রংপুর প্রতিনিধি:
রংপুর নগরীর শালবন মিস্ত্রী পাড়ায় এক মহিলা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
তিনি সদর মা ও শিশু হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মী।
গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর মেডিকেল কলেজের করোনা পরীক্ষাগারে ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে তারসহ বিভাগে ৩ জনের করোনা পজেটিভ আসে।
এছাড়াও রংপুর বিভাগে পরীক্ষার ফলাফলে রংপুর, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার একজনের করে করোনা সংক্রমণ বা কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে।
বুধবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন রংপুর মেডিকেল কলেজের (রমেক) অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. একেএম নুরুন্নবী লাইজু।
তিনি জানান, বিকেলে রমেকের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবে রংপুর বিভাগের আট জেলা থেকে সংগৃহীত ৯৪টি নমুনার পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এতে তিন জেলার তিনজনের নমুনায় করোনা আক্রান্তের পজেটিভ ফলাফল পাওয়া যায়।
আক্রান্তদের মধ্যে রংপুর নগরীর শালবন মিস্ত্রিপাড়া এলাকার ৩৫ বছর বয়সী এক নারী, গাইবান্ধা জেলার সাদুল্ল্যাপুরের ২০ বছর বয়সের এক যুবতী এবং কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারীর ২৪ বছর বয়সী এক যুবক রয়েছেন। এনিয়ে বিগত ২১ দিনে রংপুর বিভাগের আট জেলায় ৬৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে, যোগ করেন প্রফেসর ডা. একেএম নুরুন্নবী লাইজু।
তিনি বলেন, গত ২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রমেকে পিসিআর মেশিন স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত আঠারো ধাপে ১৮৫১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখানে এখনও পর্যন্ত ৫৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) মাধ্যমে রংপুর বিভাগের আরও ছয়জনের করোনা শনাক্ত করা হয়।
আক্রান্তদের মধ্যে মধ্যে গাইবান্ধায় ১৫, দিনাজপুরে ১৩, নীলফামারীতে ১০, রংপুরে ১০, ঠাকুরগাঁওয়ে আট, কুড়িগ্রামে চার, লালমনিরহাটে দুই এবং পঞ্চগড় জেলার দু’জন রয়েছেন। আক্রান্তদের বেশির ভাগই ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরসহ অন্যান্য গার্মেন্টস শিল্প এলাকা থেকে গ্রামে এসেছেন বলেও জানান তিনি।
রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় জানান, রংপুর জেলায় এ পর্যন্ত দশ জনের করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ও এক কর্মচারীসহ চারজন রয়েছে। এছাড়া বদরগঞ্জ উপজেলায় দু’জন এবং রংপুর মহানগরে দু’জন, সদর উপজেলা ও কাউনিয়া উপজেলায় একজন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, আজ নতুন করে শনাক্ত হওয়া নারী শালবন এলাকার বাসিন্দা। তিনি নগরীর মা ও শিশু হাসপাতালে চাকুরী করেন এবং তার স্বামী সোনালী ব্যাংক বাজার শাখার কর্মচারী। রাতে প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতিতে করোনা আক্রান্ত ওই নারীর বাসাসহ আশপাশের দশটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়াও তার কর্মস্থল মা ও শিশু হাসপাতালটিও লকডাউন করা হয়।
ইতোমধ্যে নগরীর সোনালী ব্যাংক রংপুর বাজার শাখার সাত কর্মকর্তা ও কর্মচারী জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ বিভিন্ন উপসর্গে অসুস্থ হওয়ায় ব্যাংকের যাবতীয় কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি অসুস্থদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এদের মধ্যে শালবন এলাকার করোনা আক্রান্ত নারীর স্বামীও রয়েছেন।