবার যদি আবারও ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন হয়, সরকার যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না দিতে পারে, তাহলে এই দেশে গণতন্ত্রের সমাধি হবে।
অনুষ্ঠানে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশে গণতন্ত্র নাকি শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত। খুলনায় এজেন্ট বের করে দিয়ে, পুলিশ পাহারায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ট্রেনিং দিয়েছেন। বিনা ভোটে যদি গণতন্ত্র শক্ত ভিত্তি পায়, তা হলে নির্বাচনের দরকার কী?
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরকারের উদ্দেশে বলেন, যদি সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন চান, তাহলে ঈদের আগেই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। তিনি মাদকবিরোধী অভিযানে মানুষ খুনের সমালোচনা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে মনস্থির করতে হবে তিনি মাদক বন্ধ করতে চান কি না। চাইলে মাদক উৎপাদন ও প্রবেশের জায়গাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এটা খালেদা জিয়া নিয়ন্ত্রণ করেন না। পুলিশ, বর্ডার গার্ড চাইলে একটি ইয়াবাও ঢুকবে না।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না টেকনাফে কাউন্সিলর একরামুল হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, এটি বাংলাদেশে মানবতার চরম নিষ্ঠুরতার প্রমাণ। এর বিরুদ্ধে জীবনবাজি রেখে লড়াই করতে হবে। সবাইকে এক হতে হবে, কার সঙ্গে কে মতপার্থক্য, এখন সে সময় নেই।
তিনি বিএনপির উদ্দেশে বলেন, একসঙ্গে লড়াই করতে রাজি আছি। তবে একটি কথা অঙ্গীকার করতে হবে, জেতার পর দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, খুলনায় রিহার্সাল হয়েছে। গাজীপুরেও এর পুনরাবৃত্তি হবে। এটা সফল হলে জাতীয় নির্বাচনও তারা এভাবে পার করবে। তিনি বলেন, রাজপথে দাঁড়িয়ে দিশা দেওয়া ছাড়া বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রক্ষা করা যাবে না।
সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি আবদুন নূরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক প্রমুখ।