দেশজুড়ে

শীতার্তদের পাশে কেউ নেই: হাড় কাঁপানো শীতে কাবু চরাঞ্চলের জনজীবন

Published

on

কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায় সীমান্ত ঘেষাঁ চরাঞ্চালে শীতের তীব্রতা দিনদিন বেড়েই চলছে। ঘণকুয়াশায় তীব্রশীত ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে দুটি উপজেলার সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ ও গুরুত্বপূর্ণস্থল ও নৌ-পথের যানবাহন। এছাড়া শীতের কারণে বাড়ছে শিশু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব। শীতের কারণে নৌকার মাঝিরা দিক ভুল করে পথ হারিয়ে যায় ফলে সময় অনেক বেশী লাগে। এসব অঞ্চলের মানুষ খড়কুট জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে শীতার্ত মানুষ। এসব শীতার্ত মানুষের পাশে নেই এমপি-মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিরা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দু’উপজেলায় ৯টি ইউনিয়নের ৩ শকাধিক গ্রামে ৭২টি ওয়ার্ডে ৩ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। তাদের জন্য সরকারী বরাদ্ধ এসেছে প্রতি ইউনিয়নে ৫শত হিসাবে মোট ৪হাজার ৫শতটি কম্বল। যা চাহিদার তুলনায় বরাদ্ধ অপ্রতুল।এ শীতবস্ত্র কুড়িগ্রার জেলা প্রশাসকের কার্যলয় থেকে চেয়ারম্যানরা নিজ খরচে এনে তাদের মতো করে তালিকা প্রণয়ন করে তা বিতরণ করেছেন। অপর দিকে শীতজনিত রোগীর সংখা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন দিনেরডায়রিয়া ১৯ এবং নিউমোনিয়া ১১ জন রৌমারী ও রাজিবপুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্ত হলেন রাকিব হোসেন (১) বছর, শারমিন আকতার (১৪) ও ইমিলি খাতুন (১)সহ ৩০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এছারাও রোটা ভাইরাসের কারনে বৃদ্ধ ও শিশুরা নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়াও রোগের প্রকোপ বেড়েছে বলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ, কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান খান বলেন, রোটা ভাইরাস, এ বছরের শীতে হঠাৎ রেশি ঠান্ডার পড়ার কারনে শিশুরা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসক ও নার্সরা সার্বক্ষণিক গুরত্বসহকারে রোগীদের সেবা দিয়ে আসছেন। ডায়রিয়া রোগীর জন্য পর্যাপ্ত পরিমান খাবার স্যালাইন ও ঔষুধ মুজুুদ রয়েছে। তবে কোন আশঙ্কা নেই।

নৌকার মাঝি ছলিম উদিদন বলেন, শীতের কারণে নৌকার মাঝিরা মাঝে মধ্যে দিক ভ’ল করে হারিয়ে যায়, ফলে পারাপারে অনেক সময় লাগে। এছাড়া কাসের চালক জলিল জানান, শীতের কারণে দিনের বেলা হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হয়।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফলুয়ারচর গ্রামের নুর মোহাম্মদ, আনোয়ারা, হাসমত, লাইলী আক্ষেপ করে বলেন অনেক আশাকরে মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমপি-মন্ত্রীদের ভোট দিলাম কিন্তু তারা আমগো বিপদ আপদে পাশে আসেনা। এইজে টেলকা বাতাস ও কনকনে শীতে মইরা গেলাম কেউ আমগো কম্বল দিলোনা।

একইভাবে বলেন বাওয়ার গ্রামের অলেদা, চুলিয়ারচরের মমেনা, ঝাউবাড়ির রাশেদা, খেয়ারচরের জরিনা, বড়বেড়ের আজিজ, কোদালকাটির হারুন, বলদমারার নুরেজাসহ প্রায় সীমান্ত ঘেষাঁ ও চরাাঞ্চলের সাধারণ মানুষ।

এ নিয়ে সচেতন মহল বলছেন, শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকার ও এনজিও, জনপ্রতিনিধি, বিত্তবান মানুষের নিকট উদাত্ত আহ্বান জানান তারা। অপরদিকে কোন রাজিৈতক দল, ব্যক্তি, এমপি ও মন্ত্রী কেউ পাশে নেই শীতার্তদের।

বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের বলেন, অত্র ইউপিতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ, তার মধ্য ৫শটি কম্বল বরাদ্ধ পেয়েছি। বরাদ্দকৃত কম্বলগুলো ইউপি সদস্যেদের মাঝে বন্টন করে দিয়েছি।

রৌমারী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ও মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে আনোয়ার হোসেন। তারা আরও বলেন, আপামর জনসংখ্যা চাহিদার তুলনায় এবারের বরাদ্দ অনেক কম।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মেশকাতুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যেই রৌমারী উপজেলায় ৪ হাজার ৫শ’ এবং রাজিবপুরে ১ হাজার ৫শ’ কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে তা বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আরও কম্বলের জন্যে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। কম্বল বরাদ্দ পেলে বিতরণ করা হবে।

রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইমান আলী জানান, ৫ হাজার কম্বলের বরাদ্দ চেয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেছি। বরাদ্ধ পেলে বিতরণ করা হবে।

রৌমারী উপঝেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম সারোয়ার রাব্বী বলেন, আমি নতুনভাবে দায়িত্ব নিয়েছি। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version