জাতীয়

যৌন হয়রানি, সমকামিতা ও প্রতারণার অভিযোগে পীর গ্রেপ্তার

Published

on

যৌন হয়রানি, সমকামিতা ও প্রতারণার অভিযোগে কথিত পীর আবদুল মুত্তালিব চিশতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানীর তুরাগ থানাধীন একটি বাড়ি থেকে গত সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের একটি টিম। নিজেকে পীর দাবি করলেও কেবল তিনটি সূরা জানেন মুত্তালিব। প্রতারণা ও যৌন হয়রানির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে দুটি।

ডিবি গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান জানান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কথিত পীর মুত্তালিব চিশতির আনাগোনা ছিল। মন্ত্রণালয় ঘুরে মন্ত্রী ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তুলতেন তিনি। একই সঙ্গে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা ঘুরেও বয়ান করতেন। তার লম্বা বয়ান ও মোনাজাতে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বর নিয়ে রাখতেন। কোনো ভক্ত তাকে ফোন করলে, সুযোগ বুঝে শুরু করতেন প্রতারণা। ধান্দাবাজি আর প্রতারণায় রাজনীতিকে ব্যবহারের দৌড়েও এগিয়ে কথিত এ পীর।

ইতোমধ্যে একটি চক্রকে নিয়ে তিনি আওয়ামী নির্মাণ শ্রমিক লীগ গড়ে তুলেছেন। কথিত এ সংগঠনে বাগিয়ে নিয়েছেন সিনিয়র সহ-সভাপতির পদও। এর নাম ভাঙিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের সঙ্গেও সেলফি তুলে তা শেয়ার করতেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে তাদের দিয়ে সুপারিশ করিয়ে সচিবালয়ে তার আনাগোনা শুরু। বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ভূমি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়েই ছিল তার বেশি যাতায়াত। পীরবাদ ও রাজনৈতিক পদ ব্যবহার করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মাস্টাররোলে চাকরি দেওয়া, রাজউকের বিভিন্ন প্রকল্পে নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট স্বল্পমূল্যে বরাদ্দ নিয়ে দেওয়া, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার চেয়ারম্যান-মেম্বার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর অথবা মেয়র প্রার্থীদের নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৬ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।

কথিত পীর মুত্তালিব চিশতি সব সময় ধবধবে সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা ও লম্বা টুপি পরতেন। সপ্তাহে একদিন তার বাসায় জিকিরের হিড়িক পড়ে। তখন নারী-পুরুষ ভক্তদের সামনে কাফনের সাদা কাপড় পরে তিনি বয়ান করেন। অথচ তিনি কোরআনের মাত্র তিনটি সূরা জানেন। পীরবাদ, চিশতিয়া তরিকা, যৌন হয়রানি তার ব্যবসার একটা কৌশলমাত্র। মুত্তালিবের ঘরে দুই স্ত্রী ও অসংখ্য মুরিদ রয়েছে। অথচ তিনি সমকামিতার দুটি ওয়েবপেজ পরিচালনা করেন। ওই পেজের মাধ্যমে শতাধিক ছেলেবন্ধুও বানিয়েছেন। তাদের সঙ্গে অস্বাভাবিক ও বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হতেন। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হলেও অনেক ভুক্তভোগী লজ্জায় অভিযোগ জানাতে চান না বলে ডিবির এ কর্মকর্তা জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version