নিউজ ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণে দগ্ধদের স্বজনদের আহাজারি যেন থামছেই না। শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত থেকেই শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভিড় করে আছেন দগ্ধদের স্বজনরা।
কিছুক্ষণ পরপরই দগ্ধ রোগীকে দেখে আহাজারি করতে করতে হাসপাতালের ভেতর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন একেক জন দগ্ধের স্বজনরা।
হাসপাতালে অপেক্ষামান কক্ষে চেয়ারে বসে চোখের পানি মুছতে দেখা যায় মনির হোসেন নামে এক দগ্ধের স্বজনকে। শুক্রবার রাতে তার ছোট দুই বোন জামাই ওই মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। তাদের বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
মনির হোসেন বলেন, ছোট দুই বোন জামাই আমজাদ ও ইমাম হোসেনের বাসা ওই মসজিদের পাশেই। শুক্রবার রাতে একই সঙ্গে ওই মসজিদে নামাজ পড়তে যান তিনিও। নামাজ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর তার দুই বোন জামাই আমজাদ ও ইমাম দগ্ধ শরীর নিয়ে দৌড়ে বাসায় আসেন। এরপর তাদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্স করে রাতেই শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে ভর্তি করার পর এখনো তাদের দেখতে পাইনি। তাদের কি অবস্থা তাও জানি না।
দগ্ধ দুই ছেলের সঙ্গে শুক্রবার রাত থেকে হাসপাতালে আছেন বাবা নুর উদ্দিন মুন্সি। তার বড় ছেলে মো. সাব্বিরের (২১) মৃত্যুর খবরটি জানতে পারলেও ছোট ছেলে যুবায়েরের খবর জানেন না তিনি।
নুর উদ্দিন বলেন, বড় ছেলে মো. সাব্বির নারায়ণঞ্জের একটি কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে লেখাপড়া করতেন। আর তার ছোট ছেলে নারায়ণগঞ্জের তুলারাম কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। দুর্ঘটনার সময় বড় দুই ভাইয়ের সঙ্গে তার ছোট ছেলে ইয়াসিনও (১২) ছিল। তারা তিনজনই এক সঙ্গে নামাজ পড়তে ওই মসজিদে গিয়েছিলেন। তবে ইয়াসিন পেছনের সারিতে দাঁড়ানোর কারণে বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় সে সুস্থ আছে।
কান্না করতে করতে নুর উদ্দিন বলেন, ছোট ছেলে যুবায়েরের মৃত্যুর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে আমাদের এখনো কেউ কিছু বলেনি। আমরাও জানার চেষ্টা করছি। তবে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে পারি না।
এর আগে শুক্রবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় ৩৭ জন দগ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন এক শিশুসহ ১২ জন।