Highlights

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশাল বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভ

Published

on

আইন প্রয়োগকারীদের বর্বরতা ও বর্ণবাদের অবসানের দাবিতে ওয়াশিংটনসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরে হাজার হাজার প্রতিবাদকারী বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়েছে।

২৫ মে মিনিয়াপোলিস শহরে পুলিশের হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুকে কেন্দ্র সৃষ্ট ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ প্রতিবাদ শনিবার ১২তম দিনে গড়িয়েছে।

নিরস্ত্র ফ্লয়েডকে হাতকড়া পড়িয়ে, রাস্তায় উপুড় করে শুইয়ে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা তার ঘাড়ে হাঁটু তুলে দিয়ে প্রায় নয় মিনিট ধরে রাস্তার সঙ্গে চেপে ধরে রাখার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র।

তারপর থেকে ক্ষুব্ধ মানুষের সবচেয়ে বড় সমাবেশ ঘটেছে শনিবার ওয়াশিংটন ডিসির লিঙ্কন মেমোরিয়ালে ও হোয়াইট হাউসমুখি প্রতিবাদ মিছিলে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এর পাশাপাশি নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, ফিলাডেলফিয়া, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলস, সান ফ্রান্সিসকো, সিয়াটল, বস্টন ও মিয়ামিসহ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন ছোট ছোট শহর ও গ্রামীণ জনপদেও প্রতিবাদকারীরা সমাবেশ করেছেন।

“মনে হচ্ছে আমি ইতিহাসের অংশ হচ্ছি এবং এমন একদল লোকের অংশ হয়েছি যারা সবার জন্য বিশ্বকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে,” বলেন হোয়াইট হাউসের কাছে প্রতিবাদে অংশ নেওয়া ওয়াশিংটনের বাসিন্দা জামিলাহ মুয়াহাইমান। 

প্রতিবাদকারীদের একটি বড় দল মিছিল নিয়ে হোয়াইট হাউসের কয়েক ব্লক দূরে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল অতিক্রম করে যাওয়া সময় শ্লোগান দেয়, ‘হ্যান্ডস আপ, ডেন্ট শুট!’, ‘এ মিছিল আশার, ঘৃণার নয়’ এবং ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না’।

এই ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ প্রতিবাদে অন্যতম আশ্চর্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব টেক্সাসের ছোট শহর ভিডোরে। কট্টরপন্থি শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী গোষ্ঠী কু ক্ল্যাক্স ক্ল্যানের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কের কারণে কুখ্যাত এই শহরটিতেও দেড়শ থেকে ২০০ লোক জমায়েত হয়ে বর্ণবাদ ও পুলিশি বর্বরতার প্রতিবাদ করেছে।

করোনাভাইরাস মহামারীর প্রকোপের মধ্যেই ফ্লয়েডের মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ক্ষোভের ঝড় তুলে সামাজিক অস্থিরতার কারণ হয়। স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের তরঙ্গ জাতিগত ন্যায়বিচারের অত্যন্ত উত্তেজনাকর ইস্যুকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের পাঁচ মাস আগে ফের রাজনৈতিক আলোচনার সামনে নিয়ে আসে। 

প্রথমদিকের বিক্ষোভগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শান্তিপূর্ণ থাকলেও সেখানে ক্ষুব্ধতার প্রকাশ অনেক বেশি ছিল, সেই তুলনায় শনিবারের বিক্ষোভগুলো অনেকটা নিরুদ্বিগ্ন ধরনের ছিল; কিন্তু ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর থেকে এদিনই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউজ বরাবার রাস্তার নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্লাজা’। এই সড়কে জমায়েত হওয়া প্রতিবাদকারীদের মধ্যে প্রায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল।

করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে প্রতিবাদে অংশ নিতে লাখো লোক জড়ো হয়।

ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের সব জায়গায় প্রতিবাদ সমাবেশগুলোতে কৃষ্ণাঙ্গ, শ্বেতাঙ্গসহ সব ধরনের মানুষ অংশ নিয়েছে।

মঙ্গলবার হিউস্টনে ফ্লয়েডের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। মিনিয়াপোলিসে যাওয়ার আগে টেক্সাসের এই শহরেই তিনি বসবাস করতেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version