ব্যাপক প্রস্তুতি ও উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা শরনার্থীদের অনাগ্রহের কারণে শেষ পর্যন্ত এ দফায়ও শুরু করা গেলো না প্রত্যাবাসন কর্মসূচী। বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট) ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
টেকনাফের শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরে এসে দুপুরে তিনি বলেন, ‘আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। যদি বিকাল ৪টা পর্যন্ত কেউ স্বেচ্ছায় রাজি হয়, তাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ যেতে রাজি হয়নি।’
টেকনাফের শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরে এসময় চীন ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বুধবার শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার জানান, বৃহস্পতিবার থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মঙ্গল ও বুধবার তারা মোট ২৩৫টি পরিবারের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের অনেকেই মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। তাই পাঁচটি বাস ও তিনটি ট্রাক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে যারা স্বেচ্ছায় গাড়িতে উঠবে মূলত তাদেরই প্রত্যাবাসন করা হবে, কাউকে জোর করা হবে না।
তিনি আরও জানান, ‘মিয়ানমার সরকারের দেওয়া ছাড়পত্র অনুযায়ী এক হাজার ৩৭টি পরিবারের মোট তিন হাজার ৫৪০ জনকে ফেরত নেওয়ার প্রথম তালিকাটি দেওয়া হয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে অন্যদের এই প্রক্রিয়ায় আনা হবে। কারণ এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।’
প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি হিসেবে টেকনাফের কেরণতলী থেকে উখিয়া হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম এলাকা পর্যন্ত নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সেখানে পুলিশ, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়। একই বছরের ৬ জুন নেপিদোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যেও সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, গত বছরের ১৫ নবেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তবে আবারও হামলার মুখে পড়ার আশঙ্কায় রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরতে অস্বীকৃতি জানানোয় ব্যর্থ হয় ওই উদ্যোগ।