রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারী থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে দায়ের করা যৌতুক মামলার বাদী এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) চান মিয়ার বিরুদ্ধে। শনিবার ভোর রাত পর্যন্ত বিয়ের নাটকের পর অভিযুক্ত এসআই চান মিয়া কে রৌমারী থানা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ৮জুন দুপুর দেড়টার দিকে রৌমারী উপজেলা শহরের কলেজ পাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মামলার তদন্ত করার কথা বলে ডেকে নিয়ে উপজেলার কলেজপাড়ার একটি বাসায় ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করলে গৃহবধূর চিৎকারে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে আটক করেন স্থানীয়রা। এ সময় গণধোলাইও দেওয়া হয় ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে। পরে রৌমারী থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়ে জনতার হাতে আটককৃত পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় যৌতুকের অভিযোগ দায়ের করেছি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান মিয়া মামলা সংক্রান্ত কাজের কথা বলে বিভিন্ন সময় আমাকে ডেকে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দিতে থাকে। শুক্রবার দুপুরে আমাকে বিয়ে করবে বলে একটি বাসায় ডেকে নিয়ে আসে। কিন্তু বিয়ের আয়োজন না করে আমাকে ঘরে ভিতরে নিয়ে ধর্ষণ করে। আমি এর বিচার চাই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনা ধামাচাপা দিতে রৌমারী থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম এসআই চান মিয়াকে কৌশলে সরিয়ে দিয়েছেন। তিনি সকলের সামনে অভিযুক্ত এসআই চান মিয়ার সঙ্গে ওই নারীর বিয়ের প্রতিশ্রæতি দিলেও পরে ওই নারীকে তার বাবা-মার কাছে তুলে দেন। এসআই চান মিয়া ওসি জাহাঙ্গীরের অনেক অপকর্মের হোতা বলে জানান স্থানীয়রা।
রৌমারী কলেজপাড়ার বাসিন্দারা জানান, নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ওই দারোগা মেয়েটিকে নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় উঠে। পরে মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। মেয়েটির চিৎকার শুনে আমরা গ্রামবাসী তাকে হাতেনাতে আটক করলে থানা থেকে পুলিশ এসে বিয়ে পড়ানো হবে বলে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত এসআই চান মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কলেজ পাড়ার একটি বাড়িতে এসআই চান মিয়াকে আটকের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। তবে সেখানে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না তা আমি জানি না।’ অভিযুক্ত এসআই’র সঙ্গে নির্যাতিতার বিয়ের প্রতিশ্রæতি ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘চান মিয়া আমাকে বলেছে ওই নারী এবং চান মিয়া আগেই বিয়ে করেছে। তখন আমি তাকে বিয়ের প্রমাণপত্র আনতে বলেছি। কিন্তু সে থানায় আর ফিরেনি।’