Highlights

ভূমধ্যসাগরে চার বছরে মারা গেছে সাড়ে ৬ হাজার মানুষ

Published

on

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পরিবারে সচ্ছলতা ফেরানোর আশায়, অথবা যুদ্ধ-সংঘাত এড়াতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অনেকে ইউরোপের দেশগুলোতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। বিদেশে পাড়ি দিতে গিয়ে তারা বেছে নেন সবচেয়ে ঝুঁকির পথ। নৌকা নিয়ে সাগর পাড়ি দেওয়ার মতো দুরুহ চেষ্টা করেন তারা। আর এতেই ঘটে প্রাণহানী। ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে গত চার বছরে প্রাণ গেছে সাড়ে ছয় হাজার মানুষের।

জাতিসংঘের দেয়া তথ্যের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি জানায়, কেবল চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয়েছে অন্তত ৯৭০ জনকে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিও আছেন।

সাম্প্রতিক মৃত্যুর উল্লেখ করে এএফপি জানায়, লিবীয় উপকূলে সর্বশেষ ৫৭ অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যুর মধ্যদিয়ে চলতি বছর ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করে ইউরোপের কোন দেশে পাড়ি জমাতে গিয়ে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৯৭০ জনে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইওএম জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫৭ অভিবাসন প্রত্যাশী লিবীয় উপকূলে তাদের নৌকা ডুবে যাওয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টাকালে ঘটা যাওয়া এটিই সর্বশেষ মর্মান্তিক ঘটনা। জেনেভায় আইওএম-এর পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, নিখোঁজদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ নারী ও দুই শিশু রয়েছে।

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির প্রায় ৭৫ মাইল পূর্বে অবস্থিত খোমস বন্দর থেকে নৌকাটি গত রোববার ছেড়ে যায়। পরে এতে সমস্যা দেখা দেয়। পানি উঠে যায় এবং এটি ডুবে যায়। আইওএম মুখপাত্র পল ডিলন বলেন, ‘স্থানীয় জেলে ও লিবীয় কোস্টগার্ড পানি থেকে ১৮ জনকে উদ্ধার করেছে।’ তিনি বলেন, ‘এসব হৃদয় শীতল করা ঘটনায় যারা নিয়মিত সাড়া দিচ্ছেন, আমাদের সেই স্টাঢদের প্রাণে বেঁচে যাওয়া এসব ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, এ নৌকা ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ আছেন কমপক্ষে ৫৭ জন।’

উদ্ধার হওয়াদের লিবিয়ায় নিয়ে আসা হয়েছে। জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থাটি জানায়, লিবিয়ায় থাকা তাদের স্টাফরা প্রাণে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের জরুরি চিকিৎসা সেবা, খাদ্য, পানি ও সান্ত্বনা দেন। জানা গেছে, তারা সকলে নাইজেরিয়া, ঘানা ও গাম্বিয়ার নাগরিক।

শুধু এ ঘটনাই নয়, ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের মৃত্যু এখন অনেকটাই নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। তারপরই থাকছে না ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে প্রবেশের এ চেষ্টা। চলতি বছর প্রথম সাত মাসেই সেখানে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৯৭০ অভিবাসন প্রত্যাশীর, যেখানে ২০২০ সালের পুরো বছরে এ সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪১৭ জন। ২০১৯ সালে ভূমধ্যসাগরে ১ হাজার ৮৮৫ জন অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়। এর আগের বছর ২০১৮ সালে সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ২৯৯ জন অভিবাসন প্রত্যাশী ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে মারা যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version