দু’বছরেরও বেশি সময় অতিমারীর প্রাদুর্ভাব কাটিয়ে খানিকটা ছন্দে ফিরেছে গোটা বিশ্ব। আর এরই মধ্যে শেষ হয়ে এল ২০২২ সাল। বড়দিন বা শীতকালীন ছুটির সময়ে সৌভাগ্যবশত জীবন স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে বহুদিন পর। এখন আর কোনও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নেই। সুতরাং, এই শীতে অনেকেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করে ফেলেছেন।
এমন পরিকল্পনা যাঁদের রয়েছে তাঁরা প্রথমেই থাকা, খাওয়া, যাতায়াত, খরচ খরচা সংক্রান্ত কয়েকটি দিক ভেবে ফেলছেন। কিন্তু এ ছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভ্রমণের সময় নিজের ফোনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সেরে রাখলে ভাল হয়। কোনও কোনটি কাজে লাগবে জরুরি সময়, আবার কোনটি কাজে লাগবে নেটওয়ার্ক বা ব্যাটারির সমস্যা হলে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক—
১. এমার্জেন্সি ব্রডকাস্ট নোটিফিকেশন সক্রিয় করা—
যে কোনও স্থানে ভ্রমণ করার সময় এই নোটিফিকেশন ‘অন’ রাখা দরকার। হতেই পারে এমন কোনও দূরবর্তী এলাকায় কেউ ভ্রমণে গিয়েছেন যেখানে ভূমিধস বা অন্য কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা রয়েছে। সেখানে মোবাইল ফোনের এই ফিচারটি অগ্রিম সতর্ক বার্তা জানাতে পারে, AMBER অ্যালার্ট প্রদান করে সাহায্য করতে পারে?
২. লক স্ক্রিনে মেডিকেল আইডি এবং জরুরি পরিচিতি রাখা—
স্মার্টফোনে জরুরি যোগাযোগের তথ্য এবং চিকিত্সা সংক্রান্ত তথ্যও রাখা উচিত। এতে কোনও রকম সমস্যা হলে যে কোনও মানুষ পরিবারের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করতে পারবেন।
অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ক্ষেত্রে প্রথমে সেটিংস-এ যেতে হবে। সেখান থেকে আবাউট > ইমার্জেন্সি ইনফরমেশন> এন্টার অল ইনফো > মেডিক্যাল ইনফো>এডিট ইনফরমেশন অ্যান্ড অ্যাড। এখানে রক্তের গ্রুপ, কোনও রোগ বা সমস্যা থাকলে লিখে রাখা ভাল।
আইফোনের ক্ষেত্রে হেল্থ অ্যাপ-এ গিয়ে ‘মেডিক্যাল আইডি’-তে যেতে হবে। সেখানে জরুরি যোগাযোগ-সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় বিবরণ লিখে রাখতে হবে।
৩. স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের বিবরণ সংরক্ষণ করা—
যে এলাকায় ভ্রমণ করা হচ্ছে, সেখানকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যেমন দূতাবাস, পুলিশ এবং অন্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের যোগাযোগের বিশদ নিজের ফোনে রাখতে হবে। কাজে লাগতে পারে যে কোনও সময়।
৪. অফলাইন মানচিত্র—
গুগল ম্যাপ ব্যবহারকারীদের অফলাইনে ম্যাপ ডাউনলোড করতে দেয়। গাড়িতে ভ্রমণ বা ট্রেকিং-এর পরিকল্পনা থাকলে নিজের ফোনে অফলাইনে ম্যাপ ডাউনলোড করে নেওয়া উচিত। এটি ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই সঠিক দিকনির্দেশ খুঁজে পেতে সহায়তা করবে।
৫. গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র থাক ফোনেও—
ফোনে নিজের গুরুত্বপূর্ণ নথি, যেমন পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদির একটি ডিজিটাল কপি সব সময় রাখা দরকার। এ জন্য ডিজিলকার অ্যাপ ব্যবহার করা যেতে পারে। না হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে নিজের প্রয়োজনীয় নথিগুলির স্ন্যাপশট নিয়েও সুরক্ষিত ফোল্ডারে সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
৬. ইউপিআই-ভিত্তিক অ্যাপ ও পরিষেবা—
নগদ টাকা সঙ্গে রাখা সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ। তবে, কিছু ইউপিআই-ভিত্তিক বা ওয়ালেট-ভিত্তিক অর্থ লেনদেনের অ্যাপ এবং পরিষেবাগুলিও সক্রিয় করে রাখা উচিত। বিপদে কাজে আসতে পারে।
৭. ফোনে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ সংরক্ষণ—
এটি খুব সাবধানে করতে হবে। কোনও কোনও ফোনে সুরক্ষিত উপায়ে এই ধরনের পরিষেবা দেওয়া হয়। তা সক্রিয় করে রাখা যেতে পারে।
৮. নিজের ফোনের ‘ফাইন্ড মাই ফোন’ সক্রিয় রাখা—
এত সব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করলে ফোনটিকেও সুরক্ষিত রাখা গুরুত্বপূর্ণ? এ জন্য, আইফোনে ‘ফাইন্ড মাই’ এবং অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ক্ষেত্রে ‘ফাইন্ড মাই ফোন’ সক্রিয় করে রাখা যেতে পারে। ফোন হারালে দূর থেকে ট্র্যাক করা যেতে পারে এর মাধ্যমে।
৯. AirTags বা অন্য ট্র্যাকিং ডিভাইসের ব্যবহার—
ভ্রমণের সময় নিজের লাগেজ এবং অন্য সামগ্রী নজরে রাখতে AirTags বা টাইলের মতো ট্র্যাকিং ডিভাইসগুলিও ব্যবহার করা যেতে পারে।